প্রতীকী ছবি।
দলের রাজ্য কমিটিতে নেওয়া হয়েছিল এক ঝাঁক নতুন মুখ। প্রত্যাশিত ভাবেই এ বার দলের রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীতেও জেলার মুখ বাড়াল সিপিএম। রাজ্য নেতৃত্বে গুরুত্ব বাড়ল উত্তরবঙ্গেরও। তারই পাশাপাশি, এ রাজ্যে অরবিন্দ কেজরিওয়ালের আম আদমি পার্টি (আপ) যে ভাবে নতুন উদ্যমে সংগঠন প্রসারে নেমেছে, তাতে উদ্বেগের সুর উঠে এল সিপিএমের রাজ্য কমিটিতে।
বাঁকুড়ার জনজাতি নেত্রী তথা কেন্দ্রীয় কমিটির নতুন সদস্য দেবলীনা হেমব্রম, দার্জিলিঙের প্রাক্তন জেলা সম্পাদক জীবেশ সরকার, চা-বলয়ে শ্রমিক সংগঠনের নেতা, জলপাইগুড়ির জিয়াউল আলম এবং হুগলির জেলা সম্পাদক দেবব্রত ঘোষ— এই চার জনকে জায়গা দেওয়া হয়েছে সিপিএমের নতুন রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীতে। বিদায়ী রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীতে উত্তরবঙ্গের প্রতিনিধি ছিলেন অশোক ভট্টাচার্য। তাঁর জায়গায় অশোকবাবুরই ঘনিষ্ঠ নেতা হিসেবে পরিচিত জীবেশবাবুর পাশাপাশি জলপাইগুড়ির জিয়াউলকে রাজ্য নেতৃত্বে তুলে এনে উত্তরবঙ্গের সঙ্গে সংখ্যালঘু মুখের প্রতিনিধিত্বও বাড়িয়ে নিয়েছে সিপিএম।
তবে গত বারের ১৭ সদস্যের রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর কলেবর এ বার ছোট হয়ে ১৫ জনের হয়েছে। বয়স-নীতির কারণে অব্যাহতি নেওয়া বিমান বসু, সূর্যকান্ত মিশ্র, অশোকবাবু, রবীন দেব, মৃদুল দে ও মিনতি ঘোষের (৬ জন) জায়গায় নতুন এসেছেন চার জন। বাকি ১১ জন পুরনো। তাঁদের মধ্যে আছেন রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম, রামচন্দ্র ডোম, শ্রীদীপ ভট্টাচার্য, সুজন চক্রবর্তী, অমিয় পাত্র, আভাস রায়চৌধুরী, শমীক লাহিড়ী, সুমিত দে, অনাদি সাহু, কল্লোল মজুমদার ও পলাশ দাস। আলিমুদ্দিন স্ট্রিটে বৃহস্পতিবার থেকে শুরু হওয়া রাজ্য কমিটির বৈঠকে নতুন রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলী গঠিত হওয়ার দিনে উপস্থিত ছিলেন দলের প্রাক্তন রাজ্য সম্পাদক সূর্যবাবু। যদিও তিনি এখন কমিটিতে নেই। বর্ষীয়ান নেতা বিমানবাবু অবশ্য দো’তলায় দফতরে থাকলেও চার তলায় বৈঠকে যাননি।
সেলিম রাজ্য সম্পাদক হওয়ার পরে নতুন রাজ্য কমিটির প্রথম পূর্ণাঙ্গ হচ্ছে এখনই। দলীয় সূত্রের খবর, বৈঠকের শুরুতে এ দিন রিপোর্ট পেশ করতে গিয়ে প্রারম্ভিক বার্তায় রাজ্য সম্পাদক বলেছেন, প্রায় সব জেলাতেই সদস্যপদ কমেছে। কিন্তু খাতায়-কলমে সদস্য থাকলেও অনেকে ‘নিষ্ক্রিয়’ থাকছেন। সদস্যপদ নবীকরণের ক্ষেত্রে তাই যাচাই করার প্রক্রিয়া আরও কঠোর ভাবে চালাতে হবে। বৈঠকের প্রথম দিনে বিভিন্ন জেলার নেতারাই মেনে নিয়েছেন, সংগঠনের নিচু তলায় সক্রিয়তার অভাব এখনও দলকে ভোগাচ্ছে। সেই সঙ্গেই কোচবিহার থেকে শুরু করে ঝাড়গ্রাম পর্যন্ত বেশ কয়েকটি জেলার নেতারা বৈঠকে জানিয়েছেন, পঞ্জাবে সাফল্যের পরে আপ নতুন উদ্যমে এ রাজ্যে সংগঠন তৈরি করতে নেমেছে। যে হেতু তারা এ রাজ্যে নতুন শক্তি, তাদের ‘দুর্নীতিমুক্ত রাজনীতি’র ডাকে মানুষের সাড়া দেওয়ার প্রাথমিক প্রবণতাও দেখা যাচ্ছে। আপ নিজের লক্ষ্যে এগোতে পারলে বিরোধী পরিসরে ফের আরও একটি শক্তির জন্ম হতে পারে, যা বামেদের পক্ষে উদ্বেগের কারণ।
জেলায় জেলায় আপ এখন ছাউনি খাটিয়ে সদস্যপদ অভিযান করছে, যার নাম দেওয়া হয়েছে ‘ক্যানপি ক্যাম্পেন’। বারাসতে এ দিন শাসক দলের কর্মী-সমথর্কেরা ‘আম আদমির চামড়া, গুটিয়ে দেব আমরা’ স্লোগান দিয়ে তাঁদের কর্মসূচি ভণ্ডুল করার চেষ্টা করেছেন বলে আপ নেতৃত্বের অভিযোগ। তৃণমূল কংগ্রেসের নেতা তাপস রায় অবশ্য বলেছেন, ‘‘বাংলার রাজনীতিতে ওদের কোনও গুরুত্ব নেই। তৃণমূল ওদের বাধা দিতে যাবে কেন?’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy