ফাইল চিত্র।
মাত্র পাঁচ দিন আগেই পাঁচশোর ঘর ছাড়িয়ে ছ’শোর ঘরে ঢুকে পড়েছিল একদিনে আক্রান্তের পরিসংখ্যান। সপ্তাহ ফুরনোর আগেই প্রায় সাড়ে সাতশোর ঘর ছুঁয়ে ফেলল গত চব্বিশ ঘণ্টায় আক্রান্তের সংখ্যা। শনিবার রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের বুলেটিনের তথ্য অনুযায়ী, ২৪ ঘণ্টায় ৭৪৩ জনের দেহে করোনা ভাইরাসের অস্তিত্ব মিলেছে। রেকর্ড আক্রান্তের দিনে মৃত্যু সংখ্যাও এ পর্যন্ত সর্বোচ্চ। এদিন বুলেটিনে জানানো হয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় রাজ্যে ১৯ জন করোনা পজ়িটিভের মৃত্যু হয়েছে। শুক্রবার যা ছিল ১৮।
রেকর্ড সংখ্যক আক্রান্তের দিনে একাধিক চিকিৎসক-স্বাস্থ্যকর্মীর করোনা সংক্রমণের শিকার হওয়ার খবর মিলেছে। লেকটাউনের একটি বেসরকারি হাসপাতালের কর্ণধারের কোভিডে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছে বলে খবর। আর জি কর হাসপাতাল সূত্রের খবর, তাদের রেডিওথেরাপি বিভাগের অ্যাসোসিয়েট প্রফেসর, আরএমও-সহ ছ’জন চিকিৎসক আক্রান্ত হয়েছেন। এসএসকেএমের কার্ডিওলজি বিভাগের এক পোস্ট ডক্টরাল ট্রেনিও আক্রান্ত। বেলেঘাটা আইডি’তে কমিউনিটি মেডিসিনের প্রাক্তন বিভাগীয় প্রধান চিকিৎসাধীন। আশি বছরের ওই চিকিৎসকের ভাই কার্ডিওলজির চিকিৎসক। তিনিও করোনার শিকার হলেও হোম আইসোলেশনে রয়েছেন। দু’জন নার্স, আইডি হাসপাতালের এক মহিলা কর্মী এবং তাঁর স্বামীও করোনার শিকার।
আরও পড়ুন: নেওয়ার লোক নেই? অ্যাম্বুল্যান্সে করোনা রোগী-মৃত্যুর অভিযোগ
আরও পড়ুন: ৬৪ সপ্তাহ চেয়েছিল টিকা সংস্থা, ব্যাখ্যা দিচ্ছে আইসিএমআর
স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর, রাজ্যের ২৩টি জেলার মধ্যে এ দিনও শীর্ষে কলকাতা (২৪২)। দ্বিতীয়, তৃতীয় স্থানে উত্তর ২৪ পরগনা (১৬৪) এবং হাওড়া (৮২)। দক্ষিণ ২৪ পরগনায় এক সপ্তাহে ধারাবাহিক ভাবে আক্রান্তের সংখ্যা বেড়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় আক্রান্তের সংখ্যা ৯৭। আক্রান্তের মধ্যে ডায়মন্ড হারবার স্বাস্থ্য জেলার ছবি সবচেয়ে উদ্বেগের। উল্টোদিকে প্রায় সব জেলায় আক্রান্তের সংখ্যা বাড়লেও গত ১৪ জুন থেকে ঝাড়গ্রামে মোট আক্রান্তের সংখ্যা কী ভাবে ঊনিশে দাঁড়িয়ে রয়েছে তা দেখে অবাক স্বাস্থ্য দফতরের জনস্বাস্থ্য বিভাগের আধিকারিকদের একাংশ। গত ১৪ জুনের পর ওই জেলায় নতুন করে কেউ আক্রান্ত হননি। স্বাস্থ্য দফতরের খবর, রাজ্যে যে আক্রান্তের হদিস মিলছে তার মধ্যে হাসপাতালের মাধ্যমে পজ়িটিভের সন্ধান মেলার সংখ্যা কম। বেশির ভাগই বেসরকারি ল্যাবরেটরি থেকে পরীক্ষা করিয়েছেন।
বঙ্গে আক্রান্ত ২১,২৩১
অ্যাক্টিভ রোগী ৬৩২৯
২৪ ঘণ্টায় আক্রান্তল ৭৪৩
২৪ ঘণ্টায় মৃত ১৯
মোট মৃত ৭৩৬
কো-মর্বিডিটির কারণে মৃত ৫৭১
(সূত্র: রাজ্য সরকার)
স্বাস্থ্য দফতরের উদ্বেগ গত কয়েক দিনের ঘটনাক্রমেই স্পষ্ট। এক সপ্তাহের মধ্যে কোভিড রোগীর চিকিৎসা পদ্ধতি সংক্রান্ত এ দিন চতুর্থ অ্যাডভাইজ়রি জারি করেছে স্বাস্থ্য দফতর। এ দিনের অ্যাডভাইজ়রিতেও অক্সিজেন থেরাপি, শরীরে অক্সিজেনের মাত্রা, আইসিইউয়ে রোগীর উপরে প্রতিনিয়ত নজরদারির সঙ্গে ভর্তির সময়ই ইসিজি এবং এবিজি পরীক্ষা করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। বেসরকারি হাসপাতালের চিকিৎসকদের মতে, করোনা মৃত্যুর ধারাবাহিক সংখ্য়া বৃদ্ধি কী ধরনের চাপ তৈরি করেছে তা অল্প সময়ের ব্যবধানে পরপর অ্যাডভাইজ়রি জারি করার মধ্যেই স্পষ্ট।
স্কুল অব ট্রপিক্যাল মেডিসিনের ক্লিনিক্যাল ফার্মাকোলজির বিভাগীয় প্রধান শান্তুনু গুহের নেতৃত্বে নয় সদস্যের অ্যান্টিবায়োটিক ম্যানেজমেন্ট কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটিতে রয়েছেন সুভাষ টোডি, সুশ্রুত বন্দ্যোপাধ্যায়, শান্তশীল পাইন, মোনালিসা মজুমদার, সুগত দাশগুপ্ত, ভাস্কর নারায়ণ চৌধুরী, প্রান্তিক হালদার ও অনির্বাণ দলুইয়ের মতো চিকিৎসকেরা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy