রাজ্যে কড়াকড়ি চলছে। করোনার তৃতীয় ঢেউ এল বলে সতর্ক করছেন বিশেষজ্ঞেরা। অথচ, ২০২১-এর ২১ জুলাই ‘ভার্চুয়াল’ মাধ্যমে ‘শহিদ স্মরণের’ কথা বললেও তৃণমূল এবং বিজেপির বিরুদ্ধে রাজ্যের নানা জায়গায় স্বাস্থ্যবিধি ভাঙার অভিযোগ উঠেছে। রাজ্য কোভিড মনিটরিং কমিটির পূর্ব ও পশ্চিম বর্ধমান জেলার কো-অর্ডিনেটর সমরেন্দ্রকুমার বসু অবশ্য বলেন, ‘‘ভার্চুয়াল সভা দেখতে গিয়ে যা হয়েছে, তা রাজনৈতিক বা অরাজনৈতিক— কোনও ক্ষেত্রেই কাম্য নয়। এ ভাবে চললে, তৃতীয় ঢেউয়ের মোকাবিলা কঠিন হবে।’’
উঠেছে হামলার অভিযোগও। পূর্ব মেদিনীপুরের ময়নায় দলের কার্যালয় থেকে বক্তৃতা শুনে ফেরার পথে বুধবার গুরুপদ বর্মণ নামে এক তৃণমূল কর্মীকে কোপানোয় অভিযুক্ত এক বিজেপি কর্মী। গুরুপদবাবু তমলুক জেলা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। ২১ জুলাইয়ের অনুষ্ঠান ঘিরে পশ্চিম মেদিনীপুরের কেশিয়াড়ি, কোচবিহার থেকে তৃণমূলের ‘গোষ্ঠী-কোন্দলের’ ছবিও মিলেছে।
এ দিন মাংস-ভাত-পরোটার আয়োজন ছিল দক্ষিণ ২৪ পরগনার ভাঙড়ের নানা এলাকায়। অভিযোগ, যাঁরা খেতে এবং জায়ান্ট স্ক্রিনে ‘ভার্চুয়াল’ সভা শুনতে এসেছিলেন, তাঁদের মধ্যে না ছিল দূরত্ব, না মাস্ক ছিল সবার মুখে-নাকে। ভাঙড়ের তৃণমূল নেতা আরাবুল ইসলাম অবশ্য বলেন, ‘‘সবাইকে মাস্ক পরতে বলেছিলাম। স্যানিটাইজ়ারের ব্যবস্থা রেখেছিলাম। কিন্তু মানুষের উৎসাহ, উদ্দীপনা ছিল চোখে পড়ার মতো। বিধিনিষেধ ভুলে তাঁরা জড়ো হন।’’ একই ধরনের অভিযোগ মিলেছে উত্তর ২৪ পরগনার বসিরহাটের ট্যাঁটরায়।
অভিযোগ, ঝাড়গ্রামের বিভিন্ন এলাকায় দূরত্ব-বিধি না মেনে তৃণমূলে অনেকে যোগ দেন এ দিন। শিলিগুড়ি, হুগলি, উত্তর দিনাজপুর, মালদহ, মুর্শিদাবাদ, নদিয়া, বীরভূম, পুরুলিয়া, বাঁকুড়ার নানা জায়গায় স্বাস্থ্যবিধি না মানায় অভিযুক্ত তৃণমূল। তবে হাওড়া গ্রামীণ, পূর্ব বর্ধমানের পূর্বস্থলীর হেমায়েতপুরে করোনা-বিধি মানার ছবি দেখা গিয়েছে শাসক দলের নেতা-কর্মীদের মধ্যে।
‘গণতন্ত্র বাঁচাও’ কর্মসূচি পালন করতে গিয়ে উত্তর ও দক্ষিণ দিনাজপুর, মালদহ, হুগলির আরামবাগ, পশ্চিম বর্ধমানের আসানসোল, উত্তর ২৪ পরগনার বনগাঁ মহকুমার বিভিন্ন জায়গায় স্বাস্থ্যবিধি ভাঙায় অভিযুক্ত বিজেপিও। তবে বিজেপির আরামবাগ সাংগঠনিক জেলা সভাপতি বিমান ঘোষের দাবি, ‘‘স্বাস্থ্যবিধি মেনেই কর্মসূচি হয়েছে।’’ হাওড়া গ্রামীণ, নদিয়া, কোচবিহার, পুরুলিয়া এবং বাঁকুড়ায় বিধি মেনে কর্মসূচি পালন করেছেন বিজেপি নেতারা।
তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বক্তব্য শোনানোর জন্য বাঁধা মাইকে বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের বক্তৃতা শোনা গিয়েছে মেদিনীপুর শহরের বটতলাচকে। তৃণমূলের স্থানীয় বিদায়ী কাউন্সিলর টোটন সাসপিল্লি জানাচ্ছেন, একটি টিভি চ্যানেলের সঙ্গে ওই মাইকের সংযোগ ছিল। চ্যানেলে তৃণমূলের ‘ভার্চুয়াল’ সভার সম্প্রচার হতে হতে আচমকা বিজেপির কর্মসূচি সম্প্রচার হয়। তাই ‘বিভ্রাট’। সঙ্গে সঙ্গে চ্যানেল বদলানো হয়।