Advertisement
E-Paper

বদল সত্ত্বেও শিক্ষক-বিধি ঘিরে বিতর্ক

জোরদার বিতর্কের মুখে রাজ্য সরকার স্কুলশিক্ষক ও শিক্ষাকর্মীদের আচরণবিধিতে কিছু পরিবর্তন ঘটিয়েছে। কিন্তু শিক্ষক শিবিরের বক্তব্য, কিছু বিষয় বদলানো হলেও কিছু বিতর্কিত অংশ রয়ে গিয়েছে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৪ মার্চ ২০১৮ ০৩:২৬

জোরদার বিতর্কের মুখে রাজ্য সরকার স্কুলশিক্ষক ও শিক্ষাকর্মীদের আচরণবিধিতে কিছু পরিবর্তন ঘটিয়েছে। কিন্তু শিক্ষক শিবিরের বক্তব্য, কিছু বিষয় বদলানো হলেও কিছু বিতর্কিত অংশ রয়ে গিয়েছে।

স্কুলশিক্ষা দফতর সম্প্রতি ‘ওয়েস্টবেঙ্গল বোর্ড অব সেকেন্ডারি এডুকেশন (অ্যাপয়েন্টমেন্ট, কনফার্মেশন, কন্ডাক্ট অ্যান্ড ডিসিপ্লিন অব টিচার্স অ্যান্ড নন-টিচিং স্টাফ) রুলস ২০১৭’ নামে খসড়ার গেজেট-বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছিল। কিন্তু সেই আচরণবিধির কিছু অংশ নিয়ে প্রবল বিতর্ক শুরু হয়ে যায়। শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় নভেম্বরে জানান, খসড়া সংশোধন করা হবে। সেই স‌ংশোধনের কাজ শেষ হয়েছে বলে স্কুলশিক্ষা দফতর সূত্রের খবর।

আগের খসড়া আচরণবিধির দু’টি ধারায় বলা হয়েছিল, প্রতি বছর সব শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মীকে নিজের সম্পত্তির হিসেব সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে দাখিল করতে হবে। কোনও সামাজিক অনুষ্ঠানে হাজির থাকতে গেলে পর্ষদের আগাম অনুমতি নিতে হবে স্কুলের শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মীদের। এই নিয়ে বিতর্ক চরমে ওঠে। শিক্ষামন্ত্রী তখন জানিয়ে দেন, সামাজিক অনুষ্ঠানে হাজিরার ক্ষেত্রে আগাম অনুমতি সংক্রান্ত অংশটি বাতিল করা হবে। সেই অনুযায়ী খসড়া থেকে সংশ্লিষ্ট অংশটি বাদ পড়েছে। কিন্তু ফি-বছর সব শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মীকে নিজের সম্পত্তির হিসেব দাখিলের ধারা নতুন খসড়াতেও রাখা হয়েছে। শিক্ষামন্ত্রী জানান, ২০০৪ সালের বিধির সঙ্গে এই ধারা নতুন যোগ করা হয়েছে। এটা থাকছেই। ফলে এই বিষয়ে বিতর্ক মিটছে না।

খসড়া আচরণবিধির ২২ নম্বর ধারায় বলা হয়েছিল, কারও বিরুদ্ধে স্কুলশিক্ষক ও শিক্ষাকর্মীদের কোনও অভিযোগ থাকলে তাঁরা সরাসরি আদালতে যেতে পারবেন না। প্রথমে সংশ্লিষ্ট শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি জানাতে হবে। একমাত্র তখনই সরাসরি আদালতে যাওয়া যাবে, যখন অভিযোগকারী শিক্ষক বা শিক্ষাকর্মীর স্বাধীনতা ক্ষুণ্ণ হবে বা তাঁর জীবনসংশয়ের মতো গুরুতর সমস্যা দেখা দেবে।

শিক্ষামন্ত্রী জানিয়েছিলেন, এই ধারায় ইংরেজির ভুল রয়েছে। ভাষায় কিছু পরিবর্তন করতে হবে। ঠিক বয়ানটা হবে, কেউ আদালতের দ্বারস্থ হতে চাইলে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে জানিয়ে যেতে হবে। নতুন বিধিতে সেই সংশোধিত ধারাই রাখা হয়েছে। ওই বিধিতে বলা হয়েছে, বই লিখতে গেলে পর্ষদের বদলে স্কুলের পরিচালন সমিতির অনুমতি নিতে হবে। কিন্তু শিক্ষকেরা কোনও রকম নোটবই লিখতে পারবেন না।

পুরনো খসড়া গেজেট বিজ্ঞপ্তিতে শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মীদের নিয়োগপত্র দেওয়া এবং তাঁদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার মতো গুরুত্বপূর্ণ দু’টি অধিকারই স্কুলের পরিচালন সমিতির হাত থেকে কেড়ে নিয়ে তা দেওয়া হয়েছে মধ্যশিক্ষা পর্ষদকে। তাই এ ক্ষেত্রে পরিচালন সমিতির কাছে নয়, সংশ্লিষ্ট শিক্ষক অথবা শিক্ষাকর্মীকে অনুমতি নিতে হবে পর্ষদের কাছ থেকে। এই ধারাটি নতুন খসড়াতেও রয়েছে।

পুরনো খসড়ায় বলা হয়েছিল, চাকরির দু’বছরের মধ্যে পুলিশের কাছ থেকে শংসাপত্র ও শারীরিক সক্ষমতার ছাড়পত্র সংগ্রহ করে তা পর্ষদে জমা দিতে হবে। নতুন খসড়ায় বলা হয়েছে, চাকরিতে যোগদানের আগেই এগুলো জমা দিতে হবে।

‘‘সব শিক্ষকের পক্ষেই পুলিশ ভেরিফিকেশন খুবই অসম্মানজনক। প্রস্তাবিত সেই নিয়ম নতুন খসড়াতেও রাখা হল। এটা কাম্য নয়,’’ শুক্রবার বলেন এবিটিএ-র সাধারণ সম্পাদক কৃষ্ণপ্রসন্ন ভট্টাচার্য। বঙ্গীয় শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী সমিতির সহ-সাধারণ সম্পাদক স্বপন মণ্ডল বলেন, ‘‘শিক্ষক-শিক্ষিকাদের দাবি অনুযায়ী আচরণবিধিতে কিছু বদল ঘটানো হলেও আপত্তিকর কিছু বিষয় রয়ে গিয়েছে। আমাদের সঙ্গে সরকারের আলোচনার প্রয়োজন ছিল।’’

Rule School Teachers WBBSE West Bengal board of secondary education Partha Chatterjee
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy