কংগ্রেস ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দেওয়া বিধায়কদের বিধানসভার সদস্যপদ খারিজের বিষয়টি নিয়ে দীর্ঘসূত্রিতাকে কেন্দ্র করে এ বার স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে এক প্রকার সংঘাতে নামলেন আব্দুল মান্নানরা। এ ব্যাপারে হাইকোর্টে মামলা দায়ের করল কংগ্রেস। রাজ্যে প্রধান বিরোধী দলের ওই মামলা উচ্চ আদালত শুধু গ্রহণই করেনি, এ ব্যাপারে স্পিকারকে নোটিস পাঠিয়েছে। শুক্রবার শুনানি।
অতীতে বাম আমলে বিধানসভার স্পিকারের বিরুদ্ধে এ ধরনের মামলা কখনও হয়নি। তৃণমূল জমানাতেও এ ধরনের মামলা সম্ভবত এই প্রথম দায়ের হল আদালতে।
বিমানবাবু জানান, আদালতের নোটিস পেলেও বিচলিত নন। আইনি দিক থেকে তাঁর কী পদক্ষেপ করা উচিত, তা নিয়ে রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেলের সঙ্গে কথা বলবেন। তাঁর কথায়, ‘‘দলত্যাগ বিরোধী আইনে সাংসদ বা বিধায়কের পদ বাতিল হতে সময় লাগে। সেই সময়সীমা মেনেই কাজ করছি। বিরোধী দলনেতা আরও দ্রুত শুনানি চেয়ে আবেদন করেছেন। দেখি আদালত কী বলে!’’
বিধানসভা ভোটের পর সবার আগে কংগ্রেস ছেড়েছেন বিষ্ণপুরের বিধায়ক তুষার ভট্টাচার্য। ২১ জুলাই তৃণমূলের শহীদ দিবসের মঞ্চে শাসক দলে যোগ দেন। তার পরই তাঁকে চিঠি পাঠিয়ে বিরোধী দলনেতা মান্নান জানতে চান, তিনি দলত্যাগ করেছেন কি না। তুষার জানান, তিনি কংগ্রেসেই রয়েছেন। এর পর বিভিন্ন সংবাদপত্রে প্রকাশিত খবর সংগ্রহ করে স্পিকারের কাছে চিঠি দিয়ে মান্নান বলেন, তুষার ভট্টাচার্যের বিধায়ক পদ খারিজ করা হোক। এই পরিস্থিতিতে স্পিকার তুষারবাবুর মতামত জানতে চাইলেও সংশ্লিষ্ট বিধায়ক দীর্ঘ সময় চেয়েছেন। স্পিকারও তাঁকে জবাব দেওয়ার জন্য ২২ ডিসেম্বর পর্যন্ত সময় দিয়েছেন। ততদিনে বিধানসভার শীতকালীন অধিবেশন শেষ হয়ে যাবে। এতেই আপত্তি বিরোধী দলনেতার। মঙ্গলবার তিনি বলেন, ‘‘তুষারবাবু নতুন করে ভোটে লড়তে চান না। অহেতুক সময় চাইছেন। স্পিকারও তাঁকে সময় দিচ্ছেন। দ্রুত শুনানি চেয়ে আমরা আদালতের দ্বারস্থ হয়েছি।’’
অতীতে বাম আমলে বর্তমান বিধায়ক সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে দলত্যাগ বিরোধী আইনে বিধায়ক পদ খারিজের আবেদন করেছিল তৃণমূল। কিন্তু তৎকালীন স্পিকার হাসিম আব্দুল হালিমও দীর্ঘ সময় নিয়েছিলেন। তৃণমূলের একটি সূত্রের মতে, আদালতের শুনানিতে পুরনো এই সব দৃষ্টান্তও হাতিয়ার করতে পারে তারা।