ফাইল চিত্র।
পশ্চিম বর্ধমানের ধস কবলিত এলাকার বাসিন্দাদের জন্য পুনর্বাসন প্রক্রিয়া দ্রুত শেষ করার জন্য মঙ্গলবার ‘ভার্চুয়াল’ প্রশাসনিক বৈঠকে ফের বার্তা দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী প্রকল্পের অগ্রগতি কত দূর, তা জানতে চান জেলাশাসক (পশ্চিম বর্ধমান) পূর্ণেন্দু মাজির কাছে। পূর্ণেন্দুবাবু বলেন, ‘‘১৫ হাজার বাড়ি তৈরি। দ্রুত পুনর্বাসন প্রক্রিয়া শুরু হবে।’’ মুখ্যমন্ত্রী জানান, ৩৪ হাজার বাড়ি করতে হবে। জেলাশাসক বলেন, ‘‘ধাপে-ধাপে বাড়ি তৈরির কাজ চলছে।’’ প্রকল্পের জন্য জমি নিয়ে কোনও সমস্যা নেই, বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রীর কাছে এমনও দাবি করেন রাজ্যের মুখ্যসচিব রাজীব সিংহ। পরেই মুখ্যমন্ত্রী আসানসোল পুরসভার মেয়র জিতেন্দ্র তিওয়ারিকে বলেন, ‘‘এ বিষয়ে বিস্তারিত দেখভাল করো।’’ মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশমতো কাজ করা হবে বলে জানান জিতেন্দ্রবাবু। ঘটনাচক্রে, চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে প্রশাসনিক বৈঠক থেকে এই প্রকল্পের অগ্রগতি জানতে চেয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী।
কিন্তু বারবার এই প্রকল্প সম্পর্কে কেন খোঁজখবর করছেন মমতা, তা নিয়ে জেলায় জল্পনা রয়েছে। ওয়াকিবহাল মহলের মতে, কম-বেশি ৪৫ হাজার পরিবার পুনর্বাসন পাবে। শিল্পাঞ্চলের যে কোনও ভোটেও এই পুনবার্সনের কথা অন্যতম চর্চার বিষয়। সামনে বিধানসভা ভোট। তার আগে ফের বিষয়টি নিয়ে চর্চা শুরু হল কি না, তা নিয়ে কৌতূহল রয়েছে অনেকের।
প্রায় এগারো বছর ধরে এই প্রক্রিয়াটি ঝুলে রয়েছে। জেলায় ১৩৯টি ঘনবসতিপূর্ণ এলাকা-সহ মোট ১৪৬টি ধস কবলিত এলাকা (আয়তনে প্রায় ৮৬৩ হেক্টর) রয়েছে। পুনর্বাসনের জন্য ১৯৯৮-এ সুপ্রিম কোর্টে মামলা করেছিলেন আসানসোলের প্রাক্তন সিপিএম সাংসদ হারাধন রায়। ২০০৯-এ পুনর্বাসন প্রকল্পের অনুমোদন দেয় কেন্দ্রীয় ক্যাবিনেট। ২,৬২৯ কোটি টাকা অনুমোদন করে কয়লা মন্ত্রক। ঠিক হয়, দু’টি পর্যায়ে ১০ বছরের মধ্যে প্রকল্পের কাজ শেষ হবে। কিন্তু এখনও তা হয়নি। ‘নোডাল এজেন্ট’ করা হয় আসানসোল-দুর্গাপুর উন্নয়ন পর্ষদকে (এডিডিএ)। ২০১৬-য় বাড়ি তৈরির দায়িত্ব দেওয়া হয় রাজ্য আবাসন দফতরকে। গোটা বিষয়টির তত্ত্বাবধানে রয়েছে এডিডিএ।
কিন্তু এডিডিএ সূত্রের দাবি, প্রকল্পের কাজে নানা ‘বাধা’ রয়েছে। প্রথমত, সালানপুরের নামোকেশিয়ায় এলাকাবাসীর বাধায় পুনর্বাসন প্রকল্প বাস্তবায়িত করা যায়নি। দ্বিতীয়ত, এডিডিএ ৫১৪ একর জায়গা চিহ্নিত করলেও প্রায় সওয়া তিনশো একর জমি খুবই স্বল্প দৈর্ঘ্যের হওয়ায় সেখানে আবাসন তৈরি সম্ভব নয়। তৃতীয়ত, এডিডিএ-র অভিযোগ, চিহ্নিত করা জমিতে অনেক সময়ে নীচে কয়লা আছে জানিয়ে ‘এনওসি’ (নো অবজেকশন সার্টিফিকেট) দিচ্ছে না ইসিএল।
এডিডিএ-র ভাইস চেয়ারম্যান উজ্জ্বল চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘দাসকেয়ারি, বিজয়নগরে বহুতল আবাসন তৈরি হচ্ছে।’’ ইসিএল-এর সিএমডি-র কারিগরি সচিব নীলাদ্রি রায় বলেন, ‘‘মাটির তলায় ৬০০ মিটার গভীরে কয়লার স্তর আছে ও যেখানে আগামী ৫০ বছর কয়লা তোলার সম্ভাবনা নেই, সেখানেই আবাসন তৈরির জন্য ছাড়পত্র দেবে সংস্থা।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy