ফাইল চিত্র।
যুযুধান মিছিলের মধ্যে উর্দিধারী এক ব্যক্তি নিজের চার দিকে ঝোড়ো গতিতে লাঠি ঘোরাচ্ছেন। তাঁর লাঠির ঘায়ে পরপর ছিটকে পড়ছেন বিক্ষোভকারীরা। এক সময় লাঠি ঘোরানোর তীব্রতা একটু কমতেই কয়েক জন আন্দোলনকারী চড়াও হলেন ওই উর্দিধারীর উপরে।
বুধবার দুপুরে এই দৃশ্য দেখা গেল ধর্মতলায় এসইউসি-র আইন অমান্য আন্দোলনে। স্কুলে নিয়োগ দুর্নীতি এবং কেন্দ্রের ‘অগ্নিপথ’ প্রকল্পের প্রতিবাদে ওই কর্মসূচি ঘিরে রণক্ষেত্রের চেহারা নেয় ধর্মতলা চত্বর। বিক্ষোভকারীদের ধাক্কায় ভেঙে যায় ব্যারিকেড, লাঠি চালায় পুলিশ। হাতাহাতিতে দু’পক্ষেরই বেশ কয়েক জন আহত হন। যান চলাচল বন্ধ থাকে প্রায় ৪০ মিনিট। পরে শতাধিক আন্দোলনকারীকে গ্রেফতার করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে পুলিশ। ‘পুলিশি আক্রমণ’-এর প্রতিবাদে ১ থেকে ৭ জুলাই রাজ্য জুড়ে প্রতিবাদ সপ্তাহের ডাক দিয়েছে এসইউসি।
এ দিন এসইউসি-র মিছিল কর্মসূচি ছিল মৌলালির রামলীলা ময়দান থেকে ধর্মতলা পর্যন্ত। পুলিশ আগেই এসএন ব্যানার্জি রোড এবং ধর্মতলা মোড় গার্ডরেল দিয়ে ঘিরে দেয়। বেলা ৩টে নাগাদ মিছিল পৌঁছয় সেখানে। আন্দোলনকারীদের চাপে গার্ডরেল উল্টে পড়ে। পুলিশ লাঠি চালাতে শুরু করে বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান। লাঠির ঘায়ে ছত্রভঙ্গ হয়ে যায় মিছিল। ঝড়ের গতিতে লাঠি চালিয়ে যে-উর্দিধারী ধর্মতলার নজর কাড়েন, তাঁর নাম শুভেন্দু সরকার। ওই উর্দিধারী জানান, তিনি ফার্স্ট ব্যাটেলিয়নের ডিসি-র নিরাপত্তারক্ষী। তাঁর কথায়, ‘‘এ দিন আমাদের লক্ষ্য করে যে-ভাবে হামলা হয়েছে, তাতে ওই ভাবে লাঠি না-চালালে হত না।’’
যান চলাচল থমকে যাওয়ায় নাকাল হন যাত্রী ও পথচারীরা। এক বাসযাত্রী বলেন, ‘‘আধ ঘণ্টা আটকে আছি। ছেলের স্কুল ছুটি হয়ে গিয়েছে। সময়ে পৌঁছতে না-পারলে ছেলেটাও আটকে থাকবে।’’ ট্যাক্সিতে এক বৃদ্ধকে দেখিয়ে তাঁর ছেলে বলেন, ‘‘বাবার কেমো চলছে। হাসপাতাল থেকে ফিরছি। জানি না, কত ক্ষণ আটকে থাকতে হবে।’’ ট্র্যাফিক পুলিশের এক কর্তার দাবি, ‘‘দ্রুত রাস্তা ফাঁকা করে দিয়ে যান চলাচল স্বাভাবিক করা হয়েছে।’’
এসইউসি-র রাজ্য সম্পাদক চণ্ডীদাস ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘মিছিল এগোতেই পুলিশ হিংস্র ভাবে ঝাঁপিয়ে পড়ে। এই বর্বরতার তীব্র নিন্দা করছে। ১০ জনের আঘাত গুরুতর।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy