চাকরি ছাঁটাই নিয়ে নিজের অসন্তোষ প্রকাশ করলেন মুখ্যমন্ত্রী। ছবি— পিটিআই।
কেন্দ্রীয় বঞ্চনার প্রতিবাদে দু’দিনের ধর্না কর্মসূচির শেষ দিন, বৃহস্পতিবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের গলায় ধরা পড়ল চাকরি বাতিল নিয়ে অসন্তোষের সুর। মুখ্যমন্ত্রীর ইঙ্গিত, রাজ্য সরকার যাতে চাকরি দিতে না পারে, সেই ব্যবস্থাই করা হচ্ছে।
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ধর্না শেষ করার আগে মমতা বলেন, ‘‘দু’ঘণ্টায় চাকরি ছাঁটাই! আমরা যাতে চাকরি দিতে না পারি। অনেক চাকরি রেডি করে রেখেছিলাম। কখনও বলছে দু’হাজার লোকের চাকরি ছাঁটাই। কখনও বলছে পাঁচ হাজারের। কখনও বলছে দু’ঘণ্টার মধ্যে সিবিআই অফিসে যাও! দু’ঘণ্টার মধ্যে টাকা ফেরত দাও!’’ মুখ্যমন্ত্রী নির্দিষ্ট করে কারও নাম করেননি। কিন্তু অনেকে মনে করছেন, তাঁর ইঙ্গিত ছিল কলকাতা হাইকোর্টের বিভিন্ন নির্দেশের প্রতি। যদি অন্য একাংশের বক্তব্য, মুখ্যমন্ত্রী শুধুমাত্র ‘আক্ষেপ’ প্রকাশ করেছেন। কারও সম্পর্কে কিছু বলেননি।
ঘটনাপ্রবাহ বলছে, এসএসসি নিয়োগ মামলায় আদালতের নির্দেশে চাকরি হারিয়েছেন অনেকে। রাজ্যের মন্ত্রী পরেশ অধিকারীর কন্যা অঙ্কিতাকে চাকরি হারাতে হয়েছে আদালতের হস্তক্ষেপের পর। নিয়োগ দুর্নীতিতে অভিযুক্ত হয়ে জেলে গিয়েছেন রাজ্যের প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়-সহ তৃণমূলের বিধায়ক মানিক ভট্টাচার্য। জেলে বন্দি শাসক দলের একাধিক নেতা এবং যুবনেতা। সেই ঘটনাপ্রবাহ নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী অবশ্য কিছু বলেননি। তবে চাকরি থেকে ছাঁটাই হওয়া নিয়ে তাঁর অসন্তুষ্টি ধরা পড়েছে।
প্রসঙ্গত, ২০২২ সালের মে মাস থেকে চলতি বছরের মার্চ মাস পর্যন্ত কলকাতা হাই কোর্টের নির্দেশে রাজ্যে চাকরি খুইয়েছেন কমবেশি পাঁচ হাজার। যার শুরুটা হয়েছিল রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী পরেশের কন্যা অঙ্কিতাকে বরখাস্ত করা দিয়ে। কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের নির্দেশ ছিল, একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষক হিসাবে এত দিন অঙ্কিতা যত বেতন পেয়েছেন, তা ফেরত দিতে হবে। প্রাক্তন মন্ত্রীর কন্যা সেই টাকা মিটিয়েও দিয়েছেন। এ ছাড়াও আদালতের নির্দেশে সিবিআই দফতরে হাজিরা দেওয়ার ঘটনাও ঘটেছে। প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ, প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের প্রাক্তন সভাপতি তথা তৃণমূল বিধায়ক মানিক, এসএসসি নিয়োগ নিয়ে তৈরি উপদেষ্টা কমিটির প্রাক্তন চেয়ারম্যান শান্তিপ্রসাদ সিন্হাকে সময় বেঁধে দিয়ে সিবিআই দফতরে হাজিরা দিতে নির্দেশ দিয়েছিল আদালত। ঘটনাচক্রে, টাকা ফেরানো এবং সিবিআই দফতরে হাজিরা— দু’টি বিষয়ই বৃহস্পতিবার উঠে এসেছে মমতার কথায়। যদিও তিনি এক বারও আদালতের নাম নেননি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy