Advertisement
৩০ এপ্রিল ২০২৪
Coronavirus

ট্রেন-হাসপাতাল নিয়ে যুদ্ধে রেলও

রেল বোর্ডের চেয়ারম্যানের সঙ্গে বুধবার বিভিন্ন জ়োনের জেনারেল ম্যানেজারদের ভিডিয়ো-সম্মেলনে কিছু গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

ফাইল চিত্র।

ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা ও নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২৭ মার্চ ২০২০ ০৪:৫৫
Share: Save:

দেশ জুড়ে করোনা-যুদ্ধে বিশেষ পরিস্থিতি মোকাবিলার প্রস্তুতি শুরু করে দিল রেল। দুর্গম এলাকায় করোনা-রোগীর চিকিৎসায় সেনার তত্ত্বাবধানে বিশেষ ভ্রাম্যমাণ হাসপাতাল চালু করছে তারা। কোচ ব্যবহার করে ৩০টি আইসোলেশন ওয়ার্ড তৈরির নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সেই সঙ্গে করোনা ঠেকাতে অত্যন্ত জরুরি হাতশুদ্ধিও তৈরি হচ্ছে রেলের বিভিন্ন কারখানায়।

রেল বোর্ডের চেয়ারম্যানের সঙ্গে বুধবার বিভিন্ন জ়োনের জেনারেল ম্যানেজারদের ভিডিয়ো-সম্মেলনে কিছু গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সারা দেশে করোনা-রোগীর সংখ্যা যে-ভাবে বাড়ছে, সেটা মাথায় রেখেই প্রস্তুতি চলছে। আপৎকালীন পরিস্থিতির মোকাবিলায় সারা দেশে পাঁচটি রেল অ্যাম্বুল্যান্স রয়েছে। অম্বালা, অমৃতসর, বিকানেরের মতো সীমান্তবর্তী এলাকা ছাড়াও হাতিয়ায় রয়েছে ওই অ্যাম্বুল্যান্স। তাতে আধুনিক চিকিৎসার ব্যবস্থা আছে। অন্যান্য সুবিধাযুক্ত কামরার সঙ্গে ওই অ্যাম্বুল্যান্স জুড়ে পুরোদস্তুর চলমান হাসপাতাল তৈরি করছে রেল। করোনা-পরিস্থিতির মোকাবিলায় চিকিৎসক, স্বাস্থ্যকর্মীদের নিয়ে দুর্গম বা পরিকাঠামোহীন এলাকায় যেতে পারবে ওই ট্রেন-হাসপাতাল। সেনা ও রেলের চিকিৎসকদের তত্ত্বাবধানে কাজ চলবে ওই হাসপাতালে।

করোনার দাপট বাড়তে থাকায় আইসোলেশন ওয়ার্ডের চাহিদাও বাড়ছে। তাই সারা দেশে কোচ ব্যবহার করে রেলের ১৫টি ওয়ার্কশপকে ৩০টি চলমান আইসোলেশন ওয়ার্ড তৈরি করতে বলা হয়েছে, যাতে যে-কোনও প্রয়োজনে করোনা-কবলিত এলাকায় ওই কোচ পাঠানো যায়। এ ছাড়াও রেলের হাসপাতালগুলিকে এই প্রাণঘাতী ব্যাধির চিকিৎসার উপযোগী করে তুলতে বলেছে রেল বোর্ড। পরিস্থিতি পর্যালোচনায় রোজ সংশ্লিষ্ট জ়োনগুলির সঙ্গে ভিডিয়ো-সম্মেলন করবেন বোর্ড-কর্তারা। পর্যাপ্ত ভেন্টিলেটর সংগ্রহের নির্দেশও গিয়েছে বিভিন্ন জ়োনের কাছে। সেই জন্য এআইএমএস-এর সাহায্য নেওয়ার কথা ভাবছে রেল। প্রয়োজনে ভেন্টিলেটর তৈরিরও ব্যবস্থা হতে পারে। রেলে খাদ্য, অন্যান্য জরুরি পণ্য পরিবহণে যুক্ত কর্মীদের সুরক্ষার জন্য বিশেষ ব্যবস্থা হচ্ছে। আরপিএফ-কর্মীদের ছুটি বাতিল করা হয়েছে। আপৎকালীন পরিস্থিতির জন্য প্রস্তুত থাকতে বলা হয়েছে তাঁদের।

রেলের আঞ্চলিক শেডগুলিতে হাতশুদ্ধি, মাস্ক বা মুখাবরণ তৈরি করা হচ্ছে। পূর্ব ও দক্ষিণ-পূর্ব রেল তা বিভিন্ন জায়গায় জোগানও দিচ্ছে। গোটা দেশে মুখাবরণ ও হাতশুদ্ধির অভাব মেটাতে এগিয়ে এসেছে সেনা, রেল-সহ বিভিন্ন কেন্দ্রীয় মন্ত্রক। আপাতত রুটিনমাফিক উৎপাদন ছেড়ে মুখাবরণ-হাতশুদ্ধির মতো জরুরি জিনিসের অভাব মেটাতে হাত লাগিয়েছে ওই সব মন্ত্রকের অধীন বিভিন্ন সংস্থা। অন্ডালের ডিজেল শেড কারখানায় ৫০০ লিটার হাতশুদ্ধি তৈরি করা হয়েছে। যোধপুরের ডিভিশন তৈরি করেছে ২১৫ লিটার। উত্তর রেলে ফিরোজপুরের কেমিক্যাল ও মেটালার্জিক্যাল শাখা উৎপাদন করেছে প্রায় ৫০০ লিটার হাতশুদ্ধি। প্রাথমিক ভাবে রেলের চাহিদা মিটিয়ে উদ্বৃত্ত হাতশুদ্ধি তুলে দেওয়া হচ্ছে সংশ্লিষ্ট রাজ্য সরকারের হাতে।

তামিলনাড়ুর অবধি-তে অবস্থিত ফৌজি অর্ডন্যান্স কারখানা সেনার পোশাক বানানোর পরিবর্তে আপাতত এক লক্ষ মাস্ক তৈরি করে সরকারকে দিয়েছে। মাস্ক বানাচ্ছে বস্ত্র মন্ত্রকের অধীন রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থাও। ডিআরডিও-র পরীক্ষাগারে ২০ হাজার লিটার হাতশুদ্ধি বানিয়ে বিভিন্ন মন্ত্রক ও দফতরে পাঠানো হয়েছে। তা ব্যবহার করা হচ্ছে প্রধানমন্ত্রীর সচিবালয়, প্রতিরক্ষা মন্ত্রক, আইবি, সিবিআই, এসপিজি, এনটিআরও-র দফতরে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Coronavirus Indian Railways
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE