প্রায় বছরখানেক পর আবার কোচবিহারে আসছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এ বার দু’দিনের সফরে সোমবার প্রশাসনিক বৈঠক এবং মঙ্গলবার রাসমেলা ময়দানে জনসভা করবেন তিনি। ইতিমধ্যেই প্রশাসনিক সভা করার জন্য রবীন্দ্রভবন এবং রাসমেলা ময়দান মূল মঞ্চের প্রস্তুতি শেষ পর্যায়ে। এ বারের জনসভায় একটিই মূল মঞ্চ থাকবে বলে প্রশাসনিক সূত্রে জানা গিয়েছে। এসআইআর–এর আবহে মুখ্যমন্ত্রীর এই সফরকে রাজনৈতিক মহল বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করছে। আর এই সফরে তাঁর কর্মসূচির ওপর নজর রাখছে বিজেপি।
সোমবার দুপুরে এবিএন শীল কলেজ ময়দানে হেলিকপ্টারে নামবেন মুখ্যমন্ত্রী। সেখান থেকে বেলা ৪টে নাগাদ তিনি যোগ দেবেন রবীন্দ্রভবনে প্রশাসনিক বৈঠকে। আগামী বিধানসভা নির্বাচনের দিকেই নজর রেখে মুখ্যমন্ত্রীর এই সফর বলে মনে করা হচ্ছে। ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে কোচবিহার আসনে বিজেপি প্রার্থী তথা কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী নিশীথ প্রামাণিককে হারিয়ে তৃণমূল জয় পাওয়ার পর, আগামী বিধানসভা নির্বাচনে কোচবিহারের নয়টি আসনেই জোড়াফুল ফুটিয়ে তোলাই শাসকদলের লক্ষ্য। সেই কারণে মুখ্যমন্ত্রীর এই সফরের দিকে কড়া নজর রাখছে বিজেপিও। সোমবার রাতেই মুখ্যমন্ত্রী সার্কিট হাউসে রাত্রিযাপন করবেন।
আরও পড়ুন:
মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১১টায় রাসমেলা ময়দানে জনসভা করার আগে তিনি মদনমোহন মন্দিরে পুজো দেবেন। নবান্নের নির্দেশে কোচবিহার জেলা প্রশাসন আগেই বৈঠকের জন্য প্রস্তুত রয়েছে। প্রশাসনিক বৈঠকে বিশেষ করে গ্রামীণ রাস্তাঘাট, পানীয় জলের সমস্যা এবং বিভিন্ন সামাজিক সুরক্ষা প্রকল্পের অগ্রগতি নিয়ে বিস্তৃত আলোচনা হতে পারে বলে সূত্রের খবর।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, বর্তমানে রাজ্যে ভোটার তালিকার বিশেষ নিবিড় সংশোধন (এসআইআর) প্রক্রিয়া চলছে, যা নিয়ে বিশেষ করে সীমান্তবর্তী জেলাগুলিতে বিভ্রান্তি ও আতঙ্কের অভিযোগ উঠছে। শাসকদলের আশঙ্কা, অসতর্কতার কারণে বহু বৈধ নাগরিকের নাম ভোটার তালিকা থেকে বাদ পড়ে যেতে পারে। কোচবিহারের জনবিন্যাসে রাজবংশী ও মতুয়া সম্প্রদায়ের বড় অংশ থাকার বিষয়টি রাজনৈতিক ভাবে এই অঞ্চলকে সংবেদনশীল করে তুলেছে। তাই রাসমেলা ময়দানের সভা থেকে এসআইআর ও নাগরিকত্ব ইস্যুতে মুখ্যমন্ত্রী কী বার্তা দেন, সেদিকেই এখন রাজনৈতিক মহলের নজর।