গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ
বঙ্গে এক দিনে আক্রান্তের সংখ্যা তিন হাজারের গণ্ডি অতিক্রম করল শুক্রবার। এ দিন স্বাস্থ্য দফতরের প্রকাশিত বুলেটিন অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় ৩০৩৫ জনের দেহে করোনা ভাইরাসের অস্তিত্ব মিলেছে। ২৪ ঘণ্টায় মৃত্যু হয়েছে ৬০ জনের।
এক দিনে নমুনা পরীক্ষার সংখ্যাতেও বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। এ দিনের বুলেটিনে জানানো হয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় ৩১৩১৭টি নমুনা পরীক্ষা হয়েছে। যা এ পর্যন্ত সর্বোচ্চ। রাজ্যে সুস্থতার হার হল ৭৩.৫৭ শতাংশ।
(গ্রাফের উপর হোভার বা টাচ করলে প্রত্যেক দিনের পরিসংখ্যান দেখতে পাবেন। চলন্ত গড় কী এবং কেন তা লেখার শেষে আলাদা করে বলা হয়েছে।)
প্রসঙ্গত, কোভিড আক্রান্তদের হাসপাতাল বা সেফ হোম থেকে ছাড়ার সময় সুস্থতার শংসাপত্র দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর। এ দিনই এই সংক্রান্ত একটি নির্দেশ জারি করা হয়েছে। সংক্রমণের একেবারে গোড়ার দিকে পরপর দু'বার নেগেটিভ রিপোর্ট আসার পরই রোগীকে কোভিড হাসপাতাল থেকে ছাড়া হত।
আরও পড়ুন: বিমার ‘প্যাঁচে’ টাকা অধরা
কিন্তু পরবর্তী ক্ষেত্রে হাসপাতাল থেকে ছুটি সংক্রান্ত নির্দেশিকায় সেই নিয়মে বদল আনে আইসিএমআর। বিপুল সংখ্যক মানুষ সংক্রমিত হওয়ায় নমুনা পরীক্ষার ল্যাবরেটরিগুলির উপরে চাপ কমানোর পাশাপাশি হাসপাতালে রোগী যাতে দীর্ঘ দিন শয্যা আটকে না রাখেন তা নিশ্চিত করা ছিল লক্ষ্য। কিন্তু আক্রান্তের প্রতিবেশী, আবাসন কমিটি, এলাকাবাসীর একাংশের অহেতুক আতঙ্ক যে পুরোপুরি কাটানো যায়নি, তা নির্দেশিকা থেকে স্পষ্ট।
নির্দেশিকায় স্পষ্ট বলা হয়েছে, প্রথম বার করোনা পজ়িটিভ হওয়ার পরে সুস্থতার মাপকাঠি হিসাবে নেগেটিভ রিপোর্টের প্রাসঙ্গিকতা নিয়ে আক্রান্তের পরিজন, প্রতিবেশী এবং বৃহত্তর সমাজের মধ্যে বিভ্রান্তি রয়েছে। সেই বিভ্রান্তি দূর করতে রোগী যে এখন স্থিতিশীল এবং সাত দিনের হোম আইসোলেশনে থাকার পরামর্শ দিয়ে যে হাসপাতাল থেকে ছাড়া হয়েছে তা শংসাপত্রে লেখা থাকবে। আইসিএমআরের প্রোটোকল মেনে আর যে পরীক্ষার প্রয়োজন নেই তারও উল্লেখ থাকবে শংসাপত্রে।
এ দিকে, আজ, শনিবার চিকিৎসক, নার্স, স্বাস্থ্যকর্মী মিলিয়ে মোট ৫১ জন কোভিড যোদ্ধাকে সংবর্ধনা দেবেন মেডিক্যাল কলেজ কর্তৃপক্ষ। অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে কেউ কোভিড রোগীদের মুখে হাসি ফুটিয়েছেন। কেউ আবার বয়সের তোয়াক্কা না করে নিজে নিয়মিত ওয়ার্ড পরিদর্শন, করোনা রোগীদের চিকিৎসা করে বাকি চিকিৎসকদের উদ্বুদ্ধ করেছেন। সহকর্মীরা করোনা আক্রান্ত হলেও কর্তব্য থেকে সরে যাননি কোভিড হাসপাতালের স্বাস্থ্যকর্মীরা। স্বাধীনতা দিবসে তাঁরাই কলকাতা মেডিক্যাল কলেজের কোভিড যোদ্ধা।
(চলন্ত গড় বা মুভিং অ্যাভারেজ কী: একটি নির্দিষ্ট দিনে পাঁচ দিনের চলন্ত গড় হল— সেই দিনের সংখ্যা, তার আগের দু’দিনের সংখ্যা এবং তার পরের দু’দিনের সংখ্যার গড়। উদাহরণ হিসেবে— দৈনিক নতুন করোনা সংক্রমণের লেখচিত্রে ১৮ মে-র তথ্য দেখা যেতে পারে। সে দিনের মুভিং অ্যাভারেজ ছিল ৪৯৫৬। কিন্তু সে দিন নতুন আক্রান্তের প্রকৃত সংখ্যা ছিল ৫২৬৯। তার আগের দু’দিন ছিল ৩৯৭০ এবং ৪৯৮৭। পরের দুদিনের সংখ্যা ছিল ৪৯৪৩ এবং ৫৬১১। ১৬ থেকে ২০ মে, এই পাঁচ দিনের গড় হল ৪৯৫৬, যা ১৮ মে-র চলন্ত গড়। ঠিক একই ভাবে ১৯ মে-র চলন্ত গড় হল ১৭ থেকে ২১ মে-র আক্রান্তের সংখ্যার গড়। পরিসংখ্যানবিদ্যায় দীর্ঘমেয়াদি গতিপথ সহজ ভাবে বোঝার জন্য এবং স্বল্পমেয়াদি বড় বিচ্যুতি এড়াতে এই পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়)
(জরুরি ঘোষণা: কোভিড-১৯ আক্রান্ত রোগীদের জন্য কয়েকটি বিশেষ হেল্পলাইন চালু করেছে পশ্চিমবঙ্গ সরকার। এই হেল্পলাইন নম্বরগুলিতে ফোন করলে অ্যাম্বুল্যান্স বা টেলিমেডিসিন সংক্রান্ত পরিষেবা নিয়ে সহায়তা মিলবে। পাশাপাশি থাকছে একটি সার্বিক হেল্পলাইন নম্বরও।
• সার্বিক হেল্পলাইন নম্বর: ১৮০০ ৩১৩ ৪৪৪ ২২২
• টেলিমেডিসিন সংক্রান্ত হেল্পলাইন নম্বর: ০৩৩-২৩৫৭৬০০১
• কোভিড-১৯ আক্রান্তদের অ্যাম্বুল্যান্স পরিষেবা সংক্রান্ত হেল্পলাইন নম্বর: ০৩৩-৪০৯০২৯২৯)
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy