Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪
Coronavirus in West Bengal

মর্গে উপচে পড়ছে কোভিড রোগীদের দেহ, দুর্গন্ধে খাওয়া-ঘুম ছুটেছে চুঁচুড়ার বাসিন্দাদের

শ্মশানঘাটের ইলেকট্রিক চুল্লি খারাপ হওয়ায় গত কয়েক দিন ধরেই চুঁচুড়ার ইমামবাড়া জেলা হাসপাতালের কোভিড রোগীদের দেহ সৎকারের কাজ বন্ধ।

—নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
চুঁচুড়া শেষ আপডেট: ০১ মে ২০২১ ১৮:০৫
Share: Save:

হাসপাতালের মর্গে উপচে পড়ছে কোভিড রোগীদের দেহের স্তূপ। তা রাখার জায়গা নেই। লাশ রাখার ঘরের বাইরে ভ্যানের উপরেই একের পর এক দেহ চাপিয়ে রেখে দেওয়া হয়েছে। দুর্গন্ধে খাওয়া-ঘুম ছুটেছে চুঁচুড়ার স্থানীয় বাসিন্দাদের। শ্মশানঘাটের ইলেকট্রিক চুল্লি খারাপ হওয়ায় গত কয়েক দিন ধরেই এলাকার কোভিড রোগীদের দেহ সৎকারের কাজ বন্ধ। এর জেরে আক্ষরিক অর্থেই অসহনীয় অবস্থায় দিন কাটাতে বাধ্য হচ্ছেন ইমামবাড়া জেলা হাসপাতালের মর্গের আশপাশের বাসিন্দারা।

স্থানীয়দের অভিযোগ, পচা লাশের দুর্গন্ধে ঘরে টিকতে পারছেন না তাঁরা। শনিবার ওই হাসপাতাল সুপারের ঘরে গিয়ে বিক্ষোভ দেখান স্থানীয়রা। পাশাপাশি, পুলিশকে ঘিরেও ক্ষোভে ফেটে পড়েন তাঁরা। অভিযোগ, অসৎ উদ্দেশ্যেই মৃতদেহ দাহ করা হচ্ছে না। মৃতের পরিবারের কাছ থেকে টাকা আদায় করা হচ্ছে। যদিও এই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।

চুঁচুড়ার ইমামবাড়া জেলা হাসপাতালের মর্গে কোভিডে আক্রান্ত রোগীদের দেহ রয়েছে প্রায় ৩৫টি। তবে গত কয়েক দিন ধরেই সেগুলি দাহ করা যাচ্ছে না। ইতিমধ্যেই তাতে পচন ধরতে শুরু করেছে। দুর্গন্ধে টেকা দায় হয়ে পড়েছে স্থানীয়দের। হাসপাতালের মর্গের পাশের পাড়ার বাসিন্দা বাবলু ঘোষ বলেন, “করোনায় আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হলে সে দেহ পরিবারের হাতে তুলে দেওয়া হয় না। তা হলে এখানে জমিয়ে রাখা হচ্ছে কেন?”

হাসপাতাল সূত্রে খবর, চুঁচুড়া হাসপাতালের সব কোভিড রোগীর দেহ চুঁচুড়ার শ্যামবাবুর শ্মশানঘাটে দাহ করা হয়। তবে ইলেকট্রিক চুল্লি খারাপ হয়ে যাওয়ায় সে ঘাট গত ৪-৫দিন ধরে বন্ধ। তাই কোনও দেহ সৎকার করা যাচ্ছে না। যদিও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কথায় ক্ষোভ মেটেনি স্থানীয় বাসিন্দাদের। এলাকার আর এক বাসিন্দা বিনোদ ডোম বলেন, “গাদা ঘর উপচে পড়ায় এ বার বাইরে রাস্তার উপর দেহের স্তূপ তৈরি করা হয়েছে। সারাদিন দুর্গন্ধে নাক ঝাঁঝিয়ে যাচ্ছে। অথচ এ নিয়ে প্রশাসনের কোনও হুঁশ নেই।”

এলাকার ক্ষিপ্ত বাসিন্দাদের হুঁশিয়ারি, “এর সুরাহা না হলে হাসপাতালের ভিতর মৃতদেহ ফেলে দিয়ে আসা হবে।” শনিবার ওই এলাকায় উত্তেজনার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে হাজির হন চুঁচুড়া থানার এএসআই উৎপল গঙ্গোপাধ্যায়। স্থানীয়দের আশ্বাস দিয়ে তিনি বলেন, “মহকুমাশাসকের সঙ্গে এ বিষয়ে কথা হয়েছে। যত দ্রুত সম্ভব দেহগুলি সরানোর বা দাহ করানোর ব্যবস্থা করা হবে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE