গ্রাফিক: শোভিক দেবনাথ।
নয়া লকডাউনেও ঠেকানো যাচ্ছে না করোনার ঊর্ধ্বগতি। গত ২৪ ঘণ্টায় রাজ্যে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ফের ২ হাজার পার করল। সেই সঙ্গে এক দিনে মৃত্যুর সংখ্যাও আগের সব হিসেব ছাপিয়ে গেল। শনিবার রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর যে বুলেটিন প্রকাশ করেছে, তাতে দেখা গিয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় রাজ্যে নতুন করে ২ হাজার ৪০৪ জন কোভিড-১৯ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। করোনায় আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছে ৪২ জনের। মৃতদের মধ্যে কলকাতারই ১১ বাসিন্দা।
সেই সঙ্গে প্রশাসনের চিন্তা বাড়াচ্ছে পজিটিভিটি রেটও। প্রতিদিন কত জন রোগীর করোনা টেস্ট করা হচ্ছে এবং তার মধ্যে কত জনের রিপোর্ট পজিটিভ আসছে, সেটাকেই বলা হয় পজিটিভিটি রেট বা সংক্রমণের হার। শুক্রবার সংক্রমণের হার ছিল ১৪.৩১ শতাংশ। গত ২৪ ঘণ্টায় ১৫ হাজার ৬২৮ জনের টেস্ট হওয়ার পর, তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৫.৩৮ শতাংশে।
শহর কলকাতায় প্রতি দিন যে ভাবে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে চলেছে, তা-ও যথেষ্ট উদ্বেগজনক। শুক্রবারের চেয়ে কম হলেও (৭৯৯), গত ২৪ ঘণ্টায় মহানগরীতে ৭২৭ জন কোভিড-১৯ ভাইরাসে সংক্রমিত হয়েছেন। তার ফলে শহরে মোট আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৭ হাজার ৫৫৩।
(গ্রাফের উপর হোভার বা টাচ করলে প্রত্যেক দিনের পরিসংখ্যান দেখতে পাবেন। চলন্ত গড় কী এবং কেন তা লেখার শেষে আলাদা করে বলা হয়েছে।)
আরও পড়ুন: পার্ক সার্কাস থেকে মেডিক্যাল ৯০০০! না দেওয়ায় করোনা আক্রান্ত ২ শিশুকে নামিয়ে দিল অ্যাম্বুল্যান্স
আরও পড়ুন: আজও লকডাউনে রাজ্যে বন্ধের চেহারা, কাল ফের চেনা ভিড়ের আশঙ্কা
কলকাতা সংলগ্ন উত্তর ২৪ পরগনায় গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে আক্রান্তের সংখ্যা কিছুটা কমেছে। শনিবার উত্তর ২৪ পরগনায় নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন ৫২৪ জন। শুক্রবার এই সংখ্যাটা ছিল ৫৬৭। তবে শুক্রবার দক্ষিণ ২৪ পরগনায় নতুন করে যেখানে ১৪৩ জন আক্রান্ত হন, এ দিন সংখ্যাটা ১৯১-তে এসে ঠেকেছে। এ দিন হাওড়ায় নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন ২০৬ জন।
এই মুহূর্তে হুগলির পরিস্থিতিও উদ্বেগ বাড়াচ্ছে প্রশাসনের। গত ২৪ ঘণ্টায় ১৫০ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন সেখানে। দার্জিলিং, বাঁকুড়া, পূর্ব বর্ধমান এবং বীরভূমে যথাক্রমে ৬১, ৪৫, ৩৪ এবং ৩১ জন করে নতুন সংক্রমিতের হদিশ মিলেছে।
তবে আক্রান্তের সংখ্যা লাগাতার বেড়ে চলায় এক দিকে উদ্বেগ যেমন বাড়ছে, ঊর্ধ্বমুখী সুস্থতার হার তেমনই কিছুটা হলেও স্বস্তি জোগাচ্ছে। গত ২৪ ঘণ্টায় রাজ্যে মোট ২ হাজার ১২৫ জন সুস্থ হয়ে হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেয়েছেন। সব মিলিয়ে এখনও পর্যন্ত ৩৫ হাজার ৬৫৪ জন সুস্থ হয়ে উঠেছেন। এই মুহূর্তে রাজ্যে সুস্থতার হার ৬৩.২৪ শতাংশ।
(চলন্ত গড় বা মুভিং অ্যাভারেজ কী: একটি নির্দিষ্ট দিনে পাঁচ দিনের চলন্ত গড় হল— সেই দিনের সংখ্যা, তার আগের দু’দিনের সংখ্যা এবং তার পরের দু’দিনের সংখ্যার গড়। উদাহরণ হিসেবে—পশ্চিমবঙ্গে দৈনিক নতুন করোনা সংক্রমণের লেখচিত্রে ১৮ মে-র তথ্য দেখা যেতে পারে। সে দিনের মুভিং অ্যাভারেজ ছিল ১২৮। কিন্তু সে দিন নতুন আক্রান্তের প্রকৃত সংখ্যা ছিল ১৪৮। তার আগের দু’দিন ছিল ১১৫ এবং ১০১। পরের দুদিনের সংখ্যা ছিল ১৩৬ এবং ১৪২। ১৬ থেকে ২০ মে, এই পাঁচ দিনের গড় হল ১২৮, যা ১৮ মে-র চলন্ত গড়। ঠিক একই ভাবে ১৯ মে-র চলন্ত গড় হল ১৭ থেকে ২১ মে-র দৈনিক আক্রান্তের সংখ্যার গড় পরিসংখ্যানবিদ্যায় দীর্ঘমেয়াদি গতিপথ সহজ ভাবে বোঝার জন্য এবং স্বল্পমেয়াদি বড় বিচ্যুতি এড়াতে এই পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়)
(জরুরি ঘোষণা: কোভিড-১৯ আক্রান্ত রোগীদের জন্য কয়েকটি বিশেষ হেল্পলাইন চালু করেছে পশ্চিমবঙ্গ সরকার। এই হেল্পলাইন নম্বরগুলিতে ফোন করলে অ্যাম্বুল্যান্স বা টেলিমেডিসিন সংক্রান্ত পরিষেবা নিয়ে সহায়তা মিলবে। পাশাপাশি থাকছে একটি সার্বিক হেল্পলাইন নম্বরও।
• সার্বিক হেল্পলাইন নম্বর: ১৮০০ ৩১৩ ৪৪৪ ২২২
• টেলিমেডিসিন সংক্রান্ত হেল্পলাইন নম্বর: ০৩৩-২৩৫৭৬০০১
• কোভিড-১৯ আক্রান্তদের অ্যাম্বুল্যান্স পরিষেবা সংক্রান্ত হেল্পলাইন নম্বর: ০৩৩-৪০৯০২৯২৯)
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy