প্রদেশ কংগ্রেসের দলীয় সমাবেশ।—নিজস্ব চিত্র
লোকসভা ভোটের বিপর্যয়ের পর থেকে নানা প্রশ্নে এক সুরেই সরব হচ্ছে বাম ও কংগ্রেস। এ বার দলীয় সমাবেশ থেকে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি সরাসরি ঘোষণা করলেন, পুজোর পরে অভিন্ন কর্মসূচি নিয়ে বামেদের সঙ্গে তাঁরা আন্দোলনের পথে যাবেন। প্রদেশ সভাপতি সোমেন মিত্রের ঘোষণাকে স্বাগত জানিয়েছেন বাম নেতৃত্বও। দু’পক্ষেরই বক্তব্য, বিজেপির বিকল্প তৃণমূল এবং তৃণমূলের বিকল্প বিজেপি— এই মেরুকরণের ভাবনা থেকে বেরিয়ে তারা রাজ্যের মানুষকে আলাদা বিকল্প দিতে চায়।
কেন্দ্রীয় ও রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে একগুচ্ছ প্রতিবাদের বিষয়কে সামনে রেখে বৃহস্পতিবার রানি রাসমণি অ্যাভিনিউয়ে সমাবেশ করে প্রদেশ কংগ্রেস। প্রবল বৃষ্টির মধ্যেও সমাবেশে ভিড় হয়েছিল ভালই। ওই মঞ্চেই প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি সোমেনবাবু বলেন, ‘‘বিজেপি আর তৃণমূল পরস্পরের বিকল্প নয়। কিন্তু রাজ্যের যা পরিস্থিতি, কংগ্রেস একা লড়তে পারবে না। বামফ্রন্টের সঙ্গে নির্দিষ্ট কর্মসূচির ভিত্তিতে গণ-আন্দোলনে নামতে হবে। বামফ্রন্টের নেতৃত্বের সঙ্গে আমাদের দলের সর্ব স্তরের নেতাদের কথা হচ্ছে। পুজোর পরে অভিন্ন কর্মসূচি নিয়ে বামেদের সঙ্গে যৌথ ভাবে পথে নামব।’’ রাজ্যের তিনটি বিধানসভা কেন্দ্রের উপনির্বাচনে কংগ্রেস ও সিপিএম আসন সমঝোতা চূড়ান্ত করেছে। পুরভোটে জোট নিয়েও আলোচনা চলছে। এরই পাশাপাশি সোমেনবাবু যৌথ আন্দোলনের কর্মসূচি ঘোষণা করে দিলেন।
কয়েক দিন আগে বিধানসভায় ‘মুখ্যমন্ত্রীকে বলছি’ শীর্ষক বই উদ্বোধন করতে গিয়ে সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্র বলেছিলেন, বিধানসভার ভিতরের যৌথ লড়াইকে বাইরেও নিয়ে যেতে হবে। কংগ্রেস নেতৃত্বের এ দিনের ঘোষণার সঙ্গে সহমত পোষণ করে সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সুজন চক্রবর্তী বলেছেন, ‘‘বিজেপি এবং তৃণমূলকে রুখতে অভিন্ন কর্মসূচি নিয়েই এখন একসঙ্গে এগোতে হবে। গণতান্ত্রিক, ধর্মনিরপেক্ষ শক্তির ঐক্য দরকার।’’ দলের পলিটব্যুরো সদস্য মহম্মদ সেলিমেরও বক্তব্য, যৌথ আন্দোলনের প্রশ্নে নীতিগত সহমত হয়েই আছে। কোথায়, কী ভাবে আন্দোলন, দু’পক্ষ কথা বলেই তা চূড়ান্ত করবে।
সকাল থেকে বিপুল বৃষ্টিতে এ দিনের সমাবেশ করা নিয়ে উৎকণ্ঠায় ছিলেন কংগ্রেস নেতৃত্ব। দলের নেতা অমিতাভ চক্রবর্তীর কথায়, ‘‘বৃষ্টির জন্য শিয়ালদহে পৌঁছেও অনেকে সমাবেশে আসতে পারেননি। তবু তার মধ্যেও যত কর্মী-সমর্থকেরা এসেছেন, তা যথেষ্টই আশাব্যঞ্জক।’’ বিরোধী দলনেতা আব্দুল মান্নান সমাবেশে বলেন, ‘‘তৃণমূলের স্বেচ্ছাচারের বিকল্প কখনওই বিজেপি নয়। বাম, গণতান্ত্রিক ঐক্যবদ্ধ শক্তিই বিকল্প।’’ আর্থিক মন্দা নিয়ে সরব হন সব বক্তাই। প্রদেশ কংগ্রেসের সমন্বয় কমিটির চেয়ারম্যান প্রদীপ ভট্টাচার্যের হুঁশিয়ারি, ‘‘রাজ্যে অল্প ভোট পেয়েছে বলে কংগ্রেস মুছে যায়নি। জাতীয় নাগরিকপঞ্জি (এনআরসি) বা নাগরিকত্ব আইনের সংশোধন আমরা হতে দেব না।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy