যে ২১ জুলাইকে বরাবর বামেদের বিরুদ্ধে নিশানার জন্য ব্যবহার করেছেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, সেই ২১ জুলাইকেই এ বার তৃণমূলের বিরুদ্ধে ব্যবহারের প্রস্তুতি শুরু করল কংগ্রেস। এ বার ২১ জুলাই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে চ্যালেঞ্জ জানাতে দলকে আন্দোলনে নামানোর পরিকল্পনা করেছেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী।
২১ জুলাই রাজ্য জুড়ে পুলিশের বিরুদ্ধে আন্দোলনের সূচনা করবে কংগ্রেস। ওই দিন জেলায় জেলায় পুলিশ সুপারদের দফতরের সামনে বিক্ষোভ সমাবেশ করার জন্য জেলা কংগ্রেস সভাপতিদের নির্দেশ দিয়েছেন অধীর। কলকাতাতেও পুলিশের ডিভিশনাল কমিশনারদের দফতরের সামনেও একই কর্মসূচি হবে বলে অধীর মঙ্গলবার জানিয়েছেন।
কেন এই কর্মসূচি তা জানাতে গিয়ে অধীর বলেন, ‘‘যুব কংগ্রেসের নেতৃত্বে ২৩ বছর আগে ‘মহাকরণ অভিযান’ হয়েছিল। তখন পুলিশের গুলিতে যুব কংগ্রেসের কর্মীরাই নিহত হয়েছিলেন। কিন্তু আজও দোষী পুলিশদের শাস্তি তো হয়ইনি, এমনকী, সে দিনের অভিযুক্ত পুলিশ অফিসারদের অনেককেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার মন্ত্রী করে পুরস্কৃত করেছে। আমরা সেই দোষী পুলিশের বিচারের দাবিতে এবং এখন কংগ্রেসের নেতা-কর্মীদের তৃণমূল সরকারের পুলিশ যে ভাবে মিথ্যা অভিযোগে হেনস্থা করছে তার প্রতিবাদ জানাতেই আমাদের এই কর্মসূচি।’’
১৯৯২-এর ২১ জুলাই সচিত্র পরিচয়পত্রের দাবিতে তৎকালীন যুব কংগ্রেস সভানেত্রী মমতার নেতৃত্বে ‘মহাকরণ অভিযান’ আন্দোলন হয়েছিল। ১৩ জন পুলিশের গুলিতে নিহত হয়েছিলেন। তার পর থেকে প্রতি বছর মমতার নেতৃত্বেই ২১ জুলাই ‘শহিদ দিবস’ হিসেবে পালিত হয়। কংগ্রেস ছেড়ে তৃণমূল গঠনের পরে মূলত ধর্মতলাতেই তৃণমূলের যুব সংগঠন দিনটি পালন করে। তৃণমূলের কাছে ২১ জুলাই দিনটি রাজনৈতিক ভাবে বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ। এ দিনের সমাবেশ থেকেই দলনেত্রী আগামী দিনে দলের রাজনৈতিক কর্মসূচি ঘোষণা করেন।
তৃণমূলের বিপুল সমাবেশের পাশে কংগ্রেস সেখানে থাকে খুবই নিষ্প্রভ। তবে ২০০৭-এর ২১ জুলাই ধর্মতলায় তৃণমূলের সমাবেশের পাল্টা সভা কংগ্রেস করে শহিদ মিনারে। মূলত প্রিয়রঞ্জন দাশমুন্সি এবং সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে সেই সমাবেশ হয়েছিল। তৃণমূলের সমাবেশের মতো না হলেও, কংগ্রেসের সমাবেশে ভিড় দেখে প্রিয় সে দিন বলেছিলেন, ‘‘আজ যাঁরা ধর্মতলায় সমাবেশ করছেন, আগামী বছর তাঁরা এবং আমরা একসঙ্গে এই দিনের সমাবেশ করব।’’ কিন্তু দু’টি সমাবেশের পরে দু’দলের কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে বিক্ষিপ্ত সংঘর্ষও হয়। তার পরে কংগ্রেস দিনটি পালন করে কখনও রক্তদান করে, কখনও বা জেলায় সমাবেশ করে। এ বারই তার ব্যতিক্রম ঘটাতে চান অধীর। ভাঙন-বিধ্বস্ত কংগ্রেসের এক প্রবীণ নেতার কথায়, ‘‘দলীয় কর্মীদের চাঙ্গা করার লক্ষ্যেই অধীর দলকে আন্দোলনমুখী করতে চাইছেন। আর সে জন্য এ বার রাজ্য জুড়ে ২১ জুলাই আমরা পালন করব।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy