Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪
CPIM

CPIM: তৃণমূলের সঙ্গে নৈকট্য বাড়িয়ে জোট নিয়ে সুর বদলাচ্ছে কংগ্রেস, উভয়সঙ্কটে সিপিএম

রাজ্যে বিধানসভা ভোটের প্রচারে বিজেপি-বিরোধিতায় তাদের ঘাটতি ছিল, সেই ‘ভুল’ নির্বাচনী পর্যালোচনায় কবুল করে নিয়েছে সিপিএম।

ফাইল চিত্র।

ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৪ জুলাই ২০২১ ০৭:১৯
Share: Save:

বিধানসভা নির্বাচনের পরে কংগ্রেসের সঙ্গে তৃণমূলের নৈকট্য যত বাড়ছে, ততই বাড়ছে সিপিএমের বিড়ম্বনাও! বস্তুত, নির্বাচনে বেনজির বিপর্যয়ের পরে আলিমুদ্দিন স্ট্রিটের সামনে এখন উভয় সঙ্কট। আগামী লোকসভা নির্বাচনের আগে তাদের মাথায় রাখতে হচ্ছে, বিজেপির বিরুদ্ধে দলের অবস্থানে কোনও দুর্বলতার বার্তা যাতে না যায়। আবার বিজেপিকে রোখার নামে তৃণমূলের দোসর হয়ে ওঠার বার্তাও তাদের রুখতে হচ্ছে! শেষ পর্যন্ত বাম-সঙ্গ ছেড়ে কংগ্রেস তৃণমূলের দিকেই চলে গেলে ‘প্ল্যান বি’ ভেবে রাখতে হচ্ছে সিপিএমের রাজ্য নেতৃত্বকে।

রাজ্যে বিধানসভা ভোটের প্রচারে বিজেপি-বিরোধিতায় তাদের ঘাটতি ছিল, সেই ‘ভুল’ নির্বাচনী পর্যালোচনায় কবুল করে নিয়েছে সিপিএম। কিন্তু বাম মহলের একাংশের সমালোচনার মুখেও কংগ্রেসের সঙ্গে জোট গড়ে লড়াইয়ের সিদ্ধান্তের পক্ষেই সওয়াল করে এসেছেন সিপিএম নেতৃত্ব। প্রথমে এআইসিসি এবং তার সুর ধরে প্রদেশ কংগ্রেসের শীর্ষ নেতৃত্বও তৃণমূলের সঙ্গে নৈকট্যের ইঙ্গিত দিতে শুরু করায় দলের অভ্যন্তরে পরিস্থিতি বিশ্লেষণ করেছেন আলিমুদ্দিনের নেতারা। ঠিক হয়েছে, আপাতত বামফ্রন্ট ও বৃহত্তর বাম ঐক্যের মঞ্চ থেকেই আন্দোলনের পথে এগোনো হবে। তার পরে জোট নিয়ে কংগ্রেস কোনও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিলে তখন রাজ্যে বিজেপি ও তৃণমূল-বিরোধী পরিসর দখলের লক্ষ্যে চিরাচরিত বাম ঐক্য নিয়েই লড়াই হবে।

একুশে জুলাইয়ের ভার্চুয়াল সমাবেশ থেকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বৃহত্তর জোট গড়ার ডাক এবং সেই কর্মসূচিতে পি চিদম্বরম, দিগ্বিজয় সিংহদের উপস্থিতির পরে প্রদেশ কংগ্রেসের একাংশ তৃণমূলের হাত ধরার পক্ষে সুর জোরালো করছেন। এআইসিসি-র নির্দেশে পেগাসাস-কাণ্ডের প্রতিবাদে সরব হতে গিয়ে বিধান ভবনে শুক্রবারই প্রদেশ কংগ্রেসের সহ-সভাপতি দীপ্তিমান ঘোষের মতো নেতা মন্তব্য করেছেন, মমতার দিকে তাঁরা হাত বাড়িয়েই রেখেছেন। তৃণমূল নেত্রী প্রথমে হাত সরিয়ে নিলেও ‘গাঁধীবাদী’ হিসেবে তাঁরা হাত প্রসারিতই রাখবেন! কংগ্রেস নেতাদের মুখে যত এমন কথা শোনা যাচ্ছে, বিড়ম্বনা বাড়ছে বিমান বসু, সূর্যকান্ত মিশ্রদের। দলের কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের সঙ্গে রীতিমতো লড়াই করে ২০১৬ সালে তাঁরা রাজ্যে কংগ্রেসের সঙ্গে সমঝোতা করেছিলেন। কিছু জেলা নেতৃত্বের গোড়া থেকেই কংগ্রেস-প্রশ্নে আপত্তি ছিল। দলের সেই অংশ এবং ফ্রন্ট শরিকদের একাংশ বিধানসভা ভোটের পরে আবার সূর্যবাবুদের জোট-সিদ্ধান্তকে ফের নিশানা করছে।

এই পরিস্থিতিতে সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সুজন চক্রবর্তীর বক্তব্য, ‘‘দেশে বিজেপিকে রোখার লড়াই অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, সেখানে কোনও শিথিলতা চাই না। কিন্তু রাজ্যে তৃণমূলের বিরোধিতা থেমে যেতে পারে না। আগ বাড়িয়ে আমরা কোনও জোট ভাঙব না। তবে তেমন কিছু ঘটলে আমাদের ‘প্ল্যান বি’ ভেবে রাখতেই হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Congress CPIM
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE