পরিযায়ী শ্রমিকদের রাজ্যে ফেরাতে আবাসন এবং নির্মাণ শিল্পকে এগিয়ে আসার পরামর্শ দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। একই সঙ্গে তাঁর দাবি, জমি নীতির সংস্কার করে লিজ়ে বা ইজারায় থাকা সরকারি জমিতে (লিজ়-হোল্ড) মালিকানা দেওয়ার (ফ্রি-হোল্ড) যে পদক্ষেপ রাজ্য সরকার করেছে, তাতে বিভিন্ন শিল্পের দ্রুত প্রসার ঘটবে। অনেক সংস্থা ইতিমধ্যেই এই সুযোগ নিতে শুরু করেছে। মুখ্যমন্ত্রী এ দিন আসন্ন বিশ্ব বঙ্গ শিল্প সম্মেলন (বিজিবিএস) নিয়েও বার্তা দেন। তিনি জানান, সহযোগী দেশ হিসাবে স্পেনকে আমন্ত্রণ জানানো হবে। এ জন্য খুব শীঘ্রই তিনি শিল্প প্রতিনিধিদের নিয়ে সে দেশে যাবেন।
সোমবার আবাসন এবং নির্মাণ শিল্পের সংগঠন ক্রেডাইয়ের রাজ্য সম্মেলনের মঞ্চ থেকে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, তাঁরা ৫০ লক্ষ পরিযায়ী শ্রমিকের তালিকা দিয়ে বিশেষ অ্যাপ তৈরি করেছেন। মুর্শিদাবাদ, মালদা, উত্তর দিনাজপুর-সহ বিভিন্ন জায়গার দক্ষ নির্মাণ কর্মীদের নাম রয়েছে সেখানে। যাঁরা বেশি অর্থ উপার্জনের জন্য বিদেশে গিয়ে কাজ করেন। তাঁর দাবি, দক্ষতার জন্যই ওই কর্মীদের ভিন্ রাজ্য এবং বিদেশে চাহিদা রয়েছে। কিন্তু অনেক সময় নিরাপত্তার সমস্যাও হয় তাঁদের। নির্মাতাদের উদ্দেশে মমতা পরামর্শ, ‘‘ওই কর্মীদের তালিকা সরকার দিয়ে দেবে। তাঁদের বুঝিয়ে রাজ্যে ফেরাতে উদ্যোগী হন আপনারা। কর্মী প্রয়োজন হলে তালিকা থেকেই সকলকে কাজে লাগান।’’ সেই সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রীর দাবি, গত দু’বছরে রাজ্যে আবাসন ও নির্মাণে ৪০,০০০ কোটি টাকা লগ্নি হয়েছে। যা বছরে বাড়ছে ১০% হারে। কর্মী সংখ্যা ৪৪ লক্ষ। রাজ্যে শুধু আবাসনই নয়, শিল্প তালুক, গুদাম-সহ বিশেষ পণ্য পরিবহণ হাব, নতুন নগরী, মেডিক্যাল কলেজ ইত্যাদি গড়তেও ক্রেডাইয়ের সদস্যদের আহ্বান জানান তিনি।
রাজ্যে সহজে ব্যবসার পরিবেশ নিয়ে বলতে গিয়ে মমতা বলেন, জমি নিবন্ধীকরণ (রেজিস্ট্রেশন), জমির চরিত্র বদল, নাম খারিজ বা মিউটেশন, পরিবেশ-সহ জরুরি বিভিন্ন সায় ইত্যাদি দ্রুত সারার ব্যবস্থা করেছেন তাঁরা। অনলাইনেই কাজ হচ্ছে। শিল্পের জন্য জমির ব্যবস্থা করতে গড়া হয়েছে একাধিক ল্যান্ড ব্যাঙ্ক।
ক্রেডাই সূত্র বলছে, বেশিরভাগ রাজ্যে এখনও সরকারি জমি লিজ়ে বিলি হয়। মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্য, ফ্রি-হোল্ড জমির টানে বহু শিল্প এ রাজ্যে লগ্নি করতে আগ্রহী হচ্ছে। উৎসাহী বিভিন্ন দেশও খোঁজখবর নিচ্ছে। শিল্পায়নের লক্ষ্যে রাজ্যের বিভিন্ন পদক্ষেপে শুধু ভারতেরই নয়, পশ্চিমবঙ্গ হয়ে উঠবে বিশ্বের গেটওয়ে।’’
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)