ভয় ছিল গোড়া থেকেই। তা সত্যি করে পরিযায়ীদের ঘরে ফেরার সূত্রে জেলায়-জেলায় করোনা আক্রান্তের গ্রাফ এখন ঊর্ধ্বমুখী। পরিযায়ীরা নিজেরা যেমন আক্রান্ত হচ্ছেন, তেমনই তাঁদের সংস্পর্শে ছড়াচ্ছে সংক্রমণ। পরিযায়ীদের ভিড় সামলে কোয়রান্টিনের ব্যবস্থা করা, তাঁদের সকলের করোনা পরীক্ষার আয়োজন করতে হিমশিম খাচ্ছে জেলাগুলি।
উত্তর থেকে দক্ষিণ— শ্রমিক স্পেশাল ট্রেনের পাশাপাশি বাস বা গাড়ি ভাড়া করেও ফিরছেন পরিযায়ীরা। সেই সূত্রে লাফিয়ে বাড়ছে করোনা-আক্রান্তের সংখ্যা। গত ২৩ এপ্রিল প্রথম করোনা-আক্রান্তের হদিস মিলেছিল মালদহের মানিকচকে। এর পর হাজার হাজার পরিযায়ী শ্রমিক ভিন্ রাজ্য থেকে ফিরেছেন। মালদহে মোট আক্রান্ত গিয়ে ঠেকেছে ১৪৩-এ। কোভিড হাসপাতালের এক নার্স ছাড়া সকলেই পরিযায়ী শ্রমিক। উত্তর দিনাজপুরের ১৫৯ জন আক্রান্তেরও অধিকাংশ পরিযায়ী শ্রমিক। ভিন্ রাজ্য ফেরতের সূত্রে কোচবিহারে আক্রান্তের সংখ্যা পৌঁছেছে ৯১-তে। অথচ কালিম্পংয়ে এই মুহূর্তে সক্রিয় করোনা রোগীর সংখ্যা শূন্য। সেখানে পরিযায়ীও ফিরেছেন হাজার খানেক।
দক্ষিণবঙ্গের জেলাগুলিতেও এক ছবি। গত এক সপ্তাহে উত্তর ২৪ পরগনার শুধুমাত্র বনগাঁ মহকুমায় করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ৩২ জন পরিযায়ী। রবিবার বসিরহাট মহকুমার ৫০ জন পরিযায়ী শ্রমিকের মধ্যে ১২ জনের রিপোর্ট পজ়িটিভ এসেছে। দক্ষিণ ২৪ পরগনার মোট আক্রান্তের সংখ্যা ২১। হাওড়া গ্রামীণ এলাকায় সম্প্রতি ১৪৪ জন পরিযায়ীর লালারস পরীক্ষা হয়েছিল। তার মধ্যে ৭৬ জনই পজ়িটিভ হয়েছেন। হুগলিতে করোনা-আক্রান্ত পরিযায়ীদের অধিকাংশই আরামবাগ মহকুমার। রবিবার পর্যন্ত এই মহকুমায় করোনা পজ়িটিভ পরিযায়ীর সংখ্যা ৭৮ জন। সোমবার স্বাস্থ্য দফতরের মিশন ডিরেক্টর সৌমিত্র মোহন এবং জেলাশাসক ওয়াই রত্নাকর রাও আরামবাগে করোনা-পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করেন। সৌমিত্রবাবু বলেন, ‘‘এখানে কোভিড হাসপাতাল এবং সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে ভাল পরিষেবা এবং পরিকাঠামো আছে। চিকিৎসকেরা ভাল কাজ করছেন।’’