Advertisement
E-Paper

স্কুলে চক-ডাস্টার বিদায়ের তোড়জোড় ঘিরে বিতর্ক

প্রশ্ন ও বিতর্কের মূলে আছে কিছু কিছু বেসরকারি স্কুলের আদলে ল্যাপটপ, প্রজেক্টর, স্ক্রিনের সাহায্যে সরকারি, সরকার পোষিত সরকারি সাহায্যপ্রাপ্ত স্কুলের ক্লাসরুমকেও ‘স্মার্ট’ করে তোলার নতুন উদ্যোগ।

সুপ্রিয় তরফদার

শেষ আপডেট: ০৩ সেপ্টেম্বর ২০১৭ ০২:৫১

পরিবর্তন ও প্রযুক্তি নিশ্চয়ই স্বাগত। কিন্তু চক, ডাস্টার, ব্ল্যাকবোর্ড ‘গুড বাই’ বলার সময় কি এসেছে? বিশেষ করে সরকারি, সরকার পোষিত এবং সরকারি সাহায্যপ্রাপ্ত স্কুলে? বিতর্ক শুরু হয়েছে শিক্ষা শিবিরে।

প্রশ্ন ও বিতর্কের মূলে আছে কিছু কিছু বেসরকারি স্কুলের আদলে ল্যাপটপ, প্রজেক্টর, স্ক্রিনের সাহায্যে সরকারি, সরকার পোষিত সরকারি সাহায্যপ্রাপ্ত স্কুলের ক্লাসরুমকেও ‘স্মার্ট’ করে তোলার নতুন উদ্যোগ।

উচ্চ প্রাথমিক (পঞ্চম থেকে অষ্টম শ্রেণি) স্তরের ক্লাসরুমকে স্মার্ট করতে উদ্যোগী হয়েছে সর্বশিক্ষা মিশন। স্কুলশিক্ষা দফতর সূত্রের খবর, আগামী শিক্ষাবর্ষ থেকেই কলকাতার ২০টি এবং রাজ্যের প্রতিটি জেলার একটি করে স্কুলে পরীক্ষামূলক ভাবে চালু হবে এই ‘স্মার্ট ক্লাস’। অক্টোবরের মধ্যে এই ধরনের প্রতিটি স্কুলকে দু’লক্ষ টাকা দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। পরে অন্যান্য শ্রেণিতেও এই স্মার্ট পদক্ষেপ করার পরিকল্পনা রয়েছে, জানান স্কুলশিক্ষা দফতরের এক কর্তা।

ওই কর্তা জানান, বদলে যেতে থাকা সময়ের সঙ্গে তাল মিলিয়েই বিজ্ঞানসম্মত ভাবে এই পরিবর্তন করা হচ্ছে। এর পরে রাজ্যের সব স্কুলেই চক, ডাস্টার ও ব্ল্যাকবোর্ডের ব্যবহার বন্ধ হবে। কিন্তু অর্থাভাবে একবারে তা করা যাচ্ছে না। দফতরের কর্তা জানাচ্ছেন, সাধারণত শিক্ষকেরা যে-ভাবে বই দেখে পড়ান, সেই ভাবেই পড়াবেন। কিন্তু তার আগে থেকে ল্যাপটপে কিছু তথ্য ডাউনলোড করে রাখবেন তাঁরা। প্রয়োজন অনুযায়ী ল্যাপটপ থেকে প্রজেক্টরের মাধ্যমে পর্দায় সেই তথ্য ফুটিয়ে তুলতে হবে। অর্থাৎ ব্ল্যাকবোর্ডের কাজ করবে পর্দা।

সর্বশিক্ষা মিশন সূত্রের খবর, পঠনপাঠনকে আরও বেশি মনোগ্রাহী করে তুলতে এই পদক্ষেপ হচ্ছে। মনোবিদদের সঙ্গেও পরামর্শ করা হয়েছে। পাঠ্যপুস্তকের বাইরে থেকেও বিভিন্ন তথ্য সংগ্রহ করার জন্য এই পরিবর্তন কাজে আসবে বলে মনে করছে সরকার। কলকাতার কিছু স্কুলের কয়েকটি ক্লাসে এই ব্যবস্থা আংশিক চালু হয়েছে। সর্বশিক্ষা মিশনের এক শীর্ষ কর্তা বলেন, ‘‘উন্নত মানের এই ধরনের ক্লাসরুম পাঠনপাঠনের পুরো চরিত্রটাই বদলে দেবে। পড়ুয়ারা এতে অনেক সমৃদ্ধ হবে বলেই মনে করি।’’

তা হলে প্রশ্ন বা বিতর্ক কেন?

শিক্ষা মহলের একাংশের বক্তব্য, চক-ডাস্টারকে বিদায় দেওয়ার সময় এখনও আসেনি। প্রথমত, যে-রাজ্যে অনেক স্কুলের মাথায় স্থায়ী ছাদ নেই, যে-রাজ্যে বহু স্কুলের ক্লাস করতে হয় গাছতলায়, সেখানে স্মার্ট ক্লাসরুম করে আদৌ পঠনপাঠনকে মনোগ্রাহী করা যাবে না। দ্বিতীয়ত, চক-ডাস্টার-ব্ল্যাকবোর্ডের সঙ্গে পড়ুয়াদের যে-আত্মিক, যে-শারীরিক ও মানসিক যোগ থাকে, প্রজেক্টরের সঙ্গে তাদের সেই যোগ থাকবে না। কিন্তু স্কুলশিক্ষা দফতরের বক্তব্য, সমাজ পরিবর্তনের সঙ্গে সব কিছুরই পরিবর্তন হয়।

School Chalk Duster Education Controversy
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy