প্রতীকী ছবি।
বিজেপি সাংসদ লকেট চট্টোপাধ্যায় দিন কয়েক আগে লোকসভার জিরো আওয়ারে অভিযোগ করেছিলেন— পশ্চিমবঙ্গে তৃণমূল কর্মীরা কাটমানি নেওয়ায় রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় বিস্ফোরক পরিস্থিতির সৃষ্টি হচ্ছে। তার পরিপ্রেক্ষিতে রাজ্যের মুখ্যসচিবের কাছে কাটমানি নিয়ে রিপোর্ট চাইল কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক। আর তা নিয়েই শুরু হয়েছে বিতর্ক। রাজ্যের শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেসের অভিযোগ, সংবিধান অনুসারে আইন শৃঙ্খলা একান্তই রাজ্যের বিষয়। নিজেদের সাংসদকে দিয়ে রাজ্যের অধিকারের বিষয় নিয়ে মামুলি অভিযোগ তুলিয়ে, তাকে হাতিয়ার করে সে বিষয়ে হস্তক্ষেপ করতে চাইছে অমিত শাহের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক। কেন্দ্রের এই রিপোর্ট চাওয়া অবাঞ্ছিত এবং দুরভিসন্ধিমূলক।
জুলাইয়ের ৯ তারিখের যে চিঠিটি মুখ্যসচিবের দফতরে পৌঁছেছে, তাতেও স্বীকার করে নেওয়া হয়েছে যে পুলিশ ও আইন শৃঙ্খলার বিষয়টি রাজ্যের এক্তিয়ারের অধীন। কিন্তু সাংসদ লকেট চট্টোপাধ্যায় জিরো আওয়ারে বিষয়টি উত্থাপন করায় সংসদ বিষয়ক মন্ত্রক স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের কাছে এ বিষয়ে জানতে চেয়েছে। এই কারণেই রাজ্যের মুখ্যসচিবের কাছে থেকে কাটমানির ঘটনার বিষয়ে রিপোর্ট তলব করা হচ্ছে। তৃণমূল নেতৃত্ব বলছেন, অমিত শাহের মন্ত্রকের এই ঘুরিয়ে রিপোর্ট তলব নজিরবিহীন। সংসদীয় আইন মেনেই আগামী সপ্তাহে এই চিঠির জবাব দেওয়া হবে।
দিল্লিতে তৃণমূলের সংসদীয় দলের এক সদস্য বলেন, লোকসভার অধিবেশন শুরুর পর থেকেই কখনও কাটমানি, কখনও রাজনৈতিক সংঘর্ষের মতো একান্ত রাজ্যের এক্তিয়ারাধীন বিষয় উত্থাপন করেছেন বিজেপির সদস্যরা। তৃণমূলের দলনেতা সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় বিষয়টি স্পিকার ওম বিড়লার দৃষ্টি আকর্ষণ করলে, তিনি নির্দেশ দেন— লোকসভাকে কোনও রাজ্যের বিধানসভায় পরিণত করবেন না। এখন দেখা যাচ্ছে, দুরভিসন্ধি নিয়েই দলের সদস্যদের দিয়ে এই বিষয়গুলি উত্থাপন করিয়েছেন অমিত শাহ। তাঁর উদ্দেশ্য রাজ্যের বিষয়ে হস্তক্ষেপ করা। কোনও যুক্তিতেই কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক মুখ্যসচিবের কাছে থেকে এমন বিষয় নিয়ে রিপোর্ট চাইতে পারে না, যা কেন্দ্রের এক্তিয়ারই নেই।
তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়ও বলেন, ‘‘এই রিপোর্ট তলবের পিছনে যে দুরভিসন্ধি রয়েছে, তা স্পষ্ট। কোনও নির্দিষ্ট ঘটনার কথা চিঠিতে উল্লেখ করা হয়নি। মুখ্যমন্ত্রীই প্রথম কাটমানির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার ঘোষণা করেছেন। কোনও বিষয়েই রাজ্যে হালে পানি না পেয়ে বিজেপি খড়কুটো ধরে বাঁচতে চেষ্টা করছে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের এই রিপোর্ট তলব নজিরবিহীন ও সংসদীয় রাজনীতির নিরিখে অবাঞ্ছিত।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy