E-Paper

দরজা খোলা রেখেই দলের জোর বাড়াতে রূপরেখা কংগ্রেসের

বাংলায় মোট বিধানসভা আসন ২৯৪। কংগ্রেসের একাংশের মতে, আসন সমঝোতার দরজা খোলা রেখেই একা লড়ার প্রস্ততি নিয়ে রাখতে চাইছে দল।

সন্দীপন চক্রবর্তী

শেষ আপডেট: ০২ মার্চ ২০২৫ ০৫:৪৯
কর্মশালায় এআইসিসি এবং প্রদেশ কংগ্রেস নেতৃত্ব। বিধান ভবনে।

কর্মশালায় এআইসিসি এবং প্রদেশ কংগ্রেস নেতৃত্ব। বিধান ভবনে। —নিজস্ব চিত্র।

রাজ্যে বিধানসভা ভোটের আগে এক বছর সময়কে হাতে রেখে রাজনৈতিক ও সাংগঠনিক রূপরেখা ধরে এগোতে চাইছে কংগ্রেস। দলের আন্দোলন ও কর্মসূচি বাড়ানোর পাশাপাশি রাজ্য জুড়ে প্রাথমিক ভাবে ৯০টি বিধানসভা আসন চিহ্নিত করে প্রস্তুতির কথা রয়েছে সেই রূপরেখায়। বাংলায় মোট বিধানসভা আসন ২৯৪। কংগ্রেসের একাংশের মতে, আসন সমঝোতার দরজা খোলা রেখেই একা লড়ার প্রস্ততি নিয়ে রাখতে চাইছে দল।

এআইসিসি-র পরামর্শ অনুযায়ী রাজ্যে রাজ্যে এখন রাজনৈতিক কর্মশালার আয়োজন করছে কংগ্রেস। প্রদেশ কংগ্রেসের সদর দফতর বিধান ভবনে শনিবার এমনই কর্মশালায় উপস্থিত ছিলেন এআইসিসি-র সাধারণ সম্পাদক ও বঙ্গের পর্যবেক্ষক গুলাম আহমেদ মীর, দুই সহ-পর্যবেক্ষক অম্বা প্রসাদ ও আসফ আলি খান। এআইসিসি-র নেত্রী দীপা দাশমুন্সি অবশ্য আসতে পারেননি। সূত্রের খবর, আগামী এক বছরে রাজ্য জুড়ে নানা আন্দোলনের কর্মসূচি নিয়ে সংগঠনকে চাঙ্গা করার বার্তা দিয়েছেন মীর। ‘জয় বাপু, জয় ভীম’ কর্মসূচি চালিয়ে যাওয়ার কথাও হয়েছে। কর্মশালায় মীর জানিয়েছেন, বাংলার কংগ্রেস কর্মী-সমর্থকদের উৎসাহ দিতে আগামী কয়েক মাসে লোকসভার বিরোধী দলনেতা রাহুল গান্ধী, দলের সর্বভারতীয় সভাপতি মল্লিকার্জুন খড়্গে, এআইসিসি-র সাধারণ সম্পাদক প্রিয়ঙ্কা গান্ধীরা রাজ্যে আসার চেষ্টা করবেন। প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি শুভঙ্কর সরকার সেখানে প্রস্তাব দিয়েছেন, রাহুল-প্রিয়ঙ্কারা রাজ্যে এলে দলীয় বৈঠকের (ইন্ডোর) চেয়ে মাঠে-ময়দানে কর্মসূচিই বেশি কার্যকর হবে।

সংগঠনকে শক্তিশালী করার বার্তার সূত্রেই বিধানসভা ভোটের প্রস্তুতির কথা বলেছেন এআইসিসি-র পর্যবেক্ষক। সূত্রের খবর, কর্মশালায় মীর বলেছেন, গত লোকসভা নির্বাচনের নিরিখে কংগ্রেস গোটা কুড়ি বিধানসভা আসনে ভাল জায়গায় আছে। তার সঙ্গে আরও ২৫টি আসন যোগ করে (অর্থাৎ ৪৫) ধাপে ধাপে তার দ্বিগুণ আসন (৯০) ধরে বিশেষ নজর দিতে হবে। সেই মতো প্রস্তুতি নিতে হবে। কংগ্রেস ওয়ার্কিং কমিটির সদস্য অধীর চৌধুরী অবশ্য তাঁর বক্তৃতায় মনে করিয়ে দিয়েছেন, যে আসনগুলিতে কংগ্রেস ভাল জায়গায় আছে, সেখানে বিগত নির্বাচনের নিরিখে বাম ভোটও মিশে আছে। দলের নেতা-কর্মীদের দায়বদ্ধ হয়ে কাজ করার অঙ্গীকার নিয়ে কর্মশালায় শপথ-বাক্যও পাঠ করিয়েছেন অধীর।

বর্তমান পরিস্থতির নিরিখে সংগঠনকে সাজানোর কথা বলেছেন প্রদেশ কংগ্রেস নেতা অমিতাভ চক্রবর্তী। দলের রূপরেখা নিয়ে প্রস্তাব দিয়েছেন প্রাক্তন প্রদেশ সভাপতি প্রদীপ ভট্টাচার্য, সাংসদ ইশা খান চৌধুরীও।

কংগ্রেসের মধ্যে একাংশের প্রশ্ন, দল যে এ বার একা চলার দিকেই বেশি নজর দিচ্ছে, সেই ইঙ্গিত স্পষ্ট। কিন্তু ৯০টি আসন নজরবন্দি করে এগোলে বাকি দু’শো আসনে দলের অবস্থান নিয়ে তো বিভ্রান্তি তৈরি হতে পারে! এই সংক্রান্ত প্রশ্নে এআইসিসি-র পর্যবেক্ষক মীর অবশ্য এ দিন বলেছেন, ‘‘জোটের বিষয়ে আমরা কোনও সিদ্ধান্ত নিইনি। আগে তো নিজেদের খাওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে, তার পরে অন্যদের সঙ্গে ভাগ করার প্রশ্ন!’’ আর প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি শুভঙ্করের বক্তব্য, ‘‘আমাদের লক্ষ্য এখন দলকে শক্তিশালী করা। বাংলায় ‘ইন্ডিয়া’ মঞ্চের শরিকেরা আছে। পরে কেউ হাত ধরতে চাইলে তখন ভেবে দেখা যাবে।’’ প্রসঙ্গত, কংগ্রেসের কর্মশালায় পেশ হওয়া ৬ পাতার ‘অ্যাজেন্ডা পেপার’-এর বিষয়বস্তু শুরুই হয়েছে বাম জমানার সমালোচনা দিয়ে।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Congress AICC

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy