—ফাইল চিত্র।
বিতর্ক ছিলই। লোকসভা নির্বাচনের ‘ওয়ার রুম’ মুকুল রায়ের এলগিন রোডের বাড়িতে তৈরি করা নিয়ে নতুন করে বিতর্ক দানা বেঁধেছে রাজ্য বিজেপিতে। অভিযোগ, দলের একাংশ জানতই না ‘ক্যাম্প অফিস’এর কথা। শুধু তাই নয়, অনেকেরই অভিযোগ, লোকসভা নির্বাচনের আগে দলে মুকুল রায়ের উত্থান, মানুষের কাছে বিজেপির ‘বিশ্বাসযোগ্যতা’ দুর্বল করবে।
মুকুল রায়ের বিজেপিতে যোগ নিয়ে দলের একাংশ বিষয়টি ভাল চোখে দেখেনি। প্রসঙ্গত, সে অংশই এখন দলের শাসক শিবিরে। প্রশ্ন উঠেছিল, ২০১৪ সালে প্রকাশ্য সভায় যে মুকুলবাবুর নাম মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে এক বন্ধনীতে উচ্চারিত হত এবং স্লোগান উঠত ‘ভাগ মমতা, ভাগ মুকুল’, তাঁকে ‘রাজখাতিরে’ দলে নিয়ে কি দলীয় ‘ভাবমূর্তি’র সঙ্গেই আপস করা হল না? দলের একাংশের অভিযোগ, তৃণমূলের বিরুদ্ধে রাজ্য বিজেপির অন্যতম অস্ত্র ‘সারদা’, ‘নারদ’এর মতো মামলা। যার প্রতিটিতেই মুকুলবাবুর নাম আছে। ফলে তাঁকে দলে নেওয়ায় সেই অস্ত্রেও ধার কমেছে।
তবু দলের কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব মুকুলবাবুকে লোকসভা নির্বাচন কমিটির প্রধান করেছেন। রাজ্য দলের সংগঠক সুব্রত চট্টোপাধ্যায় দু’টি মামলায় ‘ফেঁসে’ গিয়ে দফতরে আসছেন না। সূত্রের খবর, সুব্রতবাবুর অনুপস্থিতি মুকুলবাবুর অবস্থান শক্ত করেছে। পুজোর আগে কেন্দ্রীয় নেতাদের উপস্থিতিতে তাঁর বাড়িতে দলের বৈঠক হয়েছে। আর পুজোর পরে ‘ওয়ার রুম’। শাসক শিবিরে অনেকে যে খবর জানতেই পারেননি। খবর পেয়ে তাঁদের কারও কারও প্রশ্ন, ‘‘আর জায়গা পাওয়া গেল না?’’
মুকুলবাবুর এই উত্থান প্রসঙ্গে দিলীপবাবুর মন্তব্য, ‘‘হিন্দিতে একটা কথা আছে, ভোলানাথ কা বরাত। নন্দী-ভৃঙ্গি সবাই থাকে সেখানে। রাজনীতিও তেমনই। নানা ভূতের সহাবস্থান। এ টুকুই বলব।’’ মুকুলবাবু অবশ্য বরাবরই তাঁর সঙ্গে দিলীপবাবুর দূরত্ব সংক্রান্ত আলোচনাকে ‘গুজব’ বলে উড়িয়ে দেন। এ বারও তাই বলেছেন। তবে ওয়ার রুম প্রসঙ্গে তাঁর মন্তব্য, ‘‘কাজ শুরু হয়ে গিয়েছে। দল যে দায়িত্ব দিয়েছে, তা-ই পালন করছি।’’
দিলীপ ঘনিষ্ঠ অনেকরই বক্তব্য, আরএসএস ঘনিষ্ঠ সুব্রতবাবু থাকলে মুকুলবাবুর এই উত্থান হত না। দিল্লির যে নেতাদের সহযোগিতায় মুকুলবাবুর এই বাড়বাড়ন্ত, সুব্রতবাবু দীর্ঘদিন তাঁদের ঠেকিয়ে রেখেছিলেন। পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে জেলায় জেলায় ঘুরে দিলীপবাবু যেহেতু সংগঠনের কাজ করছেন, ফলে দিল্লির নেতাদের একাংশ ‘ভোটের স্ট্র্যাটেজি’ সংক্রান্ত বিষয়ে মুকুলবাবুর উপরেই আস্থা রেখেছেন। তাঁকে নিয়মিত রাজ্য দফতরে যেতেও বলা হয়েছে বলে খবর।
আরও পড়ুন: পুজোয় মদ বিক্রিতে সর্বকালীন রেকর্ড রাজ্যের!
কিন্তু মুকুলবাবুর এই উত্থানে দলের লাভ হবে তো? দিলীপ ঘনিষ্ঠ এক নেতার জবাব, ‘‘স্ট্র্যাটেজি করে নির্বাচন জেতা যায় না। ভোট হয় মানুষের কাছে বিশ্বাসযোগ্যতা তৈরি করে। মুকুলবাবুর সেই বিশ্বাসযোগ্যতা নেই।’’ বিতর্কে ঘি ঢেলে মুকুল ঘনিষ্ঠ এক নেতার প্রত্যুত্তর, ‘‘ভোট কী ভাবে করতে হয়, মুকুলদা এবার শিখিয়ে দেবেন। ওরা তো ভোট করতেই জানত না!’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy