Advertisement
E-Paper

বিজয়ন ‘ব্যতিক্রম’ই, গুরুত্ব আরও নতুন মুখে

ত্রিপুরার প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী মানিক সরকারের পরে কেরলের বর্তমান মুখ্যমন্ত্রী বিজয়ন, পলিটব্যুরোর দুই সদস্যের ক্ষেত্রে বয়স-নীতির ‘ব্যতিক্রম’ রাখল দুই রাজ্যের সিপিএম।

সিপিএমের রাজ্য সম্মেলনের পরে মিছিলে প্রকাশ কারাট ও পিনারাই বিজয়ন। কোল্লমে।

সিপিএমের রাজ্য সম্মেলনের পরে মিছিলে প্রকাশ কারাট ও পিনারাই বিজয়ন। কোল্লমে। —নিজস্ব চিত্র।

সন্দীপন চক্রবর্তী

শেষ আপডেট: ১০ মার্চ ২০২৫ ০৬:৩৯
Share
Save

নতুন তালিকায় প্রথম নাম পিনারাই বিজয়নের! শেষ পর্যন্ত ‘ব্যতিক্রম’ করেই দলের রাজ্য কমিটি ও রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীতে বিজয়নকে রেখে দিল কেরল সিপিএম। তার জেরে আসন্ন পার্টি কংগ্রেসে একই রকম ব্যতিক্রমী পথ খোঁজার জন্য চাপ বাড়ল দলের কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের উপরে। ত্রিপুরার প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী মানিক সরকারের পরে কেরলের বর্তমান মুখ্যমন্ত্রী বিজয়ন, পলিটব্যুরোর দুই সদস্যের ক্ষেত্রে বয়স-নীতির ‘ব্যতিক্রম’ রাখল দুই রাজ্যের সিপিএম।

বাংলার পাশাপাশি আগামী বছর কেরলেও বিধানসভা ভোট। বিজয়নের নেতৃত্বে পরপর দু’বার বাম সরকার ক্ষমতায় এসেছে দক্ষিণী রাজ্যে। তৃতীয় বার সরকার ধরে রাখার লড়াইয়ে বিজয়নকে সামনে রাখতে চেয়েই তাঁর জন্য সাংগঠনিক নিয়মে ছাড় দেওয়া হয়েছে বলে সিপিএম সূত্রের ব্যাখ্যা। সিপিএমের কেরল রাজ্য সম্মেলনে উপস্থিত দলের পলিটব্যুরো সদস্য বৃন্দা কারাটের মতে, ‘‘পিনারাই কেরলে সরকারকে নেতৃত্ব দিচ্ছেন, সেটা মাথায় রাখতে হবে। ব্যতিক্রম বিশেষ ক্ষেত্রেই হয়। তবে ব্যতিক্রম কোথায় কী হবে বা হবে না, এই যাবতীয় বিষয়েও পার্টি কংগ্রেসে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হবে।’’

সিপিএমের বয়স-নীতি অনুযায়ী, ৭৫ পেরোলে কেন্দ্রীয় কমিটি এবং ৭২ অতিক্রম করলে রাজ্য কমিটিতে থাকা যায় না। বিজয়ন এখন আশি ছুঁই ছুঁই। তবে সম্মেলনের আগে কেরল সিপিএমের বিদায়ী রাজ্য কমিটির প্রস্তাব মেনে নতুন রাজ্য কমিটি হয়েছে তাঁকে রেখেই। কোল্লমে রাজ্য সম্মেলনের শেষ দিনে যে ৮৯ জনের রাজ্য কমিটি গঠিত হয়েছে, তাতে বিজয়নের ‘প্রভাব’ স্পষ্টই। বিজয়নের মন্ত্রিসভার সব সদস্যই এখন দলের রাজ্য কমিটির সদস্য। যে কয়েক জন বাইরে ছিলেন, তাঁদের এ বার কমিটিতে নিয়ে নেওয়া হয়েছে। রাজ্য সম্পাদক হয়েছেন এম ভি গোবিন্দনই। গত সম্মেলনের কয়েক মাস পরে তৎকালীন রাজ্য সম্পাদক কোডিয়ারি বালকৃষ্ণনের অসুস্থতার কারণে গোবিন্দন দায়িত্ব পেয়েছিলেন রাজ্য কমিটিতে। সেই অর্থে রাজ্য সম্মেলন থেকে এ বারই প্রথম তিনি নির্বাচিত হলেন।

কেরলে দলের ভবিষ্যতের লড়াইয়ে নজর রেখে রাজ্য কমিটিতে ১৭টি নতুন মুখ এনেছে সিপিএম। তার মধ্যে নতুন মহিলা মুখ হিসেবে এসেছেন মন্ত্রী আর বিন্দু এবং বিধায়ক কে শান্তাকুমারী। রাজ্যসভার সাংসদ জন ব্রিটাস, ডিওয়াইএফআইয়ের রাজ্য সভাপতি ও রাজ্য সম্পাদক ভি বসিফ এবং ভি কে সানোজ আছেন অন্তর্ভুক্তির তালিকায়। বয়স ও স্বাস্থ্যের কারণে অব্যাহতি নিয়েছেন এ কে বালন, পি কে শ্রীমতি-সহ ৬ জন।

ত্রিপুরার মতো রাজ্য সম্মেলনেই রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলী গঠন করে নিয়েছে কেরল সিপিএমও। সেখানে এ বার জায়গা পেয়েছেন রাজ্যের প্রাক্তন স্বাস্থ্যমন্ত্রী কে কে শৈলজা। তাঁর পাশাপাশি এম ভি জয়রাজন এবং সি এন মোহনন ১৭ জনের রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীতে নতুন।

সূত্রের খবর, সম্মেলনে রাজ্য সম্পাদক গোবিন্দনকে প্রতিনিধিদের প্রভূত সমালোচনার মুখে পড়তে হয়েছে। তাঁর ঘন ঘন সিদ্ধান্ত বদলের প্রবণতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন অনেকেই। তবে জবাবি ভাষণে গোবিন্দন বলেছেন, সম্মেলনে আত্মসমালোচনা হবেই এবং সেখান থেকেই সংশোধন করে সামনের দিকে এগোতে হবে। তাঁর মতে, রাজ্য সম্পাদকের সমালোচনাও ‘স্বাস্থ্যকর প্রবণতা’। এই দায়িত্ব তিনি আগে পালন করেননি, কাজ করতে গিয়ে সমালোচনা থেকেই ত্রুটি শোধরানোর চেষ্টা হবে। তবে শুধু নেতাদের সমালোচনাই নয়, নিজেদের কাজে নজর রাখার কথাও প্রতিনিধিদের মনে করিয়ে দিয়েছেন রাজ্য সম্পাদক।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

CPM Left

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

{-- Slick slider script --}}