প্রতীকী ছবি।
মেয়াদ সম্প্রসারণের সম্মতি দেওয়ার পরেও রাজ্যের মুখ্যসচিবকে দিল্লিতে তলব করা নিয়ে যে ঘটনা ঘটল, তার প্রেক্ষিতে ফের অ-বিজেপি দলগুলির কেন্দ্র-বিরোধী বৃহত্তর লড়াইয়ের ক্ষেত্র প্রস্তুত হল। কেন্দ্রের পদক্ষেপের বিরোধিতা করেছিল সিপিএম ও কংগ্রেস। সেই অবস্থানই বজায় রেখে সোমবারও তারা জানিয়ে দিয়েছে, এই ক্ষেত্রে কেন্দ্রকে প্রত্যাখ্যান করে রাজ্য ঠিক কাজই করেছে এবং যুক্তরাষ্ট্রীয় ব্যবস্থায় রাজ্যের অধিকারের প্রশ্নে তাঁরা বৃহত্তর লড়াই চালিয়ে যেতেও প্রস্তুত।
বাম ও কংগ্রেস নেতৃত্বের বক্তব্য, যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোয় রাজ্য প্রশাসনের শীর্ষ স্থানীয় আমলাকে দিল্লিতে কাজের জন্য দরকার হলে রাজ্যের মতামত নেওয়া জরুরি ছিল। কিন্তু মুখ্যসচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়ের মেয়াদ বৃদ্ধির সম্মতি দিয়ে আবার তাঁকে যে ভাবে দিল্লিতে তলব করা হয়েছিল, তার মধ্যে কেন্দ্রের ‘গা-জোয়ারি’ মনোভাব স্পষ্ট ছিল। রাজ্য সরকার কেন্দ্রের ওই আচরণ মেনে না নিয়ে ঠিক কাজই করেছে বলে তাঁদের মত। সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সুজন চক্রবর্তীর বক্তব্য, ‘‘কেন্দ্র যে গা-জোয়ারি মনোভাব দেখাচ্ছিল, তা মেনে নেওয়ার কোনও কারণ ছিল না। মেয়াদ বৃদ্ধির বিনিময়ে কেন্দ্র গা-জোয়ারি দেখাচ্ছিল, মুখ্যসচিব মেয়াদ সম্প্রসারণে না গিয়ে অবসর নিয়েছেন। ঠিকই আছে।’’ তাঁর আরও বক্তব্য, ‘‘তবে এখন মহামারি পরিস্থিতিতে কেন্দ্র ও রাজ্য, সব সরকারেরই উচিত মানুষকে বাঁচানোর লক্ষ্যে কাজ করা।’’
কংগ্রেস সাংসদ প্রদীপ ভট্টাচার্যও বলেছেন, ‘‘রাজ্যের অফিসারকে ছাড়া যাবে কি না, সেটা রাজ্য সরকারই ঠিক করে। কেন্দ্রের এখানে কিছু করার নেই। যুক্তরাষ্ট্রীয় ব্যবস্থায় একটি রাজ্যের মুখ্যসচিবকে ছেড়ে দেওয়ার মতো পরিস্থিতি আছে কি না, সেটা তো রাজ্যই ঠিক করবে। এই ক্ষেত্রে রাজ্যের সঙ্গে আলোচনা না করে কেন্দ্র একতরফা সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দিতে চেয়েছিল। সেখানে রাজ্য সরকার যা করেছে, ঠিকই করেছে। অন্য রাজ্যেও অতীতে এমন সিদ্ধান্ত হয়েছে।’’
বিরোধীদের এই অবস্থানকে স্বাগত জানিয়েই শাসক দল তৃণমূল মোদী সরকারের ‘জন-বিরোধী’ নানা অবস্থানের বিরুদ্ধেই অ-বিজেপি দলগুলির ঐক্যবদ্ধ লড়াইয়ের ডাক দিয়েছে। তৃণমূল সাংসদ সুখেন্দু শেখর রায় এ দিন টুইটে বলেছেন, ‘‘মুখ্যসচিব অবসর গ্রহণের পরে তাঁকে তিনবছরের জন্য নিজের মুখ্য উপদেষ্টা নিয়োগ করে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ‘মাস্টারস্ট্রোক’ দিয়েছেন। জন-বিরোধী মোদী সরকারের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ পদক্ষেপের জন্য এর মাধ্যমেই আহ্বান জানানো হচ্ছে। ‘হম লড়েঙ্গে, হম জিতেঙ্গে, হম জিয়েঙ্গে’— এটাই এখন এই যুদ্ধের মন্ত্র।’’ অন্যায়ের বিরুদ্ধে যুদ্ধে মুখ্যমন্ত্রীর ‘অদম্য মনোভাবের’ জন্য তাঁকে কুর্নিশও জানিয়েছেন সুখেন্দুবাবু।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy