সামনে পুজো। প্রশাসনিক ব্যস্ততা থাকবে। কিন্তু তার জন্য সরকারি প্রকল্পে কোনও খামতি রাখা যাবে না। জেলাশাসকদের সঙ্গে বৈঠকে বৃহস্পতিবার এমনটাই নির্দেশ দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সম্প্রতি ‘আমাদের পাড়া আমাদের সমাধান’ নামের নতুন প্রকল্প ঘোষণা করেছেন তিনি। কী ভাবে তার কাজ এগোবে, বৃহস্পতিবার তারই পাঠ দেন জেলাশাসকদের। ভিডিয়ো উপস্থাপনার মাধ্যমে বুঝিয়ে দেন, কোথায় কী ভাবে কাজ করতে হবে। এই প্রকল্পে কোনও ঢিলেমি দেওয়া চলবে না, স্পষ্ট করে দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।
নবান্নে বৃহস্পতিবারের বৈঠকে ছিলেন সকল জেলার জেলাশাসক। এ ছাড়া মুখ্যসচিব মনোজ পন্থ এবং প্রশাসনের অন্য শীর্ষকর্তারাও ছিলেন। দুপুর সাড়ে ১২টা নাগাদ ওই বৈঠক শুরু হয়। ‘আমাদের পাড়া আমাদের সমাধান’ প্রকল্পের শিবির শুরু হতে চলেছে আগামী শনিবার থেকে। এই প্রকল্পের লক্ষ্যই হল সরকারি পরিষেবা এবং এলাকার সমস্যার সমাধানকে বুথ স্তরে পৌঁছে দেওয়া। ২ অগস্ট থেকে ৩ নভেম্বর পর্যন্ত এই প্রকল্পের শিবির চলবে। কী ভাবে শিবিরগুলি আয়োজন করতে হবে, কী ভাবে সেখানে অভিযোগ জমা পড়বে এবং কী ভাবে সেই সমস্ত সমস্যার সমাধান করতে হবে, ভিডিয়োর মাধ্যমে জেলাশাসকদের দেখানো হয়। দফতরভিত্তিক কোনও সমস্যা হলে কী ভাবে তা মেটানো যাবে, তা-ও বলে দেওয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন:
ধর্মতলায় ২১ জুলাইয়ের সমাবেশের পরেই মুখ্যমন্ত্রী নতুন সরকারি প্রকল্প ঘোষণা করেছিলেন। তিনটি বুথ নিয়ে একটি পাড়া। এই প্রকল্পের অধীনে প্রতিটি বুথের জন্য বরাদ্দ করা হয়েছে ১০ লক্ষ টাকা। একেবারে বুথ স্তরে গিয়ে এলাকার মানুষের সমস্যার কথা শুনবেন সরকারি আধিকারিকেরা। তার পরে সেখানে সমস্যার সমাধান করা হবে। রাজ্যে মোট ৮০ হাজার বুথ। সেই অঙ্কে এই কর্মসূচিতে রাজ্যের কোষাগার থেকে খরচ হবে ৮০ হাজার কোটি টাকা। বিভিন্ন বুথে স্বল্পদৈর্ঘ্যের রাস্তা নির্মাণ, পানীয় জল, গ্রামাঞ্চলে ছোটখাটো সেতুর মেরামতি, স্কুলের পরিকাঠামো উন্নয়নের মতো ছোট ছোট দাবি থাকে। সরকার সেগুলিই পূরণ করতে চাইছে। ২০২৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনের কথা মাথায় রেখেই এই প্রকল্পের পরিকল্পনা বলে মনে করা হচ্ছে। সেই কারণেই প্রকল্পটিতে জোর দেওয়া হচ্ছে। পুজোর ব্যস্ততা থাকলেও এই প্রকল্পকে কোনও ভাবেই অবহেলা করা যাবে না, নির্দেশ মুখ্যমন্ত্রীর।
গত কয়েক দিন ধরে বৃষ্টি চলছে। রাজ্যের বিস্তীর্ণ এলাকায় রাস্তা জলমগ্ন। কলকাতা এবং শহরতলিতেও জমা জলে বিপর্যস্ত জনজীবন। এই পরিস্থিতিতে মাথা চাড়া দিয়ে উঠতে পারে ডেঙ্গি। বৃহস্পতিবার নবান্নের বৈঠকে সেই প্রসঙ্গও উঠেছিল। সূত্রের খবর, ডেঙ্গি নিয়ে জেলাশাসকদের আলাদা করে সতর্ক করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। বৈঠকে যে স্বাস্থ্য আধিকারিকেরা উপস্থিত ছিলেন, তাঁদের তৎপর হতে বলা হয়েছে। ইতিমধ্যে যে সমস্ত এলাকায় ডেঙ্গির প্রকোপ বাড়ছে, সেখানে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করা এবং অন্যত্র আগাম পদক্ষেপের নির্দেশ দিয়েছেন মমতা। অন্য কোনও পতঙ্গবাহিত রোগও যাতে ছড়াতে না পারে, তার ব্যবস্থা করতে বলেছেন।