Advertisement
E-Paper

TMC: দুধসাদা চারতলা অট্টালিকা! শখ আছে, তাই করেছি, বললেন তৃণমূলের দোর্দণ্ডপ্রতাপ নেতা

স্থাপত্যের সঙ্গে কলকাতার প্রিন্সেপ ঘাট বা মার্বল প্যালেসের যথেষ্ট মিল। যে বাড়ির সামনে দাঁড়িয়ে অনেকেই মন্তব্য করছেন, “শপিং মল নাকি!”

অনির্বাণ রায়

শেষ আপডেট: ০৫ মে ২০২২ ০৬:০৬
কৃষ্ণ দাসের বাড়ি। নিজস্ব চিত্র

কৃষ্ণ দাসের বাড়ি। নিজস্ব চিত্র

কেউ দাবি করেন, মার্বল এসেছে কলকাতা থেকে। কেউ প্রতিবাদ জানান, না না, সে মার্বল এসেছে ভিন্ রাজ্য থেকে। তবে যেখান থেকেই আসুক, বেশ কিছু দিন ধরে বড় বড় ট্রাক বোঝাই হয়ে তা যে গ্রামের রাস্তায় ঢুকেছে, সে বিষয়ে এলাকাবাসীদের মধ্যে মতান্তর নেই। সব ট্রাকেরই গন্তব্য ছিল একটাই— আঠারো কাঠা জমির (নেতার দাবি অনুযায়ী) উপরে নির্মীয়মাণ দুধসাদা চারতলা অট্টালিকা। যার স্থাপত্যের সঙ্গে কলকাতার প্রিন্সেপ ঘাট বা মার্বল প্যালেসের যথেষ্ট মিল। যে বাড়ির সামনে দাঁড়িয়ে অনেকেই মন্তব্য করছেন, “শপিং মল নাকি!”

বাড়িটির পিছন দিকে গ্যারেজ। তাতে পাশাপাশি রাখা পাঁচটি গাড়ি। সামনে পেল্লায় লোহার গেট। তাতে বাঁধা রয়েছে তৃণমূলের দু’টি পতাকা। গৃহকর্তা তৃণমূলের দোর্দণ্ডপ্রতাপ নেতা কৃষ্ণ দাস। তিনি বারোপেটিয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের উপপ্রধান। সেই গ্রাম পঞ্চায়েতেরই প্রধান হলেন স্বপ্না দাস। কৃষ্ণের স্ত্রী।

বাড়ির সামনে দিয়ে গিয়েছে তিস্তা ক্যানেল। গ্রামের অনেকেই বাড়ি দেখতে ক্যানেলের রাস্তা ধরে হেঁটে যান। কৃষ্ণ দাবি করলেন, বাড়ি নকশা তৈরির সময়ে ৭৫ লক্ষ টাকা আনুমানিক ব্যয় ধরা হয়েছিল। যদিও কৃষ্ণেরই অনুগামীদের একাংশের কথায়, নির্মাণ কাজে হাত দেওয়ার পরে বোঝা গিয়েছে খরচ অনেক বেশি। এই টাকার উৎস নিয়ে বিরোধীরা তো প্রশ্ন তুলেছেনই, তৃণমূলেরও অনেকে ভুরু কুঁচকেছেন। অনেকেই মনে করিয়েছেন, স্বয়ং দলনেত্রীই তো নেতাদের এমন বাড়ি নিয়ে আগেই কড়া মন্তব্য করেছেন। তার পরেও?

কৃষ্ণ দাস অবশ্য বলছেন, “আমার থেকেও বড় বড় বাড়ি তো আরও অনেকের আছে। আমার ব্যবসা আছে, আমার ঠাকুরদার জমিদারি ছিল। দেড় হাজার বিঘার বেশি জমি ছিল আমাদের। আমার শখ আছে, তাই করেছি।” কী ব্যবসা রয়েছে, তারও ফিরিস্তি দিলেন ‘এলাকার শেষ কথা’ বলে পরিচিত কৃষ্ণ। রয়েছে নিজস্ব চা বাগান, সিমেন্টের ডিলারশিপ, মাটি তোলার যন্ত্র (পে লোডার), নির্মাণ সংস্থা। বিরোধীদের অভিযোগ, সব ব্যবসাই ফুলেফেঁপে উঠেছে তৃণমূল ক্ষমতায় আসার পর। বাড়ি নিয়ে আনন্দবাজারের প্রতিনিধি খোঁজখবর করতে যাওয়ার কয়েক ঘণ্টা পরেই কৃষ্ণ দাসের অনুগামী নাম দিয়ে ফেসবুকে বাড়ির ছবি পোস্ট করা হয়। তাতে লেখা হয়েছে, ‘১২ বিঘা জমি বিক্রি করে এবং ব্যাঙ্ক ঋণ নিয়ে বাড়ি তৈরি হয়েছে।’ যা দেখে তৃণমূলেরই নেতাদের একাংশের প্রশ্ন, আগ বাড়িয়ে বাড়ির ছবি দিয়ে এমন পোস্টের অর্থ কী?

প্রাক্তন কেপিপি নেতা কৃষ্ণ একসময়ে সিপিএমে ছিলেন। সিপিএমের জেলা কমিটির প্রভাবশালী নেতার স্নেহধন্য ছিলেন তিনি। রাজ্যে পালাবদলের পরে তৃণমূলে যোগ। তার পর থেকে গ্রামের প্রধান পদ তাঁরই দখলে। সঙ্গে এসসি-এসটি সেলের জেলা সভাপতি। বিজেপির জেলা সভাপতি বাপী গোস্বামীর মন্তব্য, “এলাকাবাসী দেখেছে, কৃষ্ণবাবুর জমিদারি কাদের আমলে ফুলেফেঁপে উঠেছে।’’ তৃণমূলের জেলা সভাপতি মহুয়া গোপ বলেন, ‘‘আমি সদ্য দায়িত্ব পেয়েছি। তাই কার কী বিষয় সম্পত্তি আছে, আমার জানা নেই, দলেরও জানার কথা নয়।’’

TMC
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy