প্রতীকী ছবি।
ফোন করলেই প্রথমে খকখকে কাশি। কী ঘটছে, বুঝতে বুঝতেই করোনাভাইরাস নিয়ে সচেতনতার বার্তা।
করোনাভাইরাসের সংক্রমণ নিয়ে মোবাইল ফোনে এবং ল্যান্ডলাইনে সচেতনতার বার্তা সে কারণে অনেক গ্রাহকের কাছেই বিরক্তির কারণ হয়ে উঠছে। জরুরি কোনও ফোন করতে গিয়ে প্রায় ৩০ সেকেন্ড অপেক্ষা করতে হচ্ছে— কখন বার্তা শেষে ফোনের সংযোগ চালু হবে! আবার বার্তা শোনা যাচ্ছে শুধু ইংরেজি বা হিন্দিতে। ফলে সব মিলিয়ে এই উদ্যোগ কতটা কাজে আসছে, তা নিয়েই প্রশ্ন উঠছে গ্রাহক মহলে। স্বাস্থ্য মন্ত্রকের অবশ্য বক্তব্য, তাদের কাজ মানুষকে সচেতন করা। সে কারণে অন্যান্য মাধ্যমের মতো মোবাইল ফোনকে বেছে নেওয়া হয়েছে। এ ভাবে প্রচার কারও অপছন্দ হতেই পারে। কিন্তু জনস্বার্থেই তা করা হয়েছে।
কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের বিশেষ সচিব অরুণ সিঙ্ঘল গত ৫ মার্চ টেলিকম সচিব অংশু প্রকাশকে চিঠি দিয়ে আর্জি জানান, করোনাভাইরাস সংক্রান্ত সচেতনতা বাড়াতে টেলি-সংস্থাগুলি ফোন শুরুর আগে (প্রি-কল) তিন দিনের জন্য স্বাস্থ্য মন্ত্রকের তৈরি বার্তা প্রচার করুক। গত শনিবার থেকে ধাপে ধাপে সেই পরিষেবা শুরু করে সংস্থাগুলি। কী করা উচিত আর কী নয়, তা-ও এসএমএস করে জানাতে আর্জি জানিয়েছে স্বাস্থ্য মন্ত্রক। আজ এ নিয়ে সরকারি ভাবে মুখ খুলতে চায়নি টেলিকম সংস্থাগুলি। তবে টেলিকম শিল্প মহলের একাংশ জানিয়েছে, জাতীয় স্বার্থে সরকার কোনও নির্দেশ দিলে তারা নিখরচায় তা প্রচার করে। এ ক্ষেত্রেও তাই হচ্ছে। তবে যে গ্রাহকেরা পয়সা খরচ করে ‘কলার টিউন’ পরিষেবা কিনেছেন, তাঁদের ফোনে সেই টিউনই শোনা যাবে, বার্তা নয়। যাঁরা সেই পরিষেবা নেননি, তাঁদের ক্ষেত্রে বার্তাটি আগে শোনা যাবে। বেসরকারি ফোন সংস্থাগুলির ক্ষেত্রে এই পৃথক ব্যবস্থা চালু থাকলেও বিএসএনএলের সব গ্রাহকের ক্ষেত্রেই আগে সেই বার্তা শোনা যাচ্ছে।
সরকারি সূত্রেও জানানো হয়েছে, এই সংক্রমণ নিয়ে প্রচার জাতীয় স্বার্থে জরুরি বলে টেলিকম শিল্পকে তা নিখরচায় করার জন্য বলা হয়েছে। এ ছাড়া, রেল ও মেট্রো রেল স্টেশন, বিমানবন্দর, বাস টার্মিনাসের মতো বিভিন্ন জায়গাতেও একই ধরনের প্রচার চলছে।
যদিও অনেক গ্রাহকের অভিযোগ, ফোনে বার্তাটি বেশ দীর্ঘ হওয়ায় তা মনে রাখা সকলের পক্ষে সম্ভব না-ও হতে পারে। হেল্পলাইন নম্বর তেমন স্পষ্ট শোনা যাচ্ছে না। কাউকে ফোন করলে গোড়াতেই উল্টো দিক থেকে কাশি শুনে বিভ্রান্তি বাড়ছে। মনে হচ্ছে যাঁকে ফোন করা হয়েছে, তিনিই কাশছেন। কিছু গ্রাহক যাঁকেই ফোন করছেন, ওই বার্তা শুনছেন। গ্রাহকদের আর এক অংশের অভিজ্ঞতা আবার তেমন করুণ নয়। টেলিকম শিল্প সূত্রের খবর, সার্ভারের উপর বাড়তি চাপ এড়াতে পর্যায়ক্রমে বিভিন্ন গ্রাহকের ফোনে ওই বার্তা শোনাচ্ছে কোনও কোনও টেলিকম সংস্থা। ফলে একই গ্রাহকের ক্ষেত্রে কখনও তা শোনা গেলেও পরে তা শোনা যাচ্ছে না।
এই বার্তা বন্ধ করার পন্থাও বার করেছেন গ্রাহকদের একাংশ। তাঁদের দাবি, বার্তা শুরু হওয়ার পরই অন্য কোনও একটি নম্বর ‘টাইপ’ করলে তা থেমে যাচ্ছে এবং সরাসরি সংযোগ চালু হয়ে যাচ্ছে। তবে টেলিকম মহলের দাবি, বার্তা বন্ধ করার এমন কোনও নির্দেশিকা তাদের তরফে দেওয়া হয়নি। তা হলে কী করে বার্তা বন্ধ করা যাচ্ছে? সদুত্তর মেলেনি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy