Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪
West Bengal Lockdown

আজও লকডাউনে রাজ্যে বন্‌ধের চেহারা, কাল ফের চেনা ভিড়ের আশঙ্কা

পুলিশের কঠোর নজরদারিতে চলছে লকডাউন। নিয়ম না মানলে চলছে ধরপাকড়ও। অপ্রয়োজনে যাঁরা গাড়ি নিয়ে বেরচ্ছেন, আটক করা হচ্ছে।

লকডাউনের দ্বিতীয় দিনেও শুনশান রাস্তাঘাট— নিজস্ব চিত্র। ছবি: পিটিআই।

লকডাউনের দ্বিতীয় দিনেও শুনশান রাস্তাঘাট— নিজস্ব চিত্র। ছবি: পিটিআই।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৫ জুলাই ২০২০ ১১:০৩
Share: Save:

চলতি সপ্তাহে বৃহস্পতিবারের পর, শনিবারও দিনভর কড়া লকডাউনের ছবি ধরা পড়ল রাজ্যে জুড়ে। পুলিশের কড়া নজরদারি রয়েছে সর্বত্রই। শুনশান রাস্তাঘাট। ভিড় উধাও। যেন বন্‌ধের চেহারা কলকাতা থেকে জেলায়।

লকডাউনের প্রথম দিন বৃহস্পতিবারও একই ছবি ধরা পড়েছিল। কিন্তু মাঝের এক দিন, শুক্রবার, বাজার-রাস্তায় ফের মানুষের ভিড় উপচে পড়ে। শিকেয় উঠেছিল দূরত্ববিধি। আগামীকাল রবিবার, অফিস-কাছারি ছুটি। চিকিৎসক মহলের আশঙ্কা, শুক্রবারের মতো রবিবারও বাজারহাটে চেনা ভিড় ফিরতে পারে। মানুষ সচেতন না হলে, পুলিশ-প্রশাসন জোর করে সচেতনতার পাঠ পড়াতে পারবে না।

পুলিশের কঠোর নজরদারিতে চলছে লকডাউন। নিয়ম না মানলে চলছে ধরপাকড়ও। অপ্রয়োজনে যাঁরা গাড়ি নিয়ে বেরচ্ছেন, আটক করা হচ্ছে। বাজেয়াপ্ত করা হচ্ছে গাড়ি-বাইক। প্রয়োজনে আইনি পদক্ষেপও করছে পুলিশ। আজ সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত নিয়ম না মানার কারণে ৭০৩ জনকে গ্রেফতার করেছে কলকাতা পুলিশ। মাস্ক না পরা ও থুতু ফেলার জন্য যথাক্রমে ৩৬৮ এবং ১১ জনের বিরুদ্ধে মামলাও হয়েছে। লকডাউন বিধি না মেনে বাইরে বেরনোর জন্য বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে ১৪টি গাড়ি।

রাস্তায় গাড়ি থামিয়ে নাকা তল্লাশি পুলিশের। ছবি: পিটিআই।

পুলিশের তরফে বার বার মাস্ক এবং দূরত্ব বিধি মানার কথা বলা হলেও, অনেকেই নিয়ম মানছেন না। পুলিশ-প্রশাসনের তরফে কড়াকড়ি করা হলে, তবেই পরিস্থিতির উন্নতি হচ্ছে। কিন্তু চিকিৎসকরা বলছেন, ৩০ দিন ধরে লকডাউন করা আর হয়তো সম্ভব হবে না। ফলে মানুষকেই সচেতন হতে হবে। না হলে এই লকডাউনের কোনও মানে হবে না।

এ দিন কলকাতার বেহালা থেকে বেলেঘাটা, ফুলবাগান থেকে খিদিরপুর, সল্টলেক, উল্টোডাঙা, গড়িয়াহাট, টালিগঞ্জ-সহ মধ্য কলকাতার বিভিন্ন এলাকায় চলছে নাকা তল্লাশি। দক্ষিণ এবং উত্তর কলকাতার সব এলাকাতেই একই ছবি। ড্রোনের সাহায্যেও চলছে নজরদারি। শুধু রাজপথেই নয়, শহরের অলিগলিতে ঢুকে চলছে পুলিশি টহল। লালবাজার থেকেও সিসি ক্যামেরাতে চোখ রেখেছে পুলিশ।

এ দিন সকাল ৬টা থেকেই চলছে লকডাউন। বেহালা চৌরাস্তায় বজ্রআঁটুনির ছবি ধরা পড়েছে। রাস্তার উপরে বসানো হয়েছে ব্যারিকেড। প্রত্যেক গাড়িচালকের কাছ থেকে পরিচয়পত্র দেখতে চাওয়া হচ্ছে। কলকাতা শহরের বেশির ভাগ রাস্তায় এমনই দৃশ্য দেখা যাচ্ছে। তবে নিয়ম ভাঙারও কিছু ছবি ধরা পড়েছে। যেমন বেহালার অজন্তা কোয়াটার্স, ভবানীপুরের কিছু এলাকায় স্থানীয় বাসিন্দাদের অযথা ঘোরাঘুরি করতে দেখা গিয়েছে।

রাস্তার মোড়ে মোড়ে কড়া নজরদারি। ছবি: পিটিআই।

আরও পড়ুন: নিয়ম ভাঙার পর লকডাউনে কি আজ নিয়ম মানার দিন?

করোনা মোকাবিলায় সপ্তাহে দু’দিন করে লকডাউনের ঘোষণা করেছে রাজ্য সরকার। আগামী সপ্তাহে বুধবার এবং আরও এক দিন লকডাউন হবে। কলকাতায় যেমন কড়াকড়ি রয়েছে, তেমনই জেলাতেও শুনশান রাস্তা। বাজার-দোকান বন্ধ। সকাল থেকে রাস্তায় প্রায় লোকের দেখাই নেই। উত্তর ২৪ পরগনার মধ্যমগ্রাম চৌমাথায় নাকা তল্লাশি চলছে। যশোর রোডের উপরে পুলিশের ছয়লাপ। প্রতিটি গাড়ি-বাইককে আটকানো হচ্ছে। বারাসত পুলিশ জেলার তরফে কড়া পদক্ষেপ করা হচ্ছে বিভিন্ন এলাকায়।

বীরভূমেও একই ছবি ধরা পড়েছে। সিউড়িতে এক জিআরপি কর্মী জোর করে যাওয়ার চেষ্টা করেন। তাঁকে আটক করা হয়। তিনি ডিউটিতে ছিলেন না বলে জানা গিয়েছে। বোলপুরেও চলছে পুলিশি টহল। শিল্পশহর দুর্গাপুরেরও রাস্তাঘাট শুনশান। জরুরি পরিষেবার সঙ্গে যুক্তরাই একমাত্র বেরচ্ছেন। দক্ষিণ ২৪ পরগনার সোনারপুর, মথুরাপুরেও কড়াকড়ির ছবি দেখা গিয়েছে। মুর্শিদাবাদের বহরমপুর-সহ প্রতিটি জায়গায় চলছে পুলিশি টহল। মালদহের ইংরেজবাজারে দোকান-বাজার বন্ধ রয়েছে। বাঁকুড়ার চকবাজারেও প্রথম দিনের মতোই এ দিনও কঠোর ভাবে পালন হচ্ছে লকডাউন। চুঁচুড়া-শ্রীরামপুরে বিনা প্রয়োজনে বাড়ি থেকে বেরলেই আটক করছে পুলিশ। ইতিমধ্যেই প্রায় ৫০ জনকে আটক করা হয়েছে। চায়ের দোকান খুলেছিল কিছু এলাকায়। সে সব বন্ধ করে দেয় পুলিশ।

আরও পড়ুন: রাজ্যে তুলনায় কমল করোনা রোগীর সংখ্যা

শুক্রবার ভিড়ের ছবি ধরা পড়েছিল হাওড়াতেও। কিন্তু এ দিন তার উল্টো ছবি দেখা গিয়েছে।শুনশান রাস্তাঘাট। ড্রোনের মাধ্যমেও চলছে নজরদারি। কেউ বিনা প্রয়োজনে বাইরে বেরলেই পাকড়াও।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE