Advertisement
১৯ মে ২০২৪

মাধ্যমিকে বসতে না পেরে ভাঙচুর স্কুলে

স্কুলের ‘গাফিলতিতে’ এ বার মাধ্যমিকে বসতে পারল না শ্রীরামপুরের লালবাহাদুর শাস্ত্রী রোডের একটি বেসরকারি হিন্দি মাধ্যম স্কুলের ২৩ জন ছাত্রছাত্রী। সেই ক্ষোভে সোমবার দফায় দফায় ভাঙচুর চলল ওই স্কুলে।

স্কুলে চলছে ভাঙচুর। ছবি: প্রকাশ পাল।

স্কুলে চলছে ভাঙচুর। ছবি: প্রকাশ পাল।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শ্রীরামপুর শেষ আপডেট: ০২ ফেব্রুয়ারি ২০১৬ ০২:২৭
Share: Save:

কান্না, ক্ষোভ, হতাশা বদলে গেল ক্রোধে।

স্কুলের ‘গাফিলতিতে’ এ বার মাধ্যমিকে বসতে পারল না শ্রীরামপুরের লালবাহাদুর শাস্ত্রী রোডের একটি বেসরকারি হিন্দি মাধ্যম স্কুলের ২৩ জন ছাত্রছাত্রী। সেই ক্ষোভে সোমবার দফায় দফায় ভাঙচুর চলল ওই স্কুলে। বিদ্যালয়ের কর্ণধার পঙ্কজ গুপ্তের বিরুদ্ধে থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করে ছাত্রছাত্রীরা।

এ দিন সকালে স্কুলের কোলাপসিবল গেট ভেঙে ঢুকে চেয়ার, টেবিল, ফ্রিজ, কম্পিউটার-সহ বৈদ্যুতিন সরঞ্জাম ছাদের উপর থেকে ফেলে দেয় ছাত্র-ছাত্রী এবং অভিভাবকেরা। স্কুলের মালিককে গ্রেফতারের দাবি ওঠে। গুড়িয়া দেবী নামে এক মহিলা কাঁদতে কাঁদতে বলেন, ‘‘স্বামী জুটমিলে কাজ করেন। ছেলে মাধ্যমিক দেবে বলে বাড়িতে কত আনন্দ ছিল। ছ’হাজার টাকা স্কুলে জমা দিয়েছিলাম। কিন্তু এমনটা হবে ভাবিনি।’’ ঘণ্টাখানেক ভাঙচুর চলার পরে শ্রীরামপুর থানার পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি সামলায়। মধ্যশিক্ষা পর্ষদের প্রশাসক কল্যাণময় গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, ‘‘অনুমোদন নেই এমন স্কুলগুলির অন্য স্কুলের হয়ে পরীক্ষা দেওয়ার বিষয়ে চরম সিদ্ধান্ত নেওয়ার সময় এসেছে। এ নিয়ে আমরা শীঘ্রই আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেব।’’

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে খবর, ওই হিন্দি মাধ্যম স্কুল থেকে এ বার ২৩ জন ছাত্রছাত্রীর মাধ্যমিক দেওয়ার কথা ছিল। অ্যাডমিট কার্ড না আসায় ৩০ জানুয়ারি ছাত্রছাত্রীরা স্কুলে এসে বিক্ষোভ দেখায়। তখন তাদের নিয়ে কলকাতায় বিজেপির সদর কার্যালয়ে যান পঙ্কজবাবু। রবিবার প্রাক্তন কাউন্সিলর, তৃণমূল নেতা রাজেশ সাউয়ের উদ্যোগে ফের ছাত্রছাত্রীরা কলকাতায় যায়। শিক্ষা দফতর জানিয়ে দেয়, ওই ছাত্রছাত্রীদের রেজিস্ট্রেশনই হয়নি। তাই অ্যাডমিট যায়নি। এর পর সোমবার সকাল সাড়ে ১০টা নাগাদ ছাত্রছাত্রী এবং অভিভাবকরা স্কুলের সামনে বিক্ষোভ শুরু করেন। অভিযোগ, তখন পঙ্কজবাবুর এক আত্মীয় পড়ুয়াদের ধাক্কাধাক্কি করেন। এক অভিভাবক হাতে চোট পান। তার পরেই শুরু হয় ভাঙচুর।

এ দিন পঙ্কজবাবুর সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি। তাঁর ভাই অরুণ গুপ্ত বলেন, ‘‘স্কুলের বিষয়ে আমি কিছুই জানি না। কেন অ্যাডমিট পাওয়া গেল না, বলতে পারব না।’’ স্থানীয় সূত্রের খবর, এর আগেও ওই স্কুলের পড়ুয়াদের পরীক্ষা দেওয়া নিয়ে গোলমাল হয়েছে। তখন অন্য স্কুল থেকে ছাত্রছাত্রীদের নাম নথিভুক্ত করিয়ে পরীক্ষা দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছিল। এ বার তা সম্ভব হয়নি। ওই ছাত্রছাত্রীদের পরীক্ষায় বসার বিশেষ ব্যবস্থা করার দাবিতে সোমবার শ্রীরামপুরের মহকুমাশাসককে স্মারকলিপি দেয় এসএফআই।

অতিরিক্ত জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শক কার্যালয়ের এক মহিলা আধিকারিক জানান, শ্রীরামপুর বিদ্যাপীঠ নামে কোনও স্কুল তাঁদের তালিকায় নেই। কে ব্যক্তিগত ভাবে স্কুল চালাবেন, তা দেখার দায়িত্ব তাঁদের নয়। ছাত্রছাত্রীদের অ্যাডমিট না পাওয়া কিংবা স্কুলে ভাঙচুরের ঘটনাও তাঁরা জানেন না। জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শক বললে বিষয়টি নিয়ে পদক্ষেপ করা হবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

madhyamik vandalized
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE