Advertisement
E-Paper

রাজ্যসভাতেও বিজয়ী হল বাংলার জোট

পশ্চিমবঙ্গে ভোটের জোট রাজ্যসভাতেও সফল। রাষ্ট্রপতির বক্তৃতার ধন্যবাদ জ্ঞাপন প্রস্তাবে আজ কংগ্রেসের গুলাম নবি আজাদ সংশোধনী এনেছিলেন। সেই সংশোধনীর পক্ষে এককাট্টা হয়ে ভোট দিয়ে সরকারকে হারিয়ে দিলেন বিরোধীরা।

অগ্নি রায় ও প্রেমাংশু চৌধুরী

শেষ আপডেট: ১০ মার্চ ২০১৬ ০৩:৪০

পশ্চিমবঙ্গে ভোটের জোট রাজ্যসভাতেও সফল।

রাষ্ট্রপতির বক্তৃতার ধন্যবাদ জ্ঞাপন প্রস্তাবে আজ কংগ্রেসের গুলাম নবি আজাদ সংশোধনী এনেছিলেন। সেই সংশোধনীর পক্ষে এককাট্টা হয়ে ভোট দিয়ে সরকারকে হারিয়ে দিলেন বিরোধীরা। কিন্তু রাজ্যসভায় হাজির থেকেও ভোটদানে বিরত থাকলেন তৃণমূল সাংসদরা। তৃণমূল সাংসদ সুখেন্দুশেখর রায় বলেন, ‘‘তৃণমূল তৈরি হওয়ার পর থেকে আমরা রাষ্ট্রপতির বক্তৃতায় কোনও সংশোধনী আনিনি। এটাই আমাদের নেতৃত্বের সিদ্ধান্ত।’’

কিন্তু ইতিহাস বলছে, গত বছর সিপিএমের সীতারাম ইয়েচুরি রাষ্ট্রপতির বক্তৃতায় যে সংশোধনী এনেছিলেন, অন্য দলের পাশাপাশি তৃণমূলও তাতে ভোট দিয়ে সমর্থন করেছিল। আজ সেই তৃণমূলেরই উল্টো অবস্থান দেখে সিপিএম নেতারা বলছেন— মোদী সরকার সিবিআই তদন্তে ঢিলে দেওয়ার প্রতিদান দিচ্ছে তৃণমূল। তৃণমূল যে মোদী সরকার সম্পর্কে নরম অবস্থান নিয়ে চলেছে, সেটাই স্পষ্ট হল।

তৃণমূলকে বিজেপি-ঘনিষ্ঠ তকমা দিয়েই আজ পশ্চিমবঙ্গের মতো রাজ্যসভাতেও কংগ্রেসের সঙ্গে সমন্বয় আরও গাঢ় করে ফেলেছেন সিপিএম নেতৃত্ব। রাষ্ট্রপতির বক্তৃতায় কেন জেএনইউ-রোহিত ভেমুলার ঘটনার উল্লেখ নেই, সেই প্রশ্ন তুলে সিপিএম নিজেই সংশোধনীটি এনেছিল। কিন্তু কংগ্রেসের গুলাম নবি অনুরোধ করেন, গত বছর কংগ্রেস ইয়েচুরির সংশোধনীতে সমর্থন করেছিল। এ বার তাঁরা সংশোধনী আনুন, সিপিএম যেন তাকে সমর্থন করে।

ইয়েচুরির আপত্তি ছিল না। কিন্তু বেঁকে বসেন কেরলের সাংসদরা। যুক্তি দেন সামনেই কেরলে ভোট। তাঁরা কংগ্রেসের প্রস্তাবের পক্ষে ভোট দেবেন না। এখানেও ভেলকি দেখান ইয়েচুরি। পলিটব্যুরো ও কেন্দ্রীয় কমিটির বৈঠকে তিনি কেরল-লবির আপত্তি সত্বেও পশ্চিমবঙ্গে কংগ্রেসের সঙ্গে বোঝাপড়ার দরজা খুলে দিয়েছিলেন। আজ রাজ্যসভাতেও কংগ্রেসের পক্ষে ভোট দিতে কেরলের সাংসদদের রাজি করিয়ে ফেলেন তিনি।

গুলাম নবি আজ অভিযোগ তোলেন— বিজেপি শাসিত রাজ্যে পঞ্চায়েত ভোটের প্রার্থী হওয়ার শিক্ষাগত যোগ্যতা বেঁধে দিলে দলিতরা বঞ্চিত হবে। সেখানেই সিপিএম-সহ বাকি বিরোধীরা এককাট্টা হয়ে সরকারের বিরুদ্ধে ভোট দেন। কংগ্রেসের আহমেদ পটেল, ইএমএস নটচিয়াপ্পন, সিপিএমের ঋতব্রত মিলে বিরোধীদের মাথা গোনা শুরু করে দেন। প্রস্তাবটি সমর্থন করেন জেডি (ইউ), সপা-র সাংসদদেরও। দেখা যায় বিরোধীরাই সংখ্যাগরিষ্ঠ। তৃণমূল বিরোধীদের সমর্থন না-করায় গুলাম নবি বলেন, ‘‘এ থেকেই স্পষ্ট, কারা দলিতদের পক্ষে আর কারা বিপক্ষে।’’ জেএনইউ-কাণ্ড নিয়ে সিপিএমের ঋতব্রত বন্দ্যোপাধ্যায় আলাদা সংশোধনী প্রস্তাব আনেন। তবে ধ্বনিভোটের পর তাতে আর ভোটাভুটি চাওয়া হয়নি।

তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্যসভার নেতা ডেরেক ও’ব্রায়েন বলেন, ‘‘আমরা কোনও সংশোধনী আনিনি। তাই ভোটও দেওয়া হয়নি।’’ তা হলে গত বছর কী হয়েছিল? ডেরেক জানান, ‘‘গত বারও আমরা সংশোধনী আনিনি। বিরোধীদের সঙ্গে আমাদের বোধ হয় তিন-চার জন সমর্থন করেছিল।’’ তৃণমূলের এক নেতাই বলছেন— কংগ্রেস ও সিপিএমের জোট কার্যত ঘোষণা হয়ে যাওয়ার পর তৃণমূল আর তৃতীয় শত্রু তৈরি করতে চায় না। এই মুহূর্তে তৃণমূলের কাছে সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্রীয় বাহিনী ও সিবিআই। সেই কারণেই মোদীকে চটাতে নারাজ নেতৃত্ব।

প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরীর কটাক্ষ, ‘‘পদ্ম আর জোড়াফুল, দিদি মোদীতে মশগুল।’’

alliance cpm congress MostReadStories
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy