Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪
Coronavirus in West Bengal

আক্রান্তকেও ‘নেগেটিভ’ রিপোর্ট দিয়েছিল বাঙুর

২৮ জুলাই জরুরি বিভাগের যে টিকিট জারি হয়েছিল তার উপরেই ইংরেজির বড় অক্ষরে ‘কোভিড নেগেটিভে’র সিলমোহর লাগিয়ে দেওয়া হয়।

সেই ‘ভুল’ রিপোর্ট।

সেই ‘ভুল’ রিপোর্ট।

সৌরভ দত্ত
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৬ অগস্ট ২০২০ ০২:০৯
Share: Save:

জরুরি বিভাগের টিকিটে ‘কোভিড নেগেটিভে’র সিলমোহর লাগিয়ে করোনা সন্দেহভাজন বৃদ্ধের পরিজনদের আশ্বস্ত করেছিল রাজ্যের প্রথম সারির কোভিড হাসপাতাল এম আর বাঙুর। সেই রিপোর্টের ৪৮ ঘণ্টা পরে স্বাস্থ্য দফতর থেকে ফোন করে বৃদ্ধের পরিজনদের জানানো হয়, তিনি করোনা আক্রান্ত। স্বাস্থ্য দফতর নাকি হাসপাতাল, কার রিপোর্ট ঠিক, তা ভেবে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়ে বৃদ্ধের পরিবার। বুধবার এম আর বাঙুরের সুপার শিশির নস্কর জানান, স্বাস্থ্য দফতরই ঠিক। বৃদ্ধের করোনা রিপোর্ট ‘পজ়িটিভ’ এসেছিল!

এ বিষয়ে সুপারের বক্তব্য, ‘‘কার গাফিলতিতে এটা হয়েছে, তাঁকে চিহ্নিত করা জরুরি। রোগীর পরিজন সাহায্য করলে ভাল হয়।’’

৬৯ বছর বয়সি ওই বৃদ্ধের ছেলে জানান, গত ২৫ জুলাই জ্বর এবং মাথাব্যথা হয় তাঁর বাবার। দিন তিনেক পরে এম আর বাঙুরের ফিভার ক্লিনিকে বাবাকে নিয়ে যান তিনি। সে দিনই বাঙুরে বৃদ্ধের নমুনা সংগ্রহ করা হয়। শনিবার রিপোর্ট নিতে গেলে তাঁকে কোনও প্রতিলিপি দেওয়া হয়নি। ২৮ জুলাই জরুরি বিভাগের যে টিকিট জারি হয়েছিল তার উপরেই ইংরেজির বড় অক্ষরে ‘কোভিড নেগেটিভে’র সিলমোহর লাগিয়ে দেওয়া হয়।

বাঙুরের সুপার জানান, পজ়িটিভ রোগীদের রিপোর্টের প্রতিলিপি আলাদা করে দেওয়া হয়। কিন্তু নেগেটিভের সংখ্যা বেশি হওয়ায় প্রত্যেককে রিপোর্ট দিতে গেলে সমস্যা হতে পারে। তাই কাগজে সিলমোহর দিয়ে রিপোর্ট নেগেটিভ বলে জানিয়ে দেওয়া হয়। বৃদ্ধের ছেলের কথায়, ‘‘নেগেটিভ জানার পর সে ভাবে সতর্কতা অবলম্বন করা হয়নি। সেটা তো ঠিক হল না! অন্য রোগীদের সঙ্গে একই ঘটনা ঘটছে না, তারই বা নিশ্চয়তা কোথায়?’’ তবে তিনি জানান, উপসর্গ দেখে বাবাকে ফ্ল্যাটের আলাদা ঘরে রাখার ব্যবস্থা করেছিলেন তিনি। বাঙুর কর্তৃপক্ষ নেগেটিভ জানানোর পরে সপ্তাহ খানেকের আইসোলেশন পর্ব চুকিয়ে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে এসেছিলেন বৃদ্ধ। কিন্তু মঙ্গলবার বিকেলে স্বাস্থ্য দফতরের প্রতিনিধির ফোনে সব ওলটপালট হয়ে গিয়েছে। বৃদ্ধের ছেলের কথায়, ‘‘এম আর বাঙুরে রিপোর্ট নেগেটিভ জানানো হয়েছে শুনে ওই প্রতিনিধি বলেন, ওঁর কাছে যে তথ্য রয়েছে তাতে বাবার রিপোর্ট পজ়িটিভ।’’

সিওপিডি-র (ক্রনিক অবস্ট্রাকটিভ পালমোনারি ডিজ়িজ়) রোগী ওই বৃদ্ধ এখনও বাড়িতে রয়েছেন। সত্যিই স্বাস্থ্য দফতরের কন্ট্রোল রুম থেকে মঙ্গলবার ফোন করা এলে গাফিলতির কথা জেনে বৃদ্ধকে দ্রুত হাসপাতালে ভর্তির ব্যবস্থা করা হল না কেন? শিশিরবাবুর বক্তব্য, ‘‘রোগী যদি আমাদের এখানে আসেন, তা হলে ভর্তির ব্যবস্থা করে দেব।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE