‘ল্যাংচা তীর্থ’ থেকে এক লাফে ‘মিষ্টি বাংলা’।
বিধানসভা ভোটের আগে মাটি উৎসবে এসে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বর্ধমানে ‘ল্যাংচা তীর্থ’ তৈরির কথা ঘোষণা করেছিলেন। কাঞ্চননগরে জায়গা ঠিক হয়ে যায়। বরাদ্দ সাত কোটির মধ্যে আড়াই কোটি টাকার অনুমোদনও মেলে। কিন্তু শুক্রবার সংস্কৃতি লোকমঞ্চে প্রশাসনিক বৈঠকের মঞ্চ থেকে তিনি জানান, ল্যাংচা তীর্থের বদলে ‘মিষ্টি বাংলা হাব’ তৈরি হবে।
শক্তিগড়ের বিখ্যাত ল্যাংচা, সীতাভোগ, মিহিদানা প্যাকেট করে বিশ্ববাংলা ব্র্যান্ডের সঙ্গে জুড়ে রাজ্যের বাইরে বিক্রির পরিকল্পনা ছিলই এ বার তার সঙ্গে জুড়ে গেল রামপুরহাটের রাজভোগ ও সিউড়ির মোরব্বা। কাঞ্চননগর থেকে সরিয়ে নতুন হাব বর্ধমান শহরের উপকন্ঠে উল্লাস মোড়ের কাছে হবে বলেও প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে। ক্লাস্টার তৈরি করে হাব চালানো হবে। কর্মীরা সেখানে থেকেই মিষ্টি তৈরি করবেন।
জানুয়ারিতেই ল্যাংচা তীর্থের প্রয়োজনীয়তার ব্যাখ্যা দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। জানিয়েছিলেন, বিশ্ব বাংলা বিপণিতে ওই মিষ্টি ছোট ছোট প্যাকেট করে আন্তর্জাতিক বাজারে বিক্রি করা হবে। সীতাভোগ-মিহিদানার জি-আই পেটেন্ট (জিওগ্রাফিক্যাল ইন্ডিকেশন রেজিস্ট্রি) পেতে যাবতীয় তথ্য সংগ্রহ করে পেশ করে রাজ্য সরকার। কিন্তু এতদিনেও সেই তীর্থ গড়ে না ওঠায় এ দিন ক্ষোভ প্রকাশ করেন মুখ্যমন্ত্রী। সূত্রের খবর, জেলা শাসককে এ ব্যাপারে প্রশ্নও করেন তিনি। প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, কাঞ্চননগরে ল্যাংচা তীর্থ গড় নিয়ে অনেক মিষ্টি ব্যবসায়ীর আপত্তি ছিল। শহর থেকে দূরে হওয়ায় বিক্রি করা কঠিন হবে মনে করেন তাঁরা। তার উপর জেলা প্রশাসন যে জায়গাটি ঠিক করে, সেই জমি এতটাই নিচু যে ভরাট করে প্রস্তাবিত প্রকল্প তৈরি করাও কঠিন হয়ে যায়। ফলে কয়েকদিন আগে জেলাশাসক সৌমিত্র মোহন নিজে গিয়ে উল্লাসের কাছে একটি জায়গা পছন্দ করেন। এ দিন মুখ্যমন্ত্রী চলে যাওয়ার পর তিনি বলেন, “মুখ্যমন্ত্রী মিষ্টি বাংলা হাবকে আরও বড় করে তৈরি করার জন্য নির্দেশ দিয়ে গিয়েছেন।”
রাজ্য মিষ্টান্ন ব্যবসায়ী সংগঠন সূত্রে জানা যায়, ওই হাবে অত্যাধুনিক ল্যাব তৈরির প্রস্তাব রয়েছে। সেখানেই ছানা তৈরি থেকে মিষ্টির গুণগত মান পরীক্ষার ব্যবস্থা থাকবে। মাইসোরের কেন্দ্রীয় খাদ্য ও প্রযুক্তি গবেষণা কেন্দ্রেরও সাহায্য নেওয়া হবে। ওই কেন্দ্রের মাধ্যমে মিষ্টির প্যাকেজিংও করা হবে। সংগঠনের অন্যতম কর্মকর্তা প্রদীপ ভগতের দাবি, ‘‘মিষ্টি বাংলা হাব হওয়ার ফলে আমরা সব রকমের মিষ্টি রাখতে পারব। সবচেয়ে বড় সুবিধা, দীর্ঘদিন ধরে মিষ্টির গুণগত মান ঠিক রাখতে সাহায্য করবে ওই হাব।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy