E-Paper

মতুয়া-গড়ে সাড়া, আজ শেষ ‘বাংলা বাঁচাও যাত্রা’

মতুয়া-অধ্যুষিত গাইঘাটা ও বনগাঁর পরে স্বরূপনগর, বাদুড়িয়ার মতো সীমান্তবর্তী এলাকা দিয়ে এ দিন এগিয়েছে সিপিএমের যাত্রা। এসআইআর আবহে এমনিতেই সংবেদনশীল বাংলাদেশ-লাগোয়া এই জায়গাগুলি। সেখানে সিপিএমের সমাবেশে ভিড় হয়েছিল চোখে পড়ার মতো।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৭ ডিসেম্বর ২০২৫ ০৫:৩৮
গাইঘাটার সমাবেশে সিপিএম নেতা - নেত্রীরা। ‘বাংলা বাঁচাও যাত্রা’য়।

গাইঘাটার সমাবেশে সিপিএম নেতা - নেত্রীরা। ‘বাংলা বাঁচাও যাত্রা’য়। — নিজস্ব চিত্র।

বিজেপির সাম্প্রতিক কালের ‘শক্ত ঘাঁটি’ মতুয়া-গড়ে ভিড় টানল সিপিএমের ‘বাংলা বাঁচাও যাত্রা’। গত ১৯ দিন ধরে চলা এই যাত্রা শেষের আগের দিন অশোকনগর থেকে শুরু হয়ে পৌঁছয় হাবড়া, গাইঘাটা ও বনগাঁর চাঁদপাড়ায়। ঠাকুরবাড়ি ঘুরে মঙ্গলবারের ওই যাত্রায় ছিলেন সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সুজন চক্রবর্তী, মীনাক্ষী মুখোপাধ্যায় প্রমুখ। যাত্রায় মতুয়া সম্প্রদায়ের মানুষের নিজস্ব সংস্কৃতিকে সঙ্গে করে উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মতো। সেলিম গুরুচাঁদ ঠাকুরের মূর্তিতে মালা দেন। হরিচাঁদ, গুরুচাঁদ ঠাকুরের মন্দিরে প্রণাম করেন সুজন। বিধানসভা নির্বাচনের আগে বিজেপির শক্ত গড়ে বাম মিছিলে এই সাড়া যথেষ্ট ইঙ্গিতপূর্ণ বলে আশাবাদী সিপিএম শিবির। ভোটার তালিকার বিশেষ নিবিড় সংশোধনের (এসআইআর) সময়ে সমস্যায় পড়ে মতুয়াদের মধ্যে বিজেপি-বিরোধী একটি অংশ অনশন কর্মসূচি করেছিল। তারা সিপিএম, কংগ্রেসের মতো দলগুলিকে আমন্ত্রণ করেছিল। তখন থেকেই সুজনদের যাতায়াত বেড়েছে মতুয়া-গড়ে।

মতুয়া ঠাকুরবাড়ি।

মতুয়া ঠাকুরবাড়ি। — নিজস্ব চিত্র।

মতুয়া-অধ্যুষিত গাইঘাটায় মীনাক্ষী বলেন, ‘‘যারা কাগজ দেখতে চাইছে, তাদের আমাদের তাড়াতে হবে! যাদের কাগজ দেখতে চাইছে, তাদের রক্ষা করার দায়িত্ব আমাদের। ঠাকুর হরিচাঁদ-গুরুচাঁদ সারা জীবন লড়াই করেছেন নিম্ন বর্গের মানুষের উন্নতির জন্য। মতুয়াদের ব্যবহার করে এখন কেউ কেউ নিজেদের রাজনৈতিক অস্তিত্ব রক্ষা করার কাজ করছে। আমাদের সংবিধান আমাদের অধিকার দিয়েছে নিজের ইচ্ছা মতো ধর্ম মানতে। মানুষ আজ হাতে কাগজ নিয়ে ঘুরছে, এই আতঙ্ক থেকে মানুষকে বাইরে নিয়ে আসতে হবে। কোনও মানুষের নাগরিকত্ব নিয়ে যদি প্রশ্ন তোলে, আমরা সবার আগে পথে নামব।’’ পরে স্বরূপনগরের তেঁতুলিয়া ফুটবল মাঠের সভা থেকে সেলিম এসআইআর প্রসঙ্গ টেনে বলেছেন, ‘‘সংখ্যালঘুদের বলেছিলাম, ভয় পাবেন না। নির্বাচন কমিশন যদি কাগজ চায়, তা হলে আপনাদের বাবা-ঠাকুরদার যে কবরস্থান বাড়ির পিছনে আছে, সেখান থেকে মাটি তুলে ডিএনএ টেস্ট করতে বলবেন! পূর্বপুরুষদের সঙ্গে সংযোগ নির্বাচন কমিশন পেয়ে যাবে।’’

মতুয়া-অধ্যুষিত গাইঘাটা ও বনগাঁর পরে স্বরূপনগর, বাদুড়িয়ার মতো সীমান্তবর্তী এলাকা দিয়ে এ দিন এগিয়েছে সিপিএমের যাত্রা। এসআইআর আবহে এমনিতেই সংবেদনশীল বাংলাদেশ-লাগোয়া এই জায়গাগুলি। সেখানে সিপিএমের সমাবেশে ভিড় হয়েছিল চোখে পড়ার মতো। দেগঙ্গা হয়ে পানিহাটিতে এসে রাতের বিরতি হয়েছে যাত্রায়। কোচবিহারের তুফানগঞ্জ থেকে গত ২৯ নভেম্বর শুরু হওয়া যাত্রা আজ, বুধবার কামারহাটিতে শেষ হবে। তার আগে নিউটাউনে জ্যোতি বসু গবেষণা কেন্দ্রে স্থায়ী পদযাত্রীদের সংবর্ধনা জানাবেন বর্ষীয়ান সিপিএম নেতা বিমান বসু। কামারহাটির দেওয়ান বাগান ময়দানে সমাপ্তি সমাবেশে যোগ দিতে সিপিএমের কলকাতা জেলা কমিটির উদ্যোগে সিঁথি থেকে মিছিলের ডাক দেওয়া হয়েছে।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

CPM

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy