বিরোধিতা হলে ফের পুলিশ দিয়ে গ্রেফতার করানোর হুমকি নেতার মুখে। বীরভূম জেলা তৃণমূল সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলের পরে, এ বার প্রায় একই ধরনের ‘হুঁশিয়ারি’ দিতে শোনা গেল পূর্ব বর্ধমানের তৃণমূল ছাত্র পরিষদ সভাপতি মহম্মদ সাদ্দামকে। ‘সোশ্যাল মিডিয়া’য় এমন এক ভিডিয়ো ছড়িয়ে পড়ায় তৈরি হয়েছে বিতর্ক।
ভিডিয়োয় সাদ্দামকে বলতে শোনা গিয়েছে, ‘‘জেলা তৃণমূল ছাত্র পরিষদ ঘোষিত শাখার বিপক্ষে গিয়ে, বা বাদ দিয়ে কেউ যদি তৃণমূল ছাত্র পরিষদ করার কথা ভাবেন, তাঁদের খুব কড়া ভাষায় বলছি, দরকার পড়লে, যদি কোনও বিশৃঙ্খলা তৈরি হয় তাঁদের পুলিশ দিয়ে গ্রেফতার করিয়ে দেব।’’ রবিবার মেমারি কলেজের পাশে স্টেডিয়ামে টিএমসিপি আয়োজিত এক রক্তদান শিবিরে তিনি এই মন্তব্য করেন বলে অভিযোগ।
মাস কয়েক আগে অনুব্রত মণ্ডলের বিরুদ্ধে দলেরই এক নেত্রীকে পুলিশ দিয়ে গাঁজার মামলায় গ্রেফতার করানোর হুমকি দেওয়ার অভিযোগ উঠেছিল। সাদ্দামের ভিডিয়ো প্রকাশ্যে আসতে ‘পুলিশ দিয়ে শায়েস্তা করার তৃণমূল নীতি’র সমালোচনা করে জেলা বিজেপির এক ছাত্রনেতা শুভ্র চট্টোপাধ্যায়ের প্রতিক্রিয়া, ‘‘পুলিশ যে দলদাসে পরিণত হয়েছে, বোঝা যাচ্ছে।’’ এসএফআইয়ের জেলা সম্পাদক অনির্বাণ রায়চৌধুরীরও অভিযোগ, “গণতন্ত্র ও স্বাধিকার রোধ করে পুলিশকে দিয়ে দমন করার নীতি নিয়েছে তৃণমূলের সরকার।’’
ভিডিয়োয় আরও শোনা গিয়েছে সাদ্দাম বলছেন, ‘‘কলেজের অধ্যক্ষের সঙ্গে দেখা করব। তাঁকে বলব, টিএমসিপির এই ছেলেদের নিয়েই আপনাকে কাজ করতে হবে।’’ ঘটনাস্থলে ছিলেন মেমারির উপপুরপ্রধান সুপ্রিয় সামন্ত। তাঁর দাবি, ‘‘মন্তব্যের ভুল ব্যাখ্যা করা হচ্ছে।’’ সাদ্দামের সঙ্গে বুধবার সারাদিন যোগাযোগ করা যায়নি। ‘মেসেজ’ বা ‘হোয়াটসঅ্যাপ’-এর জবাব রাত পর্যন্ত দেননি তিনি।
‘আনন্দবাজার পত্রিকা’র পক্ষে ভিডিয়োর সত্যাসত্য যাচাই করা সম্ভব হয়নি। তবে টিএমসিপি-র রাজ্য সভাপতি তৃণাঙ্কুর ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘ভিডিয়োটি দেখেছি। কী কারণে, কোন পরিস্থিতিতে ওই কথাগুলি বলা হল, তা খোঁজ নেব।’’ তৃণমূলের জেলা সভাপতি তথা মন্ত্রী স্বপন দেবনাথও জানান, ওই ছাত্রনেতাকে ডেকে বিষয়টি জানতে চাওয়া হবে। জেলা পুলিশের এক কর্তার দাবি, ‘‘নেতারা বললেই কাউকে গ্রেফতার করা হয় না।’’