জগদ্ধাত্রী পুজো করে মন্দিরের ভিত পুজো চলছে। (ডান দিকে) হান্নান মণ্ডল। নিজস্ব চিত্র।
মন্দির তৈরির জন্য জমিদান করলেন হান্নান মণ্ডল। পরধর্মের প্রতিবেশী মানুষের ধর্মাচারণের প্রতি সম্মান জানিয়ে এগিয়ে এলেন ওই মুসলিম গ্রামবাসী। জগদ্ধাত্রী পুজোর মাধ্যমে নবমীর সকালে ওই মন্দিরের ভিতপুজো করা হল।
নদিয়া জেলার সীমান্তের এক গ্রাম মলুয়াপাড়া। স্থানীয়েরা জানাচ্ছেন, কালীপুজো করার মতো জায়গা ছিল না। কাঁটাতারের বেড়ার পাশে বর্ডার রোডের ধারে এক ফালি জমিতে শুরু হয়েছিল কালীপুজো। কিন্তু তাতেও সমস্যা। প্রতি বছর পুজোর আগে বিএসএফের অনুমতি নিতে হয়। অনুমতি পাওয়া বিএসএফ কর্তৃপক্ষের মর্জির উপরে নির্ভর করে। এই সমস্যার সমাধানের জন্য নিজে থেকেই এগিয়ে আসেন গ্রামের বাসিন্দা হান্নান। নিজে মসজিদে প্রার্থনা করলেও প্রতিবেশী ভাই-বোনেদের কালীপুজোর সময়ে স্থায়ী এক মন্দিরের প্রয়োজন অনুভব করেন। দিন সাতেক আগে পুজো কমিটির নামে পাঁচ শতক জমি রেজিস্ট্রি করে দেন তিনি। তৈরি হয়ে যায় দলিলও। আর জমির দলিল হাতে পেয়ে মন্দির কমিটির সদস্যেরা বলছেন, “এটাই আমাদের দেশ। ধর্মের বিভেদটা আসলে তৈরি করা।”
বাংলাদেশ সীমান্তে কাঁটাতার ঘেঁষা এই গ্রামে প্রায় সাড়ে চারশো পরিবারের বাস। তার মধ্যে হিন্দু পরিবারের সংখ্যা প্রায় তিনশো। বাকি পরিবার মুসলিম। স্থানীয়েরা জানাচ্ছেন, তাঁদের যাতায়াতের জন্য কোনও রাস্তা নেই। বিএসএফের বর্ডার রোডের উপর দিয়ে যাতায়াত করতে হয়। গ্রামের বাসিন্দা তথা মহেশপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রাক্তন তৃণমূলের বিমল সরকার এই পুজো কমিটির সভাপতি। তাঁর কথায়, “আমরা প্রথমে ভাবতেই পারিনি যে হান্নান মণ্ডল সত্যিই এতটা জমি দান করবেন। ওঁর কাছে চিরকৃতজ্ঞ।”
জমিদাতা হান্নান মণ্ডল দরিদ্র চাষি। তিনি আবার এই পুজো কমিটির সহ-সভাপতি। তিনি বলেন, "পুজো বন্ধ হয়ে যাবে, এমনটা হতেই পারে না। এ বার গ্রামে একটা স্থায়ী মন্দির হবে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy