গ্রাফিক: আনন্দবাজার অনলাইন।
গিয়ে বারে সিন্ড্রোম (জিবিএস)-এ আক্রান্ত হয়ে রাজ্যের সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতাল মিলিয়ে এখনও পর্যন্ত প্রায় ১৭ জন চিকিৎসাধীন রয়েছে। তার মধ্যে বেশ কয়েকটি শিশু রয়েছে। ইতিমধ্যে মৃত্যু হয়েছে দশ বছরের এক শিশু-সহ আরও দু’জনের। সেই প্রেক্ষিতে ‘জিবিএস’ আক্রান্ত হয়ে নতুন করে আর কারও যেন মৃত্যু না হয়, সে বিষয়ে রাজ্যের প্রতিটি সরকারি হাসপাতালকে সতর্ক করল স্বাস্থ্য দফতর। পাশাপাশি, ওই রোগে আক্রান্ত হলে কী ধরনের চিকিৎসা দিতে হবে, পরিকাঠামো কতটা প্রস্তুত রাখতে হবে সেই বিষয়ে রবিবার রাতে ভিডিয়ো বৈঠক করলেন স্বাস্থ্যকর্তারা।
‘ইন্ডিয়ান অ্যাকাডেমি অব পেডিয়াট্রিকস’ (আইএপি) এবং রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত ওই বৈঠকে বিশেষসচিব (স্বাস্থ্য-শিক্ষা) অনিরুদ্ধ নিয়োগী, স্বাস্থ্য অধিকর্তা স্বপন সোরেন, মেডিক্যাল কলেজগুলির আধিকারিক, শিশু ও স্নায়ু রোগ চিকিৎসকেরা এবং ওই সংগঠনের সর্বভারতীয় সভাপতি বসন্ত খালাতকর, কোষাধ্যক্ষ শিশু রোগ চিকিৎসক অতনু ভদ্র যোগ দিয়েছিলেন। অতনু বলেন, ‘‘জিবিএসে কে বা কারা আক্রান্ত হবেন তা আগাম বলা মুশকিল। পুণেতে জলে এক ধরনের ব্যাকটেরিয়ার কারণে আচমকাই অনেকে সংক্রমিত হয়েছিলেন। তবে রাজ্যে এখনও উদ্বেগজনক পরিস্থিতি তৈরি হয়নি। তা-ও আগাম প্রস্তুত থাকার জন্যই এই বৈঠকের আয়োজন।’’
সূত্রের খবর, এই মুহূর্তে চিকিৎসাধীন রোগীদের শারীরিক অবস্থা কী রকম রয়েছে, কী ধরনের চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে, তার খবর নেন স্বাস্থ্যকর্তারা। তাঁরা প্রতিটি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে স্পষ্ট জানিয়ে দেন, অযথা আতঙ্কিত হওয়ার কারণ নেই। কিন্তু আচমকাই যদি গিয়ে বারে সিন্ড্রোমে আক্রান্তের সংখ্যা বৃদ্ধি পায়, তা মোকাবিলার জন্য এখন থেকে পরিকাঠামো প্রস্তুত রাখতে হবে। শহরের মেডিক্যাল কলেজগুলিতে স্নায়ু রোগ বিভাগের ক্রিটিক্যাল কেয়ার ইউনিটে অন্তত দু’টি করে শয্যা নির্দিষ্ট করে প্রস্তুত রাখতে হবে। একই সঙ্গে জিবিএস আক্রান্ত শিশুদের চিকিৎসার জন্য পেডিয়াট্রিক ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিটেও অন্তত দু’টি করে শয্যার ব্যবস্থা করে রাখতে হবে। ওই দুই ক্ষেত্রেই কী ধরনের চিকিৎসা দিতে হবে তা-ও বৈঠকে আলোচনা করা হয়েছে। এক স্বাস্থ্যকর্তার কথায়, ‘‘প্রয়োজন মতো ক্রিটিক্যাল কেয়ারের চিকিৎসা সম্পর্কে নির্দিষ্ট এসওপি জারি করা হবে।’’
বৈঠকে শিশু ও স্নায়ু রোগ বিশেষজ্ঞদের কাছে জানতে চাওয়া হয়, কী ভাবে আগাম বোঝা সম্ভব একটি শিশু জিবিএস আক্রান্ত। স্নায়ু রোগ চিকিৎসক বিমানকান্তি রায় বলেন, ‘‘শিশুদের হাত-পা ঝিনঝিন কিংবা জোর কমে গেলে স্নায়ু রোগ চিকিৎসকের কাছে আসতে হবে। চিকিৎসক যদি দেখেন শিশুর হাত-পায়ের রিফ্লেক্স (প্রতিবর্ত ক্রিয়া) চলে গিয়েছে, তখন ক্লিনিক্যালি সন্দেহ করা হবে সেটি জিবিএসের লক্ষণ।’’ ওই চিকিৎসক আরও জানান, এর পরে নিশ্চিত হতে শিশুর শিরদাঁড়া থেকে জল (সেরিব্রো স্পাইনাল ফ্লুইড) নিয়ে ও ‘নার্ভ কন্ডাকশন টেস্ট’ (এনসিভি) করতে হবে। যদি রিপোর্ট পজ়িটিভ আসে, তা হলে ওই রোগীকে হাসপাতালে ভর্তি করতে হবে। তবে ভর্তি করা মানেই শিশুকে ক্রিটিক্যাল কেয়ারে বা ভেন্টিলেশনে দিতে হবে তেমনটা নয় বলেও বৈঠকে আলোচনা হয়। বরং কড়া পর্যবক্ষণে রাখার কথা বলা হয়। বৈঠকে এ-ও জানানো হয়, জিবিএসে আক্রান্তদের প্রয়োজন ছাড়া ইন্ট্রাভেনাস ইমিউনোগ্লোবিউলিন ইঞ্জেকশন বা প্লাজ়মাফেরেসিস চিকিৎসা দেওয়া যাবে না। শ্বাসকষ্ট, খাবার গিলতে, কথা বলতে অসুবিধা হলে ওই পদ্ধতিতে চিকিৎসা করতে হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy