Advertisement
০৮ ডিসেম্বর ২০২৩
Watermelon

School Student: ‘প্রতিদিন স্কুলে যেতে ভাল লাগে না’, টাকা উপার্জনে তরমুজ ফেরি ষষ্ঠ শ্রেণির খুদের

স্কুল খুলে গেলেও বেশ কিছু পড়ুয়ারা স্কুলে না গিয়ে উপার্জনের পথ বেছে নিয়েছে। অনেকে আবার স্কুলে আর ফিরতেই পারেনি বলে অভিমত শিক্ষানুরাগীদের।

স্কুলে না গিয়ে তরমুজ বিক্রি করছে স্কুল পড়ুয়া।

স্কুলে না গিয়ে তরমুজ বিক্রি করছে স্কুল পড়ুয়া। —ফাইল চিত্র।

অর্জুন ভট্টাচার্য  
জলপাইগুড়ি শেষ আপডেট: ০৯ মে ২০২২ ০৫:১১
Share: Save:

বাংলা পড়তে ভাল লাগে। আর ইতিহাসও। তবে প্রতিদিন স্কুলে যেতে ভাল লাগে না ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্রটির। কেন? ঠা-ঠা রোদের দুপুরে জলপাইগুড়ি শহরের ফুটপাতেও দাঁড়িয়ে থাকা দায়। এই তীব্র গরমের মধ্যে ভ্যানরিকশা বোঝাই তরমুজ নিয়ে বিক্রি করছে বছর বারোর বালক। প্রশ্ন শুনে গামছা দিয়ে কপালের ঘাম মুছতে মুছতে একটু ভেবে তার জবাব, ‘‘আসলে অনেক দিন তো স্কুল যাইনি। বন্ধ ছিল। তাই এখন আর যেতে ভাল লাগে না।’’

কথায় কথায় জানা গেল, তার বাবাও তরমুজ বিক্রি করছেন, শহরেরই অন্য এক বাজারে। ওই ছাত্রের মা বললেন, ‘‘ভেবেছিলাম ছেলেটাকে লেখাপড়া শিখিয়ে একটু মানুষ করব। করোনা সব স্বপ্ন ভেঙে চুরমার করে দিয়ে গিয়েছে আমাদের। দু’বছর আগে লকডাউনের সময়ে কেরলের কাজ ছেড়ে বাড়ি ফিরে আসতে বাধ্য হন আমার স্বামী। তার পর থেকে আর তেমন কাজের কোনও সুযোগ মেলেনি। বাধ্য হয়েই ছোট্ট ছেলেটাকেও কাজে নামাতে হয়েছে।’’ মা মেনে নিলেন, এ জন্য তাঁর ছেলের হয়তো পড়াশোনার ক্ষতি হচ্ছে। তবে ছেলেটির কথায়, ‘‘স্কুল তো এখন বন্ধ। তাই তরমুজ বিক্রি করছি। আর সন্ধেয় বাড়ি ফিরে তার পরে কিছুক্ষণ পড়াশোনা করি তো!’’

জলপাইগুড়ি শহরেরই অন্য একটি হাই স্কুলের দশম শ্রেণির এক ছাত্র টোটো চালাচ্ছে। ওই ছাত্রেরও কথা, ‘‘স্কুলে যেতে এখন আর একদমই ইচ্ছে করে না। টোটো চালানোর পরে রাতে বাড়িতে বই নিয়ে বসলেও মন বসে না একদম।’’

করোনা আবহে গত দু’বছরে জলপাইগুড়ি জেলায় এমন অনেক ছবি ধরা পড়েছিল। স্কুল খোলার পরেও বেশ কয়েক দিন কিছু পড়ুয়ারা স্কুলে না গিয়ে উপার্জনের পথ বেছে নিয়েছে। কেউ কেউ আবার স্কুলে আর ফিরতেই পারেনি বলে অভিমত শিক্ষানুরাগীদের।

জলপাইগুড়ি জেলা স্কুলের প্রধান শিক্ষক ধর্মচাঁদ বাড়ুই বলেন, ‘‘পড়াশোনার প্রতি আগ্রহ বাড়াতেই হবে। এ ক্ষেত্রে দুঃস্থ পড়ুয়াদের সব ধরনের সহযোগিতা করতে প্রস্তুত আছি।’’ মনোবিদদের মতে, পড়ুয়াদের একাংশ অনেক সময় মাদকাসক্ত হয়ে পড়ছে। অনেকের পরিবারই চিকিৎসকদের পরামর্শ নিচ্ছে। এ ক্ষেত্রে কাউন্সেলিংয়ের উপর জোর দিতে পরামর্শ দিচ্ছেন বিশেষজ্ঞেরা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
Follow us on: Save:
Advertisement

Share this article

CLOSE