Advertisement
E-Paper

ব্যর্থ বললেন মুখ্যমন্ত্রী, বিরোধীরা দেখছে ‘অক্সিজেন’

ধর্মঘটকে সামনে রেখে সোমবার যে যার নিজের মতো রাজনৈতিক ফায়দা তোলার চেষ্টা চালাল সব দল।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১১ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ০৩:৩৩
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। নিজস্ব চিত্র।

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। নিজস্ব চিত্র।

মুখ্যমন্ত্রী বলছেন, তাঁরা সমর্থন করেননি বলেই ধর্মঘটের কোনও প্রভাব পড়েনি। ধর্মঘট কোনও সমাধান নয়। বাম এবং কংগ্রেসের দাবি, ‘শাসকের রক্তচক্ষু’ উপেক্ষা করে ধর্মঘটের প্রভাব পড়েছে ভালই। ধর্মঘট ভাঙতে প্রশাসনকে নামিয়ে তৃণমূল বরং বিজেপিরই হাত শক্ত করেছে। আবার বিজেপির পাল্টা দাবি, ধর্মঘট সফল করার জন্য শাসক দলই গোপনে সিপিএম এবং কংগ্রেসকে অক্সিজেন দিয়েছে!

ধর্মঘটকে সামনে রেখে সোমবার যে যার নিজের মতো রাজনৈতিক ফায়দা তোলার চেষ্টা চালাল সব দল।

ধর্মঘটের সন্ধ্যায় নবান্ন থেকে বেরোনোর সময়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘নীতিগত ভাবে আমরা বন্‌ধের বিরোধী। যে-ই ডাকুক, আমরা বন্‌ধকে সমর্থন করি না। আমরা সমর্থন করিনি বলেই এখানে বন্‌ধের কোনও প্রভাব পড়েনি।’’ তাঁর আরও বক্তব্য, ‘‘আমরা রাস্তায় নেমে প্রতিবাদ করেছি। আমাদের আসার আগে ৮০ লক্ষ কর্মদিবস নষ্ট হত। ৪৮ হাজার কোটি টাকা দেনা। বন্‌ধ শেষ অস্ত্র হওয়া উচিত।’’ পেট্রল, ডিজেলের দাম বাড়ছে এবং টাকার দাম কমছে, সব মিলিয়ে দেশে ‘অর্থনৈতিক বিপর্যয়’ চলছে বলেও মন্তব্য করেছেন মুখ্যমন্ত্রী।

বিরোধী বাম ও কংগ্রেসের দাবি, কলকাতার তুলনায় জেলায় জেলায় ধর্মঘটের প্রভাব ছিল বেশি। কলকাতায় পরিবহণ সচল থাকলেও যাত্রী এবং রাস্তায় গাড়িঘোড়াও ছিল কম। কলকাতার বহু জায়গা-সহ রাজ্যের সর্বত্রই বিক্ষোভ এবং বিক্ষিপ্ত ভাবে অনেক জায়গায় রেল অবরোধ হয়েছে। ধর্মঘটের সমর্থনে প্রচারকারীদের বেশ কিছু জায়গায় পুলিশ মারধর এবং গ্রেফতার করেছে বলেও বিরোধীদের অভিযোগ। পেট্রল, ডিজেল ও গ্যাসের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদে কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে সারা দেশে ধর্মঘট কিন্তু বাংলায় হরতাল ভাঙতে রাজ্য সরকার কেন সক্রিয়, এই প্রশ্ন তুলে তৃণমূলকেই নিশানা করেছেন বাম ও কংগ্রেস নেতারা।

বামফ্রন্টের চেয়ারম্যান বিমান বসুর বক্তব্য, ‘‘হরতালের অন্যতম বিষয় ছিল দুর্নীতির প্রতিবাদ। তৃণমূল দলটাই আপাদমস্তক দুর্নীতিগ্রস্ত! তাই অন্য পথ নেওয়ার চেষ্টা তারা করেছে।’’ প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরীর কথায়, ‘‘বন্‌ধ বানচাল করতে প্রশাসন এবং তৃণমূল দল নেমেছিল। তার পরেও স্বতঃস্ফূর্ত ভাবে অনেকে দোকানপাট বন্ধ রেখেছেন, ধর্মঘটে বেরোননি। এটাই আমাদের পাওনা।’’ রাজ্য জুড়ে বাম ও কংগ্রেস কর্মী-সমর্থকেরা এ দিন যে ভাবে পথে মিছিল-বিক্ষোভ করেছেন, সাংগঠনিক দিক থেকে তাকে স্বস্তির কারণ হিসেবেই দেখছেন বিরোধী নেতৃত্ব। সিপিএমের রাজ্য নেতৃত্ব সূর্যকান্ত মিশ্র বলেছেন, ‘‘২২টা জেলাতেই মানুষ এবং বামপন্থীরা রাস্তায় ছিলেন। গ্রেফতার করে, পিটিয়ে তাঁদের থামানো যাবে না!’’

ধর্মঘটের বিরোধিতা করেই পেট্রো-পণ্যের মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদে এ দিন মৌলালি থেকে ধর্মতলা পর্যন্ত মিছিল করেছে তৃণমূল। মিছিল শেষে সভায় দলের রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সী বলেন, ‘’৪৮ ঘণ্টার নোটিসে এই কর্মসূচির আয়োজন করা হয়েছে। প্রস্তুত থাকতে হবে যাতে প্রয়োজনে ৪৮ মিনিটে এই রকম কর্মসূচি করতে পারি।’’ যুব তৃণমূল সভাপতি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ও বলেন, ‘‘এত অল্প সময়ে এই রকম মিছিল তৃণমূল করতে পারে। যে কোনও সময় পথে নামার জন্য আমাদের তৈরি থাকতে হবে।’’ একই বার্তা দিয়েছেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়ও।

বিজেপি অবশ্য পথে ছিল না। রাজ্য দফতরে বসেই দলের রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের কটাক্ষ, ‘‘মানুষ বন্‌ধ ব্যর্থ করে দিয়েছে। প্রকাশ্যে বন্‌ধের বিরোধিতা করলেও তৃণমূল সিপিএম এবং কংগ্রেসকেই অক্সিজেন দিয়েছে। বন্‌ধ করে, মিছিল করে, বিক্ষোভ করে ওরা নেতা বাঁচাও অভিযান চালাচ্ছে।’’

Strike Mamata Banerjee Congress BJP CPM
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy