Advertisement
E-Paper

ভারতী জমানা শেষে কী বার্তা, জল্পনা

 জিন্দলদের সিমেন্ট কারখানার উদ্বোধনে আজ, সোমবার শালবনিতে আসছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। জেলার প্রাক্তন পুলিশ সুপার ভারতী ঘোষের অপসারণের পরে এই প্রথম মুখ্যমন্ত্রীর পশ্চিম মেদিনীপুর সফর।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৫ জানুয়ারি ২০১৮ ০০:৪৮
প্রস্তুত: মুখ্যমন্ত্রীর অনুষ্ঠান মঞ্চ শালবনিতে। ছবি: সৌমেশ্বর মণ্ডল

প্রস্তুত: মুখ্যমন্ত্রীর অনুষ্ঠান মঞ্চ শালবনিতে। ছবি: সৌমেশ্বর মণ্ডল

জিন্দলদের সিমেন্ট কারখানার উদ্বোধনে আজ, সোমবার শালবনিতে আসছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। জেলার প্রাক্তন পুলিশ সুপার ভারতী ঘোষের অপসারণের পরে এই প্রথম মুখ্যমন্ত্রীর পশ্চিম মেদিনীপুর সফর। ফলে, প্রত্যক্ষ ভাবে না হলেও পরোক্ষ ভাবে তিনি কোনও বার্তা দেন কি না, তা নিয়ে জল্পনা শুরু হয়েছে বিভিন্ন মহলে।

২০১৬ সালের ৬ জানুয়ারি শালবনিতে এসে প্রস্তাবিত সিমেন্ট কারখানার শিলান্যাস করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই সময়ও জেলার পুলিশ সুপার ছিলেন ভারতী। এর আগে মুখ্যমন্ত্রী শেষ পশ্চিম মেদিনীপুরে এসেছেন গত বছর ফেব্রুয়ারিতে। ওই সময় খড়্গপুরে তিনি প্রশাসনিক বৈঠক এবং সভা করেন। পরে গত অক্টোবরে এসেছিলেন ঝাড়গ্রামে। ততদিনে অবশ্য ঝাড়গ্রাম নতুন জেলা হয়ে গিয়েছে। মুখ্যমন্ত্রীর এই দুই সফরেও ভারতীকে সব সময় তাঁর পাশে দেখা গিয়েছে। এ বার আর সেই ছবি দেখা যাবে না।

দীর্ঘ সময় ধরে মুখ্যমন্ত্রীর ‘আস্থাভাজন’ ছিলেন ভারতী। সেই সূত্রে পশ্চিম মেদিনীপুর-ঝাড়গ্রামে ‘আধিপত্য’ ছিল তাঁরা। শাসক দলের নেতারা তাঁর ভয়ে গুটিয়ে থাকতেন বলে অভিযোগ। সরকারি মঞ্চে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে বারবার ‘জঙ্গলমহলের মা’ বলে সম্বোধন করে বিতর্কে জড়িয়েছিলেন ভারতী। বিরোধীরা ভারতীকে বিঁধলেও সেই সময় মুখ্যমন্ত্রী তাঁর পাশে ছিলেন। আর সেই সূত্রে বকলমে তিনিই হয়ে উঠেছিলেন জঙ্গলমহলের এই জেলায় শাসক দলের মাথা।

এক সময় কাজের দাবিতে জিন্দল কারখানার সামনে জমিদাতাদের বিক্ষোভে রাশ টানতে সক্রিয় ছিল ভারতীর পুলিশ। জমিদাতা সংগঠনের এক নেতার কথায়, “কারখানা কর্তৃপক্ষ যেমন কখনও চায় না এখানে কোনও আন্দোলন হোক, তেমন পুলিশও চায়নি এখানে কোনও আন্দোলন হোক। আন্দোলন চলাকালীন একবার ভারতী ঘোষও এসেছিলেন। ওই সময় পুলিশ সুপারকে বলতে শুনেছিলাম, ‘কীসের জন্য আন্দোলন করছেন? আগে তো গাছ লাগানো হোক (কারখানা হোক)। তারপর তো ফলের (কাজের) আশা করবেন।’ সেই আন্দোলনও বেশি দিন চালানো সম্ভব হয়নি।”

এখন পট পরিবর্তন হয়েছে। সবং উপ-নির্বাচনের পরেই ‘আস্থাভাজন’ পুলিশ সুপার ভারতীকে বদলি করা হয় পশ্চিম মেদিনীপুর থেকে। কম গুরুত্বের পদে বদলি করার দু’দিনের মধ্যে রাজ্য পুলিশের ডিজি সুরজিৎ কর পুরকায়স্থের কাছে পদত্যাগপত্র পাঠিয়ে দেন ভারতী। তারপর পশ্চিম মেদিনীপুর থেকে ‘ভারতী- ছায়া’ মোছার কাজ শুরু হয়েছে। তাঁর ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত একাধিক পুলিশকর্তার বদলি হয়েছে। দিন কয়েক আগে মেদিনীপুরে এসে বৈঠক করেছেন ডিজি। সেই বৈঠকেও ভারতী-প্রসঙ্গ উহ্য ছিল। ফলে, মুখ্যমন্ত্রীর মঞ্চ থেকে ভারতী-জমানা শেষে কী বার্তা দেওয়া হয়, তা নিয়ে গোটা জেলা জুড়ে কৌতূহল রয়েছে।

রাজনৈতিক মহলের একাংশ অবশ্য মনে করছে, মুখ্যমন্ত্রীর এ বারের শালবনি সফরে ভারতী-প্রসঙ্গ উঠে আসার সম্ভাবনা কম। কারণ, মুখ্যমন্ত্রীর এই সফর জিন্দলদের সিমেন্ট কারখানার উদ্বোধন ঘিরে। ফলে, রাজ্য সরকারের সাফল্যগুলোই তাঁর বক্তব্যে উঠে আসার সম্ভাবনা রয়েছে। রাজ্যের শিল্পবান্ধব পরিবেশের কথাই বেশি করে তুলে ধরার চেষ্টা করবেন তিনি। জেলা তৃণমূলের এক নেতার কথায়, “মুখ্যমন্ত্রীর সফরে কোনও ব্যক্তির প্রসঙ্গ আসবে কেন? মুখ্যমন্ত্রীর কাছে সব সময় মানুষের ব্যাপারটাই বড় গুরুত্ব পায়। তাঁর বক্তব্যে নিশ্চিত ভাবে মানুষের কথাই থাকবে।” একই সঙ্গে তাঁর সংযোজন, “পরোক্ষ
ভাবে কোনও বার্তা হয়তো দিলেও দিতে পারেন।”

Mamata Banerjee CM Public Meeting Salboni
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy