Advertisement
E-Paper

তুষারকান্তি তৃণমূল হতে চেয়েছেন

একুশের সমাবেশ পরশু। তার আগেই সোমবার সাংবাদিক বৈঠক ডেকে তৃণমূল হতে চাইলেন তুষারকান্তি ভট্টাচার্য! বিষ্ণুপুরের কংগ্রেস বিধায়ক তিনি। দু’মাসও হয়নি তৃণমূল নেতা তথা প্রাক্তন বস্ত্রমন্ত্রী শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়কে পরাস্ত করেছিলেন এলাকায় কংগ্রেস-সিপিএম সমঝোতার মুখ হয়ে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৯ জুলাই ২০১৬ ০৪:১৭
তুষারকান্তি ভট্টাচার্য

তুষারকান্তি ভট্টাচার্য

একুশের সমাবেশ পরশু। তার আগেই সোমবার সাংবাদিক বৈঠক ডেকে তৃণমূল হতে চাইলেন তুষারকান্তি ভট্টাচার্য! বিষ্ণুপুরের কংগ্রেস বিধায়ক তিনি। দু’মাসও হয়নি তৃণমূল নেতা তথা প্রাক্তন বস্ত্রমন্ত্রী শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়কে পরাস্ত করেছিলেন এলাকায় কংগ্রেস-সিপিএম সমঝোতার মুখ হয়ে। কিন্তু এ দিন জানালেন, ‘‘বাম-কংগ্রেসের আঁতাঁত মানুষ মেনে নেয়নি। আমি জিতেছি জনগণের ভোটে। দিদি ভালো কাজ করছেন। তাই ওঁর উন্নয়ন-কাজের সঙ্গে জুড়তে চাই।’’

বস্তুত তুষারবাবুর দল বদলের সম্ভাবনা নিয়ে দিন দশেক ধরেই জল্পনা চলছিল রাজ্য রাজনীতিতে। তা বেশিদিন জিইয়ে না রেখে তিনি নিজেই এ দিন জানিয়ে দেন, ‘‘২১ জুলাই কলকাতায় থাকব। দিদি ডাকলে ওই দিনই তৃণমূলে যোগ দেব।’’

এখন প্রশ্ন, তৃণমূল তাঁকে নেবে কি?

তাৎপর্যপূর্ণ হল, শাসক দলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়, রাজ্য কমিটির চেয়ারম্যান সুব্রত বক্সী বা দলের সর্বভারতীয় সহসভাপতি মুকুল রায় কেউই এ দিন পষ্টাপষ্টি জবাব দেননি! উল্টে সুব্রতবাবু বলেন, ‘‘উনি ওঁর কথা বলেছেন। আমি কিন্তু ওঁকে ডাকছি না। আর ওঁকে নিয়ে দলে আলোচনাও হয়নি।’’ পার্থবাবুরও বক্তব্য, ‘‘তৃণমূলে যোগ দেওয়ার জন্য এমন কোনও আবেদন পাইনি।’’

শাসক দলের তরফে এমন মন্তব্য বিস্ময়ের বই কি! কারণ, বিরোধী শিবির থেকে নেতা-বিধায়ক ভাঙিয়ে নিয়ে আসা গত কয়েক বছরে একুশের মঞ্চে দস্তুর হয়ে গিয়েছিল। কোনও বছর সাবিত্রী মিত্র-কৃষ্ণেন্দুনারায়ণ চৌধুরীরা তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন তো কোনও বার ছায়া দলুই বা বুলু চিক বরাইকের মতো সিপিএম বিধায়কের হঠাৎ উদয় হয়েছে। এবং প্রতিবারই এ ব্যাপারে শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত একটা গোপনীয়তা রাখা হয়েছে। সে দিক থেকে তুষারকান্তির এ দিনের সাংবাদিক বৈঠক এবং তৃণমূলের প্রতিক্রিয়া দুটোই অন্য রকম!

শাসক দলের একটি সূত্র অবশ্য দাবি করছে, আসলে অন্য দল থেকে দুম করে বিধায়ক ভাঙিয়ে আনার ব্যাপারে এ বার দিদির আগ্রহ খুব একটা নেই। দুলাল বর, শম্পা দরিপা বা বিশ্বনাথ পারিয়ালের মতো যে নেতারা দল ছেড়ে কংগ্রেসের টিকিটে এ বার জিতেছেন, তাঁদের ফেরানোর ব্যাপারেও উৎসাহ কম। বরং দিদির মনোভাব হল, যাঁরা গেছেন যাক। একাই দু’শো পেরনোর পর বরং ঘর গুছনোর দিকেই বেশি মন দিতে চাইছেন দিদি। কারণ তিনি মনে করছেন, যাঁরা চলে গিয়েছিলেন, তাঁরা সুবিধাবাদের রাজনীতির জন্য চলে গিয়েছিলেন। এবং অন্য দল থেকে এখন যাঁরা আসতে চাইছেন তাঁরাও সুবিধাবাদী রাজনীতির জন্যই চাইছেন। এঁদের দলে নিলে তৃণমূলের সাংগঠনিক শক্তিতে ফারাক কিছু হবে না। তাই আগুপিছু না-ভেবে কাউকে দলে না-টেনে, সময় নিয়ে বিবেচনা করে তবেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হোক। আবার দলের এক উপরের সারির নেতা বলেন, অন্য দলের কেউ যদি তৃণমূলে আসতে চান তাঁকে তাঁর পুরনো দল তো ছাড়তে হবেই, সেই সঙ্গে তিনি যদি সাংসদ, বিধায়ক বা কাউন্সিলর হন তবে তা থেকেও ইস্তফা দিকে হবে। তৃণমূলে যোগ দেওয়ার পর পুনরায় ভোটে দাঁড়াতে হবে।

রাজনৈতিক সূত্রের মতে, শাসক দলের উপরতলার কিছু নেতার সঙ্গে তুষারবাবুর আলোচনা যে চলছিল, তাতে সন্দেহ নেই। ধীরেসুস্থে তাঁকে দলে নেওয়াও হবে। কিন্তু তৃণমূল ব্যাপারটা নিয়ে তাড়াহুড়ো না করায় হয়তো তুষারবাবু অসহিষ্ণু হয়ে পড়েছেন। প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী স্বাভাবিক ভাবেই এ দিন তুষারকান্তিকে তীব্র ভর্ৎসনা করেন। তিনি বলেন, ‘‘তুষারবাবু যদি নিজেকে বাজারের আলু-পটল মনে করেন, কিছু বলার নেই। উনি যেন ইস্তফা দিয়ে তৃণমূলের প্রতীকে ভোটে লড়েন।’’ তাঁর কথায়, ‘‘প্রতি বছরই ২১ জুলাইটা কংগ্রেস-নিধন দিবস হিসেবে পালন করেন দিদিমণি। এ বারও নিশ্চয়ই টাকার থলি নিয়ে নেমেছেন।’’ বিধায়ক পদ থেকে ইস্তফা না দিয়ে তৃণমূলে যোগ দিলে তুষারবাবুর বিরুদ্ধে মামলার হুমকিও দিয়ে রেখেছেন বিরোধী দলনেতা আবদুল মান্নান।

MLA TMC Congress
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy