Advertisement
E-Paper

স্কুলে বাড়তি ফি, নালিশ মমতাকে

সরকারের নির্দেশ, নবম থেকে দ্বাদশ শ্রেণিতে প্রতি শিক্ষাবর্ষে শহরাঞ্চল এবং গ্রামে পড়ুয়া-পিছু যথাক্রমে সর্বাধিক ৭৫ এবং ৬৩ টাকা ফি ধার্য করা যাবে। বিজ্ঞান বিভাগে পরীক্ষাগারের জন্য প্রতি বিষয়ে ১২ টাকার বেশি ধার্য করা যায় না।

অরুণাক্ষ ভট্টাচার্য

শেষ আপডেট: ২৮ জুন ২০১৭ ০৪:৪১
জিএসটি অনুষ্ঠান বয়কটের সিদ্ধা্ন্ত মমতার।— ফাইল চিত্র।

জিএসটি অনুষ্ঠান বয়কটের সিদ্ধা্ন্ত মমতার।— ফাইল চিত্র।

রাজ্যের সরকারি সাহায্যপ্রাপ্ত স্কুলগুলিতে পড়ুয়াদের ফি বেঁধে দেওয়া হয়েছে। তা সত্ত্বেও অতিরিক্ত ফি নেওয়া হচ্ছে বলে মুখ্যমন্ত্রী ও শিক্ষামন্ত্রীর কাছে অভিযোগ জানিয়েছেন উত্তর ২৪ পরগনার বেশ কিছু স্কুলের অভিভাবকেরা।

মধ্যমগ্রাম উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়-সহ কিছু স্কুলের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠছে, রসিদ কেটে নানা খাতে বেশি টাকা নেওয়া হচ্ছে। সরকারি বিধি অনুযায়ী সরকারি ও সরকারি সাহায্যপ্রাপ্ত স্কুলে পঞ্চম থেকে অষ্টম শ্রেণির পড়ুয়াদের কাছ থেকে এক শিক্ষাবর্ষে কোনও ভাবেই ২৪০ টাকার বেশি বেতন নেওয়া যাবে না। কিন্তু মধ্যমগ্রাম উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ে তার ৪-৫ গুণ টাকা নেওয়া হয় বলে অভিযোগ। উচ্চশিক্ষা দফতরের কাছে অভিযোগ করার পরে সেই টাকা নেওয়া বন্ধ হয়েছে। কিন্তু অন্যান্য শ্রেণিতে বেশি টাকা নেওয়া বন্ধ হয়নি বলে অভিযোগ।

সরকারের নির্দেশ, নবম থেকে দ্বাদশ শ্রেণিতে প্রতি শিক্ষাবর্ষে শহরাঞ্চল এবং গ্রামে পড়ুয়া-পিছু যথাক্রমে সর্বাধিক ৭৫ এবং ৬৩ টাকা ফি ধার্য করা যাবে। বিজ্ঞান বিভাগে পরীক্ষাগারের জন্য প্রতি বিষয়ে ১২ টাকার বেশি ধার্য করা যায় না। কিন্তু মধ্যমগ্রামের ওই স্কুলে তার কয়েক গুণ টাকা নেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ। ওখানে একাদশ শ্রেণিতে ভর্তি চলছে। এ বারেও অভিযোগ, মেয়েদের কাছ থেকে ভর্তির জন্য প্রায় হাজার টাকা এবং পরীক্ষাগার খাতে ৭৫ টাকা নেওয়া হয়েছে।

বিশ্বনাথ কুণ্ডু নামে এক অভিভাবক এই বিষয়ে জাতীয় শিশু সুরক্ষা ও অধিকার কমিশনের কাছে অভিযোগ করেছেন। তাঁর অভিযোগ, ওই স্কুলে মধ্যমগ্রামের আশপাশের গরিব পরিবারের ছাত্রীরা পড়তে আসে। কিন্তু বেশি ফি ছাড়াও বিভিন্ন বেসরকারি সংস্থাকে দিয়ে কম্পিউটারের পাশাপাশি নাচ-গান-নাটক শেখানোর জন্য পড়ুয়াদের কাছ থেকে অতিরিক্ত টাকা নেওয়া হচ্ছে।

ওই স্কুলের পরিচালন সমিতির সভাপতি অসিত দত্ত বলেন, ‘‘আমরা বেশি ফি, ভর্তিতে টাকা নেওয়ার বিরুদ্ধে। পরিচালন সমিতির সিদ্ধান্ত ছাড়াই প্রধান শিক্ষিকা একক সিদ্ধান্তে এ-সব করছেন।’’ ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষিকা সুতপা ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘সরকারি বিধি মেনেই একাদশ শ্রেণিতে এক হাজার টাকার মতো নেওয়া হচ্ছে। এর মধ্যে কম্পিউটার ক্লাসের টাকাও রয়েছে।’’

গোবরডাঙা খাটুরা বয়েজ স্কুলে একাদশের বিজ্ঞানে ১৮০০, কলা বিভাগে ১২৫০ টাকা নেওয়া হচ্ছে। পরীক্ষাগার খাতে নেওয়া হচ্ছে ৩০০ টাকা। হাবরা হাইস্কুলে একাদশ শ্রেণির কলা বিভাগে ভর্তির জন্য ১২০০, বাণিজ্যে এক হাজার, বিজ্ঞান বিভাগে দেড় হাজার এবং জীববিদ্যায় দু’হাজার টাকা নেওয়া হচ্ছে। ওই স্কুলের প্রধান শিক্ষক সঞ্জীবন পণ্ডা বলেন, ‘‘সরকার থেকে পরীক্ষাগারের জন্য যে-টাকা আসে, তা দিয়ে জিনিসপত্র কেনা থেকে শুরু করে দেখভালের কাজ সম্ভব হয় না। তাই ইচ্ছের বিরুদ্ধেই বেশি টাকা নিতে হচ্ছে।’’ স্কুলের বিদ্যুৎ বিল থেকে শুরু করে চেয়ার-বেঞ্চ ভাঙার টাকাও সরকার দেয় না। বাধ্য হয়েই ছাত্রছাত্রীদের উপরে তার বোঝা চাপাচ্ছে স্কুল।

বেশি টাকা চাওয়ায় গরিব পড়ুয়ারা ভর্তি হতে পারছে না। হাবরার বাসিন্দা দিলীপ সুরের ফলের ছোট দোকান রয়েছে। ছেলে মাধ্যমিকে ৮০ শতাংশের বেশি নম্বর পেয়েছে। টাকার অভাবে তাকে হাবরা হাইস্কুলে ভর্তি করাতে পারেননি বলে জানান দিলীপবাবু। ‘‘কম টাকায় ছেলেকে হাটথুবা হাইস্কুলে ভর্তি করিয়ে দিয়েছি,’’ বললেন ফল ব্যবসায়ী।

School Fees Education Mamata Banerjee West Bengal CM গোবরডাঙা খাটুরা বয়েজ স্কুল
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy