Advertisement
৩০ এপ্রিল ২০২৪
Irregularities In Ration Distribution

‘ফড়ের’ কাছে বিক্রি রেশন-সামগ্রী, দাবি মেমারিতে

‘দুয়ারে রেশন’ প্রকল্পে উপভোক্তার বায়োমেট্রিক তথ্য নেওয়ার পরে প্রাপ্য রেশনের অনলাইন বিল বেরোয়। সেই বিল দেখিয়ে সামগ্রী নেওয়ার কথা উপভোক্তার।

ration.

—প্রতীকী ছবি।

সৌমেন দত্ত
মেমারি শেষ আপডেট: ০৮ নভেম্বর ২০২৩ ০৬:৩৩
Share: Save:

রেশন দুর্নীতি মামলায় রাজ্যে ধরপাকড় ও তল্লাশি চালাচ্ছে ইডি। তারই মধ্যে রেশনের সামগ্রী বিলিতে অনিয়মের অভিযোগ উঠল পূর্ব বর্ধমানের মেমারিতে। অনলাইন বিলের পরিবর্তে হাতে লেখা ‘টোকেন’ দিয়ে রেশন ডিলার উপভোক্তাদের প্রাপ্য সামগ্রীর এক দল ব্যবসায়ী বা ‘ফড়েদের’ কাছে বিক্রি করছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। মঙ্গলবার মেমারির বেনাপুর গ্রামে ডিলার ও এক ‘ফড়েকে’ ঘিরে বিক্ষোভ দেখান স্থানীয় বাসিন্দারা। পুলিশ পরিস্থিতি সামাল দেয়।

সম্প্রতি মেমারির রসুলপুরেও রেশন সামগ্রী বিলি নিয়ে এমন অভিযোগ উঠেছিল। পূর্ব বর্ধমান জেলা খাদ্য নিয়ামক মিঠুন দাস বলেন, ‘‘বেনাপুরের ঘটনায় অভিযোগ পাওয়ার পরেই তদন্তের জন্য আধিকারিকদের পাঠানো হয়েছে। রসুলপুরে অভিযুক্ত রেশন ডিলারকে সোমবার সাসপেন্ড করা হয়েছে।’’

‘দুয়ারে রেশন’ প্রকল্পে উপভোক্তার বায়োমেট্রিক তথ্য নেওয়ার পরে প্রাপ্য রেশনের অনলাইন বিল বেরোয়। সেই বিল দেখিয়ে সামগ্রী নেওয়ার কথা উপভোক্তার। বেনাপুরে অনেকের অভিযোগ, বিলের পরিবর্তে তাঁদের হাতে লেখা ‘টোকেন’ দেওয়া হচ্ছিল। এক জনের বায়োমেট্রিক তথ্য যাচাই করে পরিবারের সবার রেশন পাওয়ার কথা। কিন্তু অভিযোগ, পরিবারের সবার আধার কার্ডের লিঙ্ক মিলছে না— এই দাবি করে সংশ্লিষ্ট ডিলার প্রতি মাসেই অনেক পরিবারের দু’তিন জনের রেশন সামগ্রী দিচ্ছিলেন না। বাসিন্দাদের দাবি, তাঁদের প্রাপ্য সেই সামগ্রীর টোকেন যাচ্ছিল ফড়েদের কাছে। আবার কোনও কোনও উপভোক্তাও বিনামূল্যের রেশনের টোকেন কম দামে ফড়েদের কাছে বিক্রি করেন বলে অভিযোগ। মঙ্গলবার সেই নিয়ে অভিযোগ করেন স্থানীয় বাসিন্দা চৈতালি সর্দার, মিলন পাঠক, হেমন্ত ক্ষেত্রপালেরা। তাঁদের দাবি, ‘‘এ দিন এক ফড়ে প্রচুর টোকেন নিয়ে এসে রেশন সামগ্রী তুলছিলেন। হইচই শুরু হতেই মোটরবাইকে তিনি পালানোর চেষ্টা করেন। এলাকার অনেকে ছুটে গিয়ে তাঁকে ধরে ফেলেন।’’

ওই ফড়ে দাবি করেন, রেশন ডিলার ও তাঁর কর্মীদের কাছ থেকে টাকা দিয়ে টোকেনগুলি কিনেছেন তিনি। রেশন সামগ্রী নিয়ে গিয়ে বড় ব্যবসায়ীর কাছে বিক্রি করেন। যদিও সংশ্লিষ্ট ডিলার রাজীব রায়ের দাবি, ‘‘ওই টোকেনের বিষয়ে আমার কিছু জানা নেই। কর্মীরা যুক্ত থাকতে পারেন। রেশন সামগ্রীর হিসাবও মিলছে না। দফতরকে জানাব।’’ এক কর্মী বিপ্লব পালের যদিও দাবি, “টোকেন দেখেই রেশনের জিনিস দিই। কে কী ভাবে টোকেন পেয়েছেন, আমার জানা নেই।’’

‘ওয়েস্ট বেঙ্গল এমআর ডিলার্স অ্যাসোসিয়েশন’-এর পূর্ব বর্ধমানের সম্পাদক পরেশচন্দ্র হাজরা বলেন, “কোনও ভাবেই টোকেন দেওয়া যায় না। ইংরেজি বুঝতে অসুবিধা থাকলে অনলাইন বিলের পিছনে গ্রাহকদের প্রাপ্য সামগ্রী লিখে দিতে হবে।’’ সংগঠনের কর্তাদের দাবি, টোকেন দেওয়া নিয়ে কোথাও ক্ষোভ-বিক্ষোভ হলে বা খাদ্য দফতর ব্যবস্থা নিলে তার দায় তাঁরা নেবেন না, এ কথা সদস্যদের জানিয়ে দেওয়া হয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Memari
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE