বাংলার শাসনক্ষমতা বামফ্রন্টের হাত থেকে চলে যাওয়ার পর থেকেই নিজেদের দলকে সময়োপযোগী করে তুলতে চাইছে সিপিএম। সেই লক্ষ্যেই এবার এলজিবিটিকিউ-দের নিয়ে নতুন গণ সংগঠন গড়ছে তারা। নতুন গণ সংগঠনটির নাম দেওয়া হয়েছে ‘ডেমোক্রেটিক অ্যাসোসিয়েশন অব এলজিবিটিকিউআইএ+’। সম্প্রতি কলকাতায় সিপিএমের সারা ভারত মহিলা গণ সংগঠনের ইলিয়ট রোডের অফিসে এলজিবিটিকিউআইএ+-এর সম্মেলন হয়। সেই সম্মেলনে ১৯ জনের একটি প্রস্তুতি কমিটি তৈরি করা হয়েছে।
ওই সম্মেলনে প্রস্তুতি কমিটির আপাতত নাম দেওয়া হয়েছে ‘এলজিবিটিকিউ+ গণতান্ত্রিক সমিতি’। দু’জন যুগ্ম আহ্বায়ক হয়েছেন মহিলা সমিতির সভানেত্রী কণীনিকা ঘোষ ও অপ্রতিম রায়। সিপিএমের নানা সংগঠনের প্রতিনিধিরাও হাজির ছিলেন ওই সম্মেলনে। হাজির হয়েছিলেন সিপিএম নেতা ফুয়াদ হালিম, দলের ছাত্রনেতা দেবাঞ্জন দে এবং নেত্রী বর্ণনা মুখোপাধ্যায় প্রমুখ।
সম্মেলনে সিদ্ধান্ত হয়েছে নিজস্ব ও স্বতন্ত্র পথে বামপন্থীদের লড়াইয়ের সঙ্গী হবে নতুন সংগঠন। সংগঠন বিস্তারের জন্য স্লোগান, দাবিদাওয়া, গঠনতন্ত্র, সংবিধান, পতাকা ও কর্মসূচি তৈরির মতো প্রাথমিক কাজগুলি করবে ওই কমিটি। যাবতীয় কাজ শেষ হয়ে গেলে পূর্ণাঙ্গ রূপে হবে একটি সম্মেলন। সম্মেলনে প্রস্তুতি কমিটি গঠনের লক্ষ্যে একটি রিপোর্ট পেশ করেন অপ্রতিম। ওই রিপোর্টে যেমন এলজিবিটিকিউ-দের উপর নির্যাতনের কথা বলা হয়েছে, তেমনই উল্লেখ করা হয়েছে বিজেপি-র জনবিরোধী অর্থনীতির কথাও।
এখনও পর্যন্ত দেশের রাজনীতিতে যৌনতার নিরিখে প্রান্তিক গোষ্ঠীদের জন্য কোনও রাজনৈতিক দলই উদ্যোগী হয়নি। সেদিক থেকে দেখতে হলে ভারতের রাজনীতিতে সিপিএমের এই গণ সংগঠন এক নতুন দিশা দেখা বলেই মনে করছে বাংলার রাজনীতির কারবারিরা। সিপিএমের এক রাজ্য নেতার কথায়, ‘‘বামপন্থীরা সবসময়েই অত্যাচারিত, নিপীড়িতদের পাশে দাঁড়িয়ে শোষক শ্রেণির বিরুদ্ধে লড়াই করেছে। এলজিবিটিকিউ-দের উপরেও যদি কোনও রকম অত্যাচার হয়, তাহলেও, বামপন্থীরা পিছিয়ে থাকবেন না। তাঁদের জন্য বামপন্থীরাই মঞ্চ তৈরির করার কাজ করছে, এই সম্মেলন তারই প্রমাণ।’’