আমেরিকান স্ত্রীর বিরুদ্ধে ‘অজ্ঞাত’ কারণে জারি হওয়া লুক আউট সার্কুলারের বিরুদ্ধে কলকাতা হাই কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন স্বামী। মামলায় বিস্তর শুনানির পরে মঙ্গলবার কেন্দ্রীয় সরকারের কৌঁসুলি আদালতে এসে জানান, তেনজ়িন ডোলকার তানা নামে ওই মহিলার বিরুদ্ধে কোনও লুক আউট সার্কুলার নেই। অভিযোগ ছিল, এ দেশে ঢোকার সময় বেঙ্গালুরু বিমানবন্দরে তেনজ়িনকে প্রথমে আটকানো হয় এবং পরে আমেরিকায় ফেরত পাঠানো হয়েছিল। সেই অভিযোগের কোনও স্পষ্ট ব্যাখ্যা কেন্দ্রের তরফে শোনা যায়নি। এ দিন কেন্দ্রের বক্তব্য শোনার পরে বিচারপতি অমৃতা সিংহ জানান, তেনজ়িনের এ দেশে ঢুকতে কোনও বাধা নেই। মামলারও নিষ্পত্তি করে দেন তিনি।
তেনজ়িনের স্বামী শেনপেন ইয়ুনদ্রুং খেমসার বংশসূত্রে তিব্বতি। তবে তাঁর জন্ম দার্জিলিঙে। ‘ভারতে নাগরিক অধিকারপ্রাপ্ত বিদেশি’ (ওভারসিজ় সিটিজ়েন অব ইন্ডিয়া) পরিচয়পত্র আছে তাঁর। তিনি আন্তর্জাতিক স্তরে চিত্র পরিচালক হিসেবে সমাদৃত। শেনপেনই স্ত্রীকে এ দেশে ঢুকতে দেওয়ার আর্জি জানিয়ে মামলা করেছিলেন। তাঁর আইনজীবী আশিস নিগম চক্রবর্তী জানান, আমেরিকান নাগরিক তেনজ়িন পেশায় ফ্যাশন ডিজ়াইনার। ২০২০ সালে তিনি দার্জিলিঙে আত্মীয়দের কাছে এসেছিলেন। বিভিন্ন বৌদ্ধ মঠেও ঘুরতে যান তিনি। সেই সময়ে অতিমারিজনিত লকডাউনের জেরে আটকে পড়েন তিনি। সেই কারণে পরবর্তী সময়ে নির্দিষ্ট জরিমানা দিয়ে আমেরিকায় ফেরেন তিনি।
সূত্রের খবর, দার্জিলিঙেই তেনজ়িন এবং শেনপেনের সম্পর্কের সূত্রপাত। ২০২৩ সালের জুন মাসে তেনজ়িন ভারতে আসার সময়ে তাঁকে বেঙ্গালুরুতে আটকে আমেরিকায় ফেরত পাঠানো হয়। ২০২৩ সালের ডিসেম্বরে আমেরিকার লাস ভেগাসে শেনপেন এবং তেনজ়িনের বিয়ে হয়।
আদালতের খবর, শেনপেন এবং তেনজ়িন—দু’জনেই বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী। ধর্মীয় রীতি মেনে বিয়ের আচার সম্পূর্ণ করতে এবং পারিবারিক অনুষ্ঠানের জন্য তেনজ়িন ভারতে আসতে চান। কিন্তু ওই ‘লুক আউট সার্কুলার’ সংক্রান্ত জটিলতায় তিনি ভারতে ঢুকতে পারতেন না। কী কারণে ওই সার্কুলার জারি করা হয়েছিল, সে ব্যাপারেও কোনও সদুত্তর মেলেনি বলে কোর্টে অভিযোগ করেছিলেন শেনপেন। সেই অভিযোগের সূত্রেই কেন্দ্রের কাছে বিস্তারিত তথ্য এবং বক্তব্য তলব করেছিলেন বিচারপতি।
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)