Advertisement
E-Paper

গুলি-বোমাবাজি! বন্‌ধে ফের আতঙ্কের সেই চেনা ছবি ভাটপাড়ায়, কয়েক জনকে আটক করল পুলিশ

বুধবার ১২ ঘণ্টার বাংলা বন্‌ধ ডেকেছিল বিজেপি। তা নিয়ে সকাল থেকেই বিজেপি-তৃণমূল সংঘর্ষে উত্তপ্ত ছিল এলাকা। তার মধ্যেই অ্যাংলো-ইন্ডিয়া জুট মিলের সামনে বিজেপির দুই নেতার গাড়ি লক্ষ্য করে গুলি চলার অভিযোগ ওঠে।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৮ অগস্ট ২০২৪ ২৩:২১

—ফাইল চিত্র।

বন্‌ধের দিন। এমনিতেই চাপা উত্তেজনা ছিল এলাকায়। তার উপর গুলিও চলেছে। সব মিলিয়ে আতঙ্কের সেই চেনা ছবি আবার ফিরে এল উত্তর ২৪ পরগনার ভাটপাড়ায়। বিকেলের দিকে এলাকায় ঢুকতেই তা হাড়ে হাড়ে টের পাওয়া গেল। কেমন একটা গুমোট ভাব চারদিকে! লোকজনও রাস্তায় নেই বললেই চলে।

বুধবার ১২ ঘণ্টার বাংলা বন্‌ধ ডেকেছিল বিজেপি। তা নিয়ে সকাল থেকেই বিজেপি-তৃণমূল সংঘর্ষে উত্তপ্ত ছিল এলাকা। তার মধ্যেই অ্যাংলো-ইন্ডিয়া জুট মিলের সামনে বিজেপির দুই নেতার গাড়ি লক্ষ্য করে গুলি চলার অভিযোগ ওঠে। তাতে জখমও হন তিন জন। বিজেপির দাবি, দলের দুই নেতা ছাড়াও গাড়িচালক জখম হয়েছেন। দাবি, ওই ব্যক্তির কপাল ঘেঁষে বেরিয়ে গিয়েছে গুলি। এই ঘটনার পর থেকে আরও উত্তেজনা ছড়ায় ভাটপাড়ায়। পুলিশ অবশ্য ধীরে ধীরে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। পুলিশ সূত্রে খবর, ইতিমধ্যেই বেশ কয়েক জনকে আটক করা হয়েছে। এলাকাতেও বিশাল বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে।

বিকেল থেকেই ঘোষপাড়া রোড ধরে কাঁকিনাড়া বাজারের পাশ দিয়ে অ্যাংলো-ইন্ডিয়া জুট মিলের দিকে রাস্তা সুনসান, থমথমে। একের পর পুলিশের গাড়ি, র‌্যাফ, কমব্যাট ফোর্স। জুটমিলের কাছাকাছি পৌঁছতেই দেখা গেল, রাস্তায় কয়েক জনের জটলা। তাঁদের মধ্যেই এক জন বছর পঞ্চাশের বাবুলাল। তাঁর দাবি, ঘটনার সময় তিনি সেখানেই ছিলেন। বাবুলাল বলতে থাকেন, ‘‘দু’পক্ষের গন্ডগোল চলছিল। তার মধ্যেই হঠাৎ গুলি চলে। পুলিশ পরিস্থিতি সামলাতে এসেছিল। কিন্তু ওরাও মাঝখানে পড়ে যায়!’’

ভোটের সময় বরাবরই উত্তপ্ত থাকে ব্যারাকপুর শিল্পাঞ্চল। বিশেষ করে এই ভাটপাড়া-কাঁকিনাড়া এলাকা। স্থানীয়েরা জানাচ্ছেন, ভোটের সময় এলাকায় গোলাগুলি-বোমাবাজি দেখতে দেখতে তাঁরা অভ্যস্ত। প্রকাশ্যে আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে ঘুরতে দেখা যায় দুষ্কৃতীদের। গত লোকসভা ভোটের সময়েও এ রকমই ছবি দেখা গিয়েছিল। কিন্তু ভোটের পর থেকে পরিস্থিতি মোটামুটি শান্তই ছিল। কিন্তু বুধবার বন্‌ধের দিনে ফের আতঙ্কের স্মৃতি ফেরায় উদ্বিগ্ন স্থানীয়েরা। এলাকা ঘুরলে তা বেশ ভাল রকম বোঝা যাচ্ছে। এখনও এ দিক-ও দিক পড়ে রয়েছে ইট, তৃণমূল-বিজেপির ছেঁড়া পতাকা। ক্ষণে ক্ষণে এলাকায় টহল দিচ্ছে পুলিশও।

বুধবার সকাল সাড়ে ৯টা নাগাদ গুলি চলার ঘটনা ঘটে ভাটপাড়ায়। আহতদের প্রথমে ব্যারাকপুর স্টেট জেনারেল হাসপাতাল ও পরে বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছেছিলেন ব্যারাকপুরের প্রাক্তন সাংসদ তথা বিজেপি নেতা অর্জুন সিংহ। সেখানে তিনি দাবি করেন, তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীদের গুলিতে জখম হয়েছেন তাঁর দলের দুই নেতা রবি সিংহ এবং প্রিয়াঙ্কু পাণ্ডে আহত হয়েছেন। ওই দু’জন তাঁর সঙ্গেই দেখা করতে যাওয়ার পথে আক্রমণ হয়েছে বলেই দাবি করেন অর্জুন। তাঁর কথায়, ‘‘ওঁরা আমার বাড়ি আসছিলেন। ঘোষপাড়া মোড়ের কাছে সেই গাড়ি আটকানো হয়। তার পর গাড়ি লক্ষ্য করে গুলি চালায় তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীরা।’’

অর্জুনের অভিযোগ, গুলি চালানোর পাশাপাশি বোমাবাজিও হয়েছে ওই দুই বিজেপি নেতার গাড়ির সামনে। অর্জুন বিশদে বলেন, ‘‘ছ’রাউন্ড গুলি চলেছে। সাত-আটটা বোমা পড়েছে। দেখুন গিয়ে কত রক্ত ঝরছে রবি সিংহের।’’ কিন্তু পুলিশ তা সত্ত্বেও কিছু করেনি বলে অভিযোগ ব্যারাকপুরের প্রাক্তন সাংসদের। অর্জুনের কথায়, ‘‘গুলি চলেছে বোমা পড়েছে, আর পুলিশ এখানে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে তামাশা দেখছে।’’ তাঁকে প্রশ্ন করা হয়েছিল, পুলিশ কোথায় ছিল? জবাবে অর্জুন বলেন, ‘‘পুলিশ তৃণমূলের তাঁবেদারি করছে। আর কোথায় থাকবে! কত দিন আর এই দালালি চলবে? শেষ হয়ে গিয়েছে সব।’’

তৃণমূলও পাল্টা জবাব দিয়েছে। দলীয় নেতা কুণাল ঘোষ বলেন, ‘‘ভাটপাড়ায় যা হয়েছে, সে ব্যাপারে সবচেয়ে ভাল জানেন সমাজসেবী, বিশিষ্ট গান্ধীবাদী অর্জুন সিংহ। যা জিজ্ঞেস করার, ওঁকেই জিজ্ঞেস করা উচিত।’’

Bangla Bandh
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy