Advertisement
০৮ মে ২০২৪

শূন্য গোয়ালের নীতি মেনে বহিষ্কার সিপিএমে

ভাঙনের মধ্যে দাঁড়িয়েও দলে অন্দরে রাজ্য সম্পাদকের বার্তা ছিল, দুষ্ট গরুর চেয়ে শূন্য গোয়াল ভাল। সেই নীতি মেনেই বর্ধমান জেলার প্রভাবশালী নেতা আইনুল হককে সরাসরি দল থেকে বহিষ্কার করল সিপিএম।

আইনুল হক

আইনুল হক

নিজস্ব সংবাদদাতা
বর্ধমান শেষ আপডেট: ১৭ অক্টোবর ২০১৬ ০৪:০৮
Share: Save:

ভাঙনের মধ্যে দাঁড়িয়েও দলে অন্দরে রাজ্য সম্পাদকের বার্তা ছিল, দুষ্ট গরুর চেয়ে শূন্য গোয়াল ভাল। সেই নীতি মেনেই বর্ধমান জেলার প্রভাবশালী নেতা আইনুল হককে সরাসরি দল থেকে বহিষ্কার করল সিপিএম। অভিযোগ, দলের মধ্যে থেকেই তিনি তৃণমূলের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছিলেন এবং নিচু তলার কিছু কর্মীকে শাসক শিবিরে নাম লেখাতে ‘উদ্বুদ্ধ’ও করেছিলেন।

কয়েক মাস আগেই বর্ধমান দক্ষিণ কেন্দ্রে নিরুপম সেনের পরিবর্ত হিসাবে আইনুলকে প্রার্থী করেছিল সিপিএম। তার আগে বর্ধমান পুরসভার চেয়ারম্যানও ছিলেন জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর এই সদস্য। বিধানসভা ভোটে হেরে যাওয়ার পর থেকেই দলের বিরুদ্ধে ‘অসহযোগিতা’র কিছু অভিযোগ এনেছিলেন আইনুল। কিছু দিন ধরে দলের কোনও কর্মসূচিতে তাঁকে দেখা যায়নি। জেলা সম্পাদকমণ্ডলী বা জেলা কমিটির বৈঠকেও আসেননি। সম্প্রতি দলের রাজ্য প্লেনামে প্রতিনিধি হয়েও সেখানে যোগ দেননি। ছিলেন দিল্লিতে। দলের তরফে প্রথমে তাঁকে চিঠি দেওয়া হলেও জবাব মেলেনি। প্লেনামের সময়ে রীতি মেনে ছুটির আবেদন করে আইনুল দলকে কোনও চিঠি দেননি। দলের নেতারা ফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়েছিলেন।

শেষ পর্যন্ত শনিবার জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর বৈঠক ডেকে আইনুলকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। জেলার এক প্রবীণ নেতা সে দিনই সমস্ত নথি নিয়ে কলকাতায় গিয়ে রাজ্য নেতৃত্বের অনুমোদন নিয়ে আসেন। সিপিএমের বর্ধমান জেলা সম্পাদক অচিন্ত্য মল্লিক রবিবার বলেন, “গুরুতর দল-বিরোধী কাজে যুক্ত থাকা এবং দলীয় মর্যাদা ক্ষুণ্ণ করার অপরাধে জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য আইনুল হককে দলীয় গঠনতন্ত্র মেনে সরাসরি বহিষ্কার করা হয়েছে।” সিপিএম সূত্রের দাবি, দলীয় স্তরে খোঁজখবর নিয়ে আইনুলের সঙ্গে তৃণমূলের যোগসাজশের তথ্য পাওয়া গিয়েছে। দলের রাজ্য কমিটির এক সদস্যের কথায়, “আইনুল দিল্লি থাকাকালীন তৃণমূলের রাজ্যসভার সাংসদের সিএ-র সঙ্গে দেখা করেন। প্রমাণ-সহ সেই তথ্য দলের কাছে আসে। খোঁজখবর নিয়ে জানা যায়, তৃণমূল পরিচালিত পুরসভার অন্দরেও আইনুলের লম্বা হাত রয়েছে। বিধানসভা ভোটের পরে দলের অনেক গোপন তথ্য তিনি ফাঁস করেছেন বলেও প্রমাণ আছে।”

রাজ্য সম্পাদক সূর্যবাবু প্লেনামের আগেই বার্তা দিয়েছিলেন, দলে থেকেও তাঁরা অন্য দলে যোগাযোগ রাখছেন, তাঁরা চলে গেলেই ভাল। আইনুলের ক্ষেত্রে সেই নীতিই অনুসরণ করা হয়েছে বলে সিপিএম সূত্রের বক্তব্য। দিল্লি থেকে আইনুল অবশ্য পাল্টা দাবি করেছেন, “আমি এ ব্যাপারে কিছু জানি না। শারীরিক ভাবে না থাকতে পারলেও দলের সঙ্গে ছিলাম, আছি, থাকব। কমিউনিস্ট মতাদর্শের বাইরে যাওয়ার কোনও প্রশ্নই নেই।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Ainul Haque Excluded CPM
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE