হিসেব ধরলে ৩.৬ লক্ষ কোটি টাকা!
রিজার্ভ ব্যাঙ্কের ভাঁড়ার থেকে এই বিপুল পরিমাণ অর্থই চেয়েছে নরেন্দ্র মোদী সরকার।
আর তা নিয়েই আজ মোদী সরকারকে নিশানা করলেন কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গাঁধী। তাঁর অভিযোগ, ‘‘প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর প্রতিভাধর অর্থনৈতিক তত্ত্ব গোটা অর্থনীতিতে তালগোল পাকিয়ে ফেলেছে! এ বার তা সামলাতে রিজার্ভ ব্যাঙ্কের কাছে এই বিপুল পরিমাণ অর্থ চাইছেন প্রধানমন্ত্রী মোদী।’’ রিজার্ভ ব্যাঙ্কের গভর্নর উর্জিত পটেল আগেই সরকারের এই দাবি খারিজ করে দিয়েছেন। উর্জিত পটেলকে মোদীর বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে বলে এ দিন রাহুলের মন্তব্য, ‘‘মিস্টার পটেল, আপনি রুখে দাঁড়ান। দেশকে রক্ষা করুন।’’
শুধু রাহুল নন। এই বিবাদে উর্জিত আজ পাশে পেয়েছেন রিজার্ভ ব্যাঙ্কের প্রাক্তন গভর্নর রঘুরাম রাজনকেও। তাঁর যুক্তি, ‘‘রিজার্ভ ব্যাঙ্কের যথেষ্ট পুঁজি থাকা দরকার, যাতে তার ঋণ পেতে কোনও সমস্যা না হয়।’’ একই সঙ্গে রাজন বলেছেন, রিজার্ভ ব্যাঙ্কের মুনাফা থেকে সরকারকে লভ্যাংশ (ডিভিডেন্ড) দেওয়া হয়। তার থেকে বেশি টাকা রিজার্ভ ব্যাঙ্ক দিতে
পারে না।
রিজার্ভ ব্যাঙ্কের ভাঁড়ারে এখন ৯.৫৯ লক্ষ কোটি টাকা রয়েছে। তার এক-তৃতীংশেরও বেশি অর্থ চেয়ে বসেছে অর্থ মন্ত্রক। এয়ার ইন্ডিয়ার বিলগ্নিকরণ ধাক্কা খেয়েছে। অন্য সরকারি সংস্থার বিলগ্নিকরণ করে বাড়তি আয় বা ব্যয় সঙ্কোচের থেকে রিজার্ভ ব্যাঙ্কের ভাঁড়ার থেকে টাকা নিয়ে ঘাটতি নিয়ন্ত্রণে রাখার সহজ রাস্তা নিতে চাইছে তারা।
শুধু তা-ই নয়। এখন মোদী সরকার চাইছে, রিজার্ভ ব্যাঙ্কের ভাঁড়ারে বিপদের কথা ভেবে কত টাকা সঞ্চিত থাকবে, কত টাকা সরকারের কোষাগারে পাঠানো হবে, তার নিয়ম আমূল বদলানো হোক। কিন্তু আরবিআই কর্তাদের যুক্তি, অর্থনীতির বিপদের কথা ভেবে রিজার্ভ ব্যাঙ্কের সঞ্চয়ে পুঁজি থাকা দরকার। রিজার্ভ ব্যাঙ্কের প্রাক্তন এগ্জিকিউটিভ ডিরেক্টর ভি কে শর্মার মতে, ‘‘খাতায়-কলমে রিজার্ভ ব্যাঙ্কের সঞ্চয় থেকে ২.৫ লক্ষ কোটি টাকা সরকারি কোষাগারে পাঠানো যায়। কিন্তু তা হলে রিজার্ভ ব্যাঙ্কের সম্পদের তুলনায় পুঁজির অনুপাত শূন্যে এসে ঠেকে।’’
রাহুল যে অর্থনীতির সমস্যার দিকে আঙুল তুলেছেন, সে কথা আজ মনে করিয়ে দিয়েছেন রাজনও। তাঁর যুক্তি, ‘‘কেন্দ্র ও রাজ্যের মিলিত রাজকোষ ঘাটতির পরিমাণ প্রায় ৭ শতাংশ। যা খুবই চিন্তার। বিশেষ করে যখন চালু খাতে বিদেশি মুদ্রার লেনদেনের ঘাটতি ৩ শতাংশে পৌঁছচ্ছে।’’ বিদেশি মুদ্রার লেনদেনের ঘাটতি মেটাতে মোদী সরকার বেশ কিছু ক্ষেত্রে আমদানি শুল্ক বাড়িয়েছে। রাজনের যুক্তি, ‘‘এ ভাবে এলোমেলো ভাবে শুল্ক বাড়ালে ভারতে উৎপাদন করাই সমস্যা হয়ে দাঁড়াবে। বিদেশি মুদ্রার লেনদেনের ঘাটতি কমাতে স্বল্পমেয়াদি পদক্ষেপ করে লাভ হবে না।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy