Advertisement
E-Paper

CPI: আপত্তি উড়িয়ে বয়স-নীতিতে আরও কঠোর হচ্ছে সিপিআই

সংগাঠনিক স্তরে এই সংক্রান্ত একটি রূপরেখা তৈরি করে বিভিন্ন রাজ্য নেতৃত্বের কাছে পাঠিয়েছে সিপিআইয়ের জাতীয় পরিষদ।

সন্দীপন চক্রবর্তী

শেষ আপডেট: ২৩ মে ২০২২ ০৮:৩৮
প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

বড়সড় আপত্তি উঠেছিল দলের মধ্যেই। কিন্তু আপত্তি মেনে নেওয়া দূরে থাক, আরও কঠোর ভাবে সংগঠনে বয়স-নীতি কার্যকর করতে উদ্যোগী হল সিপিআই!

সিপিএম ইতিমধ্যেই দলে বয়স-নীতি চালু করে দিয়েছে। কান্নুরে সাম্প্রতিক পার্টি কংগ্রেস থেকে দলের কেন্দ্রীয় কমিটি স্তরেও সেই নিয়ম কার্যকর হয়েছে, সংশোধনী আনা হয়েছে দলের গঠনতন্ত্রে। সিপিএমের চেয়ে আরও এক ধাপ এগিয়েই বয়স-নীতির পরিকল্পনা করেছিল সিপিআই। যা নিয়ে দলের অন্দরে প্রশ্ন তুলেছিলেন নেতাদের বড় একটি অংশ। আপত্তি জানিয়ে চিঠি পাঠানো হয়েছিল সিপিআইয়ের কেন্দ্রীয় নেতৃত্বকে। তার পরে সংগাঠনিক স্তরে এই সংক্রান্ত একটি রূপরেখা তৈরি করে বিভিন্ন রাজ্য নেতৃত্বের কাছে পাঠিয়েছে সিপিআইয়ের জাতীয় পরিষদ। দলীয় সূত্রের খবর, সেই রূপরেখায় বয়স-নীতি শিথিল করার কোনও কথা বলা হয়নি। বরং, আরও কিছু নতুন শর্ত বেঁধে দেওয়া হয়েছে!

জাতীয়, রাজ্য বা জেলা পরিষদ-সহ বিভিন্ন স্তরে নতুন কমিটি গড়ার সময়ে অন্তত ৫০% সদস্যের বয়স ৪০ বছরের মধ্যে রাখার কথা বলেছিল সিপিআই। সেই নির্দেশিকা বহাল রাখার পাশাপাশিই এ বারের নতুন রূপরেখায় বলা হয়েছে, বিভিন্ন কমিটিতে অন্তত ১৫% মহিলা মুখ রাখতে হবে। শুধু দল হিসেবে সিপিআই-ই নয়, গণ-সংগঠনেও নতুন কমিটি গড়ার সময়ে কিছু নিয়ম মাথায় রাখতে নির্দেশে দেওয়া হয়েছে। যেমন, যুব সংগঠন এআইওয়াইএফ-এর সদস্যপদ দেওয়ার সময়ে বয়স থাকতে হবে অবশ্যই ৪০ বছরের নীচে। ছাত্র সংগঠন এআইএসএফের সদস্যপদ পেতে পারেন শুধু তাঁরাই, যাঁরা কোনও ক্যাম্পাসে এখনও পড়াশোনায় যুক্ত আছেন। ছাত্র জীবন চুকে যাওয়ার পরেও ছাত্র সংগঠনের পদ ধরে রাখার দিন শেষ করতে চাইছেন সিপিআইয়ের কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। তাঁদের যুক্তি, ছাত্র ও যুব সংগঠনই মূল দলের ভিত্তি এবং ক্যাডার সরবরাহকারী হিসেবে কাজ করে। তাই দলের চেহারা বদলাতে গেলে একেবারে গোড়ার জায়গা থেকেই ধরতে হবে।

অন্ধ্রপ্রদেশের বিজয়ওয়াড়ায় আগামী ১৪ থেকে ১৮ অক্টোবর হতে চলেছে সিপিআইয়ের ২৪তম পার্টি কংগ্রেস। তার আগে সিপিআইয়ের জাতীয় পরিষদ দলের বিভিন্ন স্তরের কমিটির ক্ষেত্রে বয়স-নীতির খসড়া বিভিন্ন রাজ্যে পাঠিয়েছিল আলোচনার জন্য। জাতীয় পরিষদে ওই খসড়া প্রস্তাব পাশ হয়ে গেলেও রাজ্য স্তরে আলোচনা পৌঁছতেই দেখা দিয়েছিল বির্তক। বাংলার চেয়েও এ ক্ষেত্রে বেশি শোরগোল হয়েছিল কেরলে। এ বার আঞ্চলিক পরিষদ স্তরের সম্মেলন থেকে মেনে চলার জন্য যে রূপরেখা জারি করা হয়েছে, তাতে সেই বিতর্কে জল ঢেলে দেওয়া হয়েছে। তার প্রেক্ষিতে সিপিআইয়ের কেরল রাজ্য সম্পাদক কানম রাজেন্দ্রনের বক্তব্য, ‘‘ভেবেচিন্তেই দল এই বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিয়েছে। সামনে এগোনোর জন্য এখন এ ছাড়া আর পথ নেই। নতুনদের জন্য পুরনোরা জায়গা ছেড়ে দিচ্ছেন, সংসদীয় রাজনীতিতে এই প্রথা চালু আছেই।’’

সর্বশেষ রূপরেখা অনুযায়ী, সিপিআইয়ের জাতীয় ও রাজ্য পরিষদে বয়সের ঊর্ধ্বসীমা হবে ৭৫। জেলা ও তার নীচের কমিটিতে ৬৫। এই সব কমিটিতেই ৫০% সদস্যের বয়স হতে হবে ৪০-এর মধ্যে। রাজ্য স্তরে দু’জন সহকারী সম্পাদক থাকলে এক জনের বয়স ৬৫ ও অন্য জনের ৫০-এর মধ্যে হতে হবে। একই ভাবে জেলায় সহকারী সম্পাদকদের বয়স এক জনের ক্ষেত্রে ৬০-এর মধ্যে ও অপর জনের ৪০-এর মধ্যে থাকতে হবে। দলের এক কেন্দ্রীয় নেতার কথায়, ‘‘সাবেক কমিউনিস্ট পার্টি মানেই নেতৃত্বে সব প্রবীণ মুখ, বছর বছর ধরে চলে আসা এই ধারণা এখন সময়ের দাবিতেই পাল্টাতে হবে!’’

CPM Left Front Kannur
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy