লক্ষ্য ছিল সৌন্দর্যায়ন এবং পরিকাঠামো নির্মাণ। চিল্কিগড়ের কনকদুর্গা প্রাঙ্গণ ঘিরে বহু টাকা ব্যয় করে সেই কাজও হয়েছে। কিন্তু তার ফলে নিসর্গে কোপ পড়েছে বলে অভিযোগ উঠল। পর্যটন দফতরের বরাদ্দ প্রায় এক কোটি টাকায় বন দফতরের উদ্যোগে কনকদুর্গার মন্দির চত্বরে নানা ধরনের পরিকাঠামো গড়ে তোলা হয়েছে। এ ছাড়া পশ্চিমাঞ্চল উন্নয়ন দফতরের উদ্যোগে কিছু কাজ হয়েছে। উন্নয়নের এই পরিবর্তনে চিল্কিগড়ের চিরচেনা প্রাকৃতিক ছবিটাই বদলে গিয়েছে, যা দেখে হতাশ হচ্ছেন অনেকেই। সরব হয়েছেন পরিবেশ আন্দোলনের কর্মীরাও।
মন্দির যাওয়ার পিচ রাস্তাটির উপর তৈরি হয়েছে বিশাল ‘অশ্বদুয়ার’। দেবীর বাহন অশ্ব। তাই প্রকাণ্ড কংক্রিটের প্রবেশ পথের মাথায় দু’টি ঘোড়ার মূর্তির মাঝে রয়েছে দেবী-মূর্তির কংক্রিটের রেপ্লিকা। পিচ রাস্তার কিছুটা পরে দুর্ভেদ্য জঙ্গলের মাঝে লাল মাটির রাস্তাটিও আর নেই। সেখানে কংক্রিটের ঢালাই রাস্তা হয়ে গিয়েছে। রাস্তার দু’ধারে বাতি স্তম্ভ বসেছে। মন্দির চত্বরে পৌঁছে দেখা গেল, চারপাশ কেবলই কংক্রিটময়। আগে চিল্কিগড়ের মন্দির প্রাঙ্গণে গাছগাছড়ার শোভা দেখে চোখ জুড়িয়ে যেত। মন্দির চত্বরে ছিটেবেড়ার গোটা কয়েক ঘরে পুজোর সামগ্রী ও চা-জলখাবারের দোকান ছিল। শীতের মরসুমে মন্দির লাগোয়া জঙ্গলের ভিতরে চড়ুইভাতি করতে আসতেন অনেকে। আর এখন উন্নয়নের রাজসূয় যজ্ঞের দৌলতে মন্দির চত্বরে তৈরি হয়েছে নীল-সাদা রঙের ফোয়ারা, সবুজ ঘাসের লন। মন্দির ঘিরে চারপাশে পর্যটকদের বসার কংক্রিটের জায়গা। শিশুউদ্যান হয়েছে। লোহার দোলনা, স্লিপের ব্যবস্থা করা হয়েছে। সেখানে শিশুদের পাশাপাশি, হুটোপাটি করছেন তরুণ যুগলরাও। পুজোর সামগ্রী ও খাবার দোকানের অস্থায়ী ঘর গুলি ভেঙে দিয়ে কংক্রিটের সাতটি দোকান ও একটি গুদাম ঘর হয়েছে। মোরাম ফেলে মন্দির প্রাঙ্গণের পরিধি বাড়ানো হয়েছে। জঙ্গলের ভিতরে চড়ুইভাতি করার জন্য ইতিউতি অ্যাসবেসটসের ছাউনি দেওয়া ৮টি সিমেন্টের বেদি তৈরি হয়েছে। পাশে রয়েছে জলের ট্যাপ। এগুলির পোষাকি নাম ‘বনভোজন ছাউনি’।
উপরে কনকদুর্গা মন্দিরে যাওয়ায় তোরণ।