Advertisement
E-Paper

জানুয়ারি থেকে ১৫% ডিএ, ২০১৯-এর মধ্যে পুরো মেটানোর প্রতিশ্রুতি

বৃহস্পতিবার নজরুল মঞ্চে শাসক দল প্রভাবিত সরকারি কর্মী সংগঠন পশ্চিমবঙ্গ কর্মচারী ফেডারেশন-এর বার্ষিক সভায় ডিএ দেওয়ার কথা ঘোষণা করে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তীব্র ভাষায় কটাক্ষ করেন বিরোধীদের।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৮ সেপ্টেম্বর ২০১৭ ০০:৩০
প্রশাসক: সরকারি কর্মীদের সভায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বৃহস্পতিবার নজরুল মঞ্চে। —নিজস্ব চিত্র।

প্রশাসক: সরকারি কর্মীদের সভায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বৃহস্পতিবার নজরুল মঞ্চে। —নিজস্ব চিত্র।

রাজ্য সরকারি কর্মীদের বকেয়া মহার্ঘ ভাতা (ডিএ) ছিল ৫৪ শতাংশ। সরকার ১৫ শতাংশ দেবে বলে ঘোষণা করলেন মুখ্যমন্ত্রী। তা মিলবে জানুয়ারি থেকে। সেই সঙ্গে তাঁর প্রতিশ্রুতি, বকেয়া ডিএ-র পুরোটাই ২০১৯ সালের মধ্যে মিটিয়ে দেওয়া হবে।

বৃহস্পতিবার নজরুল মঞ্চে শাসক দল প্রভাবিত সরকারি কর্মী সংগঠন পশ্চিমবঙ্গ কর্মচারী ফেডারেশন-এর বার্ষিক সভায় ডিএ দেওয়ার কথা ঘোষণা করে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তীব্র ভাষায় কটাক্ষ করেন বিরোধীদের। বলেন, ‘‘প্রচণ্ড আর্থিক সঙ্কটের মধ্যেও এটুকু ব্যবস্থা করতে পেরেছি। মিউ মিউ, ঘেউ ঘেউ করে লাভ নেই। যখন নিজের সরকার ছিল, তখন কী করছিলেন!’’ এখানে না-থেমে তিনি বলেন, ‘‘আমাকে কাউকে বলতে হয় না। আমাকে চাপ দিয়ে লাভ নেই। যেটা করতে পারি, নিজে করি। যেটা করতে পারি না, করি না।’’

মুখ্যমন্ত্রীর মন্তব্যে ক্ষোভ ছড়িয়েছে কর্মী মহলে। এর সমালোচনা করে বাম পরিষদীয় নেতা সুজন চক্রবর্তী বলেন, ‘‘ঘেউ ঘেউ করবেন না বলে শিক্ষক ও সরকারি কর্মীদের চূড়ান্ত অসম্মান করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর ক্ষমা চাওয়া উচিত।’’ আইএনটিইউসি অনুমোদিত কনফেডারেশন অব স্টেট গভর্নমেন্ট এমপ্লয়িজ-এর নেতা মলয় মুখোপাধ্যায়ের প্রতিক্রিয়া, ‘‘সরকারি কর্মীদের অপমান করেছেন মুখ্যমন্ত্রী!’’ মমতার মন্তব্যের প্রতিবাদে আজ, শুক্রবার ধিক্কার কর্মসূচি পালন করবে কো-অর্ডিনেশন কমিটি।

ডিএ ঘোষণায় হাততালি।—নিজস্ব চিত্র।

এই মুহূর্তে রাজ্য সরকারি কর্মীদের বকেয়া ডিএ হাফ সেঞ্চুরি ছাড়িয়ে ৫৪ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। কলকাতা হাইকোর্টে ডিএ সংক্রান্ত মামলার শুনানিতে সম্প্রতি ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি নিশীথা মাত্রে বলেছেন, মহার্ঘ ভাতা দীর্ঘদিন পেয়ে আসছেন সরকারি কর্মীরা। তাঁরা এই ভাতা পাওযার আশা করে থাকেন। মামলার পাশাপাশি শাসক দলের কর্মী সংগঠনের তরফেও চাপ বাড়ছিল। তাই, মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষণা খানিকটা হলেও সরকারকে স্বস্তি দিল বলে মনে করছে প্রশাসনের একাংশ।

বাড়তি ডিএ দিতে কত খরচ হবে? মুখ্যমন্ত্রী জানান, এ জন্য সরকারের ঘাড়ে অতিরিক্ত ৪৫০০ কোটি টাকার বোঝা চাপবে। সব মিলিয়ে সরকারি কর্মীদের ডিএ দিতে সরকারের প্রতি বছরের খরচ দাঁড়াবে ৩২ হাজার ৪০০ কোটি টাকা।

আরও পড়ুন:পাহাড় জুড়ে নয়া পোস্টার

কোথা থেকে আসবে অতিরিক্ত টাকা? নবান্নের কর্তাদের ব্যাখ্যা, সাধারণত বাজেটের সময় সরকারি কর্মীদের বেতন খাতে ১০-১২ শতাংশ ডিএ ধরেই অর্থ বরাদ্দ করা হয়। আবার, প্রতি বছর পেনশন খাতে খরচ কিছুটা কমে। এর পরেও বিভিন্ন দফতরের হাতে পড়ে থাকা অর্থ ফেরত নেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু করেছে অর্থ দফতর। এই সব মিলিয়ে বাড়তি ১৫ শতাংশ ডিএ-র টাকা জোগাড় হয়ে যাবে বলে জানাচ্ছেন অর্থ কর্তারা।

কিন্তু বকেয়ার ১৫ শতাংশ মেটালেও কেন্দ্রের সঙ্গে ফারাক বিশেষ ঘুচবে না বলেই মনে করছেন বিরোধী এবং কর্মীদের একাংশ। হিসাব বলছে, মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষণার পরেও ডিএ বকেয়া থাকবে ৩৯ শতাংশ। ২০১৯ সালে পুরো বকেয়া মিটিয়ে দেওয়ার যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন মমতা, তত দিনে কেন্দ্রীয় সরকার অন্তত ১৬-২০ শতাংশ ডিএ ঘোষণা করে ফেলবে। ফলে ব্যবধান থেকেই যাবে।

এই কারণেই বিরোধী দলনেতা আব্দুল মান্নান বলেন, ‘‘সরকার ১৫ শতাংশ ডিএ দেবে জানুয়ারি থেকে। তত দিনে কেন্দ্র এক কিস্তি ডিএ ঘোষণা করবে। তাতে আবার ফারাক বাড়বে।’’ এ দিন বিজেপির সরকারি কর্মচারী পরিষদের একটি প্রতিনিধিদল কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মীদের হারে ডিএ দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন রাজ্যপাল কেশরীনাথ ত্রিপাঠীর কাছে। সরকারি কর্মীদের একাংশের বক্তব্য— মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষণায় স্পষ্ট, বেতন কমিশন নিয়ে সরকারের কোনও হেলদোলই নেই। বেতন কমিশনকে সরকার অন্ধকারে পাঠিয়ে দিল।

Mamata Banerjee DA মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy